HS Pass Local Teacher : গ্রামের উচ্চমাধ্যমিক পাশ বৌমার হাত ধরে শিক্ষিত হচ্ছে খুদে পড়ুুয়ারা, ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো, জানেন কে তিনি!
- Published by:Pooja Basu
- hyperlocal
- Reported by:Sarmistha Banerjee Bairagi
Last Updated:
আদিবাসী গৃহবধুর উদ্যোগে স্কুলমুখী হচ্ছে পড়ুয়ার , এককালের মাও অধ্যুষিত এলাকায় জ্বলছে শিক্ষার আলো! শিক্ষার আলো জ্বালতে জিলিং সেরেঙ-এ চলছে মালতির বিনা পয়সার স্কুল। সাঁওতালি, বাংলা মাধ্যমের স্কুলের একমাত্র শিক্ষক আদিবাসী বধূ মালতি মুর্মু। মালতির দেখানো পথেই আশার আলো দেখছে গ্রামবাসীরা।
পুরুলিয়া : অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে প্রত্যন্ত একটি গ্রাম জিলিং সেরেং। শিক্ষার আলো এই গ্রামে সেভাবে পৌঁছায়নি। তাই তো এই গ্রামে শিক্ষার নতুন দিশা দেখাচ্ছেন গ্রামের এক আদিবাসী গৃহবধূ। অতি সামান্য পরিকাঠামো নিয়ে মনের জোরে এলাকার শিশুদের মধ্যে তিনি দিচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ। মালতিবালা অবৈতনিক বিদ্যালয়ের হাত ধরেই পিছিয়ে পড়া গ্রামের শিশুরা স্কুলমুখী হচ্ছে। কমছে স্কুলছুটের সংখ্যা। বর্তমানে এলাকার মানুষের কাছে শিক্ষার অন্যতম ভরসা হচ্ছেন মালতী মুর্মু। নিশুল্ক সাঁওতালি মাধ্যমে আদিবাসী পড়ুয়াদের শিক্ষাদান করে চলেছেন উচ্চ মাধ্যমিক পাস এই গৃহবধূ। এখন তাঁর ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৪৫। নিজের রয়েছে দুই সন্তান। সাংসারিক চাপের মধ্যেও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এতটুকুও আপোষ করেন না তিনি। অলচিকি হরফে তিনি প্রাথমিকের পাঠ দেন সাঁওতালি ভাষাভাষী পড়ুয়াদের।
রাজ্যে পালাবদলের পরেও ছিল না রাস্তা। এককালে এই বিচ্ছিন্ন গ্রাম ছিল মাওবাদীদের ডেরা। সন্ধ্যে নামতেই মশাল জ্বালিয়ে সমাজ বদলানোর পাঠ দিত মাওবাদীরা। সেই সব হাড় হিম করা দিন আজ অতীত। কিন্তু আজও এই গ্রামের মানুষদের লড়াই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হয়। বুনো হাতির সঙ্গে লড়াই করেই দিন কাটে তাদের। জঙ্গল-পাহাড়-টিলার ঘেরা এই গ্রাম ঝালদা শহর থেকে ১৮ কিমি দুরে। বাসপথে কোনও যোগাযোগ নেই। হাঁটা পথই যোগাযোগের মাধ্যম। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন স্থায়ী শিক্ষক ও দু’জন পার্শ্ব শিক্ষক থাকলেও তাঁরা নিয়মিত আসেন না বলেন অভিযোগ। সকাল ১১:৩০ টা থেকে শুরু হওয়া স্কুল দেড়টাতেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এখন অবৈতনিক মালতির বিদ্যালয়ের হাত ধরে ধীরে , ধীরে বদলে যাচ্ছে শিক্ষার হাল।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
advertisement
এ বিষয়ে মালতি মুর্মু বলেন , ২০১৯ সালে তিনি বউ হয়ে এই গ্রামে আসেন। কয়েকদিনের মধ্যেই বুঝতে পারেন এখানকার ছেলে- মেয়েদের লেখাপড়ায় সেভাবে আগ্রহ নেই। স্কুল মুখি হলেও পরে স্কুল ছুট হয়ে যায়। তাই ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিজের ঘরেই পাঠদান শুরু করেন তিনি। সেই ঘর থেকে ঝুপড়ি। তারপর গ্রামবাসীদের সহায়তায় মাটির দেওয়ালে টিনের চালা দিয়ে মালতির স্কুল গড়ে ওঠে। এখন সেখানেই পাঠদান করেন তিনি। মালতির এই কর্মকাণ্ডে তাঁর পাশে থাকেন স্বামী বাঙ্কা মুর্মু। পড়ুয়াদের দেখভালের পাশাপাশি স্কুল চালিয়ে নিয়ে যেতে স্ত্রী মালতিকে সবসময় সাহায্য করেন তিনি। স্ত্রীর এই কর্মকাণ্ডে খুবই খুশি তিনি।মালতি মুর্মু-র এই উদ্যোগে খুশি গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের এলাকায় শিক্ষার মান অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করছেন তারা।
advertisement
পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লকের অযোধ্যা পাহাড় চূড়োর একাধিক টোলা মিলিয়ে প্রায় ৯০-টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। যার মধ্যে পাহাড়িয়া পরিবার ৩৫ টি। যারা আজও অনেকখানি পিছিয়ে। তাই তাদের মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালতে জিলিং সেরেঙ-এ চলছে মালতির বিনা পয়সার স্কুল। সাঁওতালি, বাংলা মাধ্যমের স্কুলের একমাত্র শিক্ষক আদিবাসী বধূ মালতি মুর্মু। মালতির দেখানো পথেই আশার আলো দেখছে গ্রামবাসীরা।
advertisement
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
June 17, 2025 5:57 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
HS Pass Local Teacher : গ্রামের উচ্চমাধ্যমিক পাশ বৌমার হাত ধরে শিক্ষিত হচ্ছে খুদে পড়ুুয়ারা, ছড়াচ্ছে শিক্ষার আলো, জানেন কে তিনি!