অভিভাবক হারাল লোকনাট্য ‘কালিকাপাতাড়ি’! নরোত্তম রায়ের অকাল প্রয়াণে লোকশিল্প জগতে শোকের ছায়া

Last Updated:

প্রয়াত নরোত্তম রায়। তিনিই ছিলেন লোকনাট্য ‘কালিকাপাতাড়ি’র পুরোধা পুরুষ।

+
কালিকাপাতাড়ির

কালিকাপাতাড়ির পুরোধা পুরুষ নরোত্তম রায় প্রয়াত

হাওড়া, রাকেশ মাইতিঃ লোকশিল্প ‘কালিকাপাতাড়ি’র পুরোধা পুরুষ নরোত্তম রায় (৬৩) প্রয়াত। তাঁর প্রয়াণে লোকনাট্য “কালিকাপাতাড়ি” অভিভাবকহীন হয়ে পড়ল। নরোত্তম রায় লোকনৃত্যের বিভিন্ন পালা যেমন শুম্ভ-নিশুম্ভ বধ, মহিষাসুর বধ, চন্ড মুন্ড বধ ইত্যাদি পরিমার্জন করে কালিকাপাতাড়ির উপযুক্ত করেছিলেন। বর্ষীয়ান এই শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ জেলার কলাকুশলীরা।
হাওড়ার লোকনৃত্য কালিকাপাতাড়িকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যারা কাজ করছেন তাঁদের মধ্যে নরোত্তম রায় ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য শিল্পী। ঐতিহ্যগতভাবে কালিকাপাতাড়ি নৃত্য শুধুমাত্র গাজন ও নীলরাত্রি উপলক্ষ্যে বছরের কয়েকটি নির্দিষ্ট দিনে অনুষ্ঠিত হত। কিন্তু পরবর্তী সময় ধীরে ধীরে এটি নাট্যরূপ লাভ করে এবং একক সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা হিসেবে অভিনয় করার সুযোগ তৈরি হয়। এই পরিবর্তনে সেই সময়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন নরোত্তম রায়। শুম্ভ-নিশুম্ভ, মহিষাসুর, চণ্ড-মুণ্ড, এবং চিক্কুর বধ ইত্যাদি কাহিনী তিনিই পরিমার্জন করে কালিকাপাতাড়ি আঙ্গিকে অভিনয়ের উপযুক্ত করে তুলেছিলেন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ খাটে বসে খেলছিল একরত্তি! হঠাৎ মা দেখলেন সে নেই! পাঁচতলার স্লাইডার জানলাটা ফাঁক…ভয়ঙ্কর!
কালিকাপাতাড়ির সঙ্গে নরোত্তম রায়ের সংযোগ গত শতকের সত্তরের দশক থেকে। স্কুল জীবনে  বাড়ি থেকে পালিয়ে দিল্লি চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ভারতীয় কলাকেন্দ্রে রাম ও বলরামের চরিত্রে অভিনয় করতেন। সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করতেন রামযাত্রা নাট্যাভিনয়। লোকনাট্যের প্রতি প্রেম এবং তাগিদ নিয়ে পরবর্তী সময় নিজের গ্রাম শ্যামপুরের রতনপুরে ফেরেন। এরপর কালিকাপাতাড়ির সঙ্গে যুক্ত হন। তখন থেকেই এই শিল্প তাঁর ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে। ১৯৭৭ সালে কালিকাপাতাড়ি সরকারি স্বীকৃতি লাভ করে। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে শিল্পীরাও যুক্ত হন। ধীরে ধীরে সরকারি সাহায্য আসতেও শুরু করে। নরোত্তম রায়ের এই প্রয়াণ কালিকাপাতাড়ির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে জানালেন শ্যামপুরের রতনপুরে কালিকাপাতাড়ি টিমের সম্পাদক শিবশঙ্কর রায়।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ নিবেদিতা সেতুর নিচে ডাস্টবিনে সদ্যোজাত! শিশুর শরীরে কিলবিল করছে পোকা, বাঁচাল কে জানেন?
বর্তমানে শ্যামপুর থানা এলাকায় ৪টি কালিকাপাতাড়ি দল আছে। নরোত্তমবাবু বেঁচে থাকলে আরও ভালো কাজ আমরা দেখতে পেতাম বলে জানালেন শিবশঙ্কর রায়। তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম এই শিল্পের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এই সময়ে নরোত্তমবাবুর মৃত্যুতে আরও ক্ষতি হল এই শিল্পের।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
দেশ ও দশের কাছে এই শিল্প তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর বাবা নরোত্তম রায় এক অগ্রগণ্য ভূমিকা নিয়েছেন বলে জানালেন ছেলে। লোক গবেষকদের মতে নরোত্তমবাবু বেঁচে থাকলে আরও ভালো কাজ দেখতে পাওয়া যেত। সেই কারণে নরোত্তম রায়ের মৃত্যু কালিকাপাতড়ির জন্য একটা বিশাল ক্ষতি। বর্তমানে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে সামিল শ্যামপুরের বলরাম দাস, শিবশঙ্কর রায়, রনজিৎ পুরকাইত, চণ্ডী ধাউর এবং কালিকাপাতাড়ি রিসার্চ সেন্টার।
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
অভিভাবক হারাল লোকনাট্য ‘কালিকাপাতাড়ি’! নরোত্তম রায়ের অকাল প্রয়াণে লোকশিল্প জগতে শোকের ছায়া
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement