Jhargram News: অতীতের সাক্ষী বেলপাহাড়ির নীলকুঠি, দেখভালের অভাবে এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ, সংস্কার হলে পর্যটক বাড়বে

Last Updated:

১৮৬০ সালে বেলপাহাড়ি সংলগ্ন নীলকুঠিতে রীতিমত নীল তৈরির ভাটিখানা চলত। এখানে রয়েছে বিশাল এক লোহার কড়াই। বেলপাহাড়ির নীলকুঠি এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

+
বেলপাহাড়ির

বেলপাহাড়ির নীলকুঠি

ঝাড়গ্রাম: সময়টা ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি। বাংলা জুড়ে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে চাষিরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তৎকালীন অ-বিভক্ত বাংলায় মেদিনীপুরের উত্তরাঞ্চল, বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পাবনা ও খুলনায় একের পর এক নীলকুঠি ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছারি আগুনে পুড়েছিল। কিন্তু সেই বিদ্রোহের কোনও আঁচ লাগেনি পশ্চিম সীমান্তে বাংলার পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা বেলপাহাড়ির শান্ত জনপদের গায়ে। ১৮৬০ সালে বেলপাহাড়ি সংলগ্ন নীলকুঠিতে রীতিমত নীল তৈরির ভাটিখানা চলত। এখানে রয়েছে বিশাল এক লোহার কড়াই।
অতীতের সাক্ষী সেই নীলকুঠি এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রাকৃতিক ভাবে নীল তৈরির চিমনি-সহ প্রস্তুতিকরণ ঘরটিও ভগ্নপ্রায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দেড়শো বছরের পুরানো এই নীলকুঠি সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনিক স্তরে আজ পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
advertisement
advertisement
গবেষক বিধান দেবনাথ বলেন, ভূমি দফতরের পুরানো নথি থেকে জানা যায়, বেলপাহাড়ি, ভেলাইডিহা, সন্দাপাড়া, ভুলাভেদা, শিমুলপাল ও বাঁশপাহাড়ির প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এক সময় নীল চাষ হত। তবে বেলপাহাড়ির নীল চাষিরা বিদ্রোহের পথে যাননি। কোনও প্রতিবাদের কথাও সে ভাবে শোনা যায় না। ইংরেজ জমিদারি কোম্পানির তরফে লেঠেল নিয়োগ করে গ্রামে গ্রামে চাষিদের দাদন দিয়ে নীলের চাষ করানো হত।
advertisement
ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি বেলপাহাড়ি সদর এলাকাটিতে বাইরের লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়। জমিদারি কোম্পানির লেঠেল ও পাহারার কাজ করার জন্য বিহার থেকে লোক নিয়ে আসা হয়। বর্ধমান থেকে আসেন কোম্পানির কর্মচারীরা। সাহেবদের রসনা তৃপ্তির জন্য মেদিনীপুর থেকে আসেন বাবুর্চিরা। পরবর্তীকালে তাঁদের উত্তরসূরিরা বেলপাহাড়িতেই স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন।
advertisement
ইতিহাস ঘাঁটলে পাওয়া যায় ১৮৯৫ সালে নীল চাষ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় স্বাধীনতা আন্দোলন। জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের মধ্যে কংগ্রেসের উদ্যোগে স্বাধীনতা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ১৯২৩ সালে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বেলপাহাড়িতে জমিদারি কোম্পানির একটি কাছারিতে ভাঙচুর চালান আদিবাসীরা। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরেও কয়েক বছর বেলপাহাড়িতে ইংরেজ জমিদাররা থেকে গিয়েছিলেন। ১৯৫৩ সালে জমিদারি প্রথা বিলোপ হলে বেলপাহাড়িতে ইংরেজ জমিদারি শাসনের অবসান হয়।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একেবারেই বদলে গিয়েছে বেলপাহাড়ি। এখন বেলপাহাড়ির খাসতালুকে আটটি পাড়ায় হাজার দশেক মানুষের বাস। জনবহুল বাজারের বুক চিরে চলে গিয়েছে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়াগামী রাজ্য সড়ক। আদিবাসী-মূলবাসীদের রক্তঘামে নীল তৈরির আঁতুড় ঘরটিই বিলুপ্তি ও বিস্মৃতির অপেক্ষায় দিন গুনছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই নীলকুঠির ইতিহাস সম্পর্কে অবহিত নন। সংস্কার হলে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে, এই ঐতিহাসিক স্থানটি।
advertisement
তন্ময় নন্দী
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Jhargram News: অতীতের সাক্ষী বেলপাহাড়ির নীলকুঠি, দেখভালের অভাবে এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ, সংস্কার হলে পর্যটক বাড়বে
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement