East Medinipur News: হাতের জাদুতে ফিরে আসে হারানো সুর! দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন শিল্পীরা, বহু মানুষের ভরসা এই 'বাদ্যযন্ত্রের ডাক্তার’
- Published by:Sneha Paul
- hyperlocal
- Reported by:Madan Maity
Last Updated:
East Medinipur News: দীপকবাবুর কথায়, “বাদ্যযন্ত্রও একটা জীবন্ত জিনিস। তাঁর শরীরের কোথায় ব্যথা হচ্ছে, হাতে নিলেই বুঝে যাই।” এমন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠস্বরে বোঝা যায়, বাদ্যযন্ত্রের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ কতখানি গভীর।
পটাশপুর, মদন মাইতিঃ কারও বাড়িতে বাদ্যযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিলেই সবার প্রথমে ডাক পরে দীপকবাবুর। বাদ্যযন্ত্রের নাড়িভুড়ি যেন তাঁর হাতের মুঠোয়। ঢোলের চামড়া ছিঁড়ে যাওয়া থেকে তবলার সুর না মেলা, সব সমস্যায় দীপকবাবুর কাছে ফোন আসে। নিজের সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে তিনি ছুটে যান। দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজের দক্ষতা গড়ে তুলেছেন তিনি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ ব্লকের সিংদা বাজারে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি দোকানে এই কাজ শুরু করেছিলেন দীপক ঘোড়াই। তখন স্বপ্ন দেখতেন, একদিন বাদ্যযন্ত্রের জগতে নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করবেন। বাবাকে গুরু মেনে বাবার হাত ধরেই প্রথম শিক্ষা। প্রথমে নেশা ছিল, ধীরে ধীরে সেই নেশাই তাঁকে পেশার পথে নিয়ে এসেছে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ বন্যার পর ঘুরে গিয়েছে মুখ! সুভাষিনী চা বাগানের হেক্টরের পর হেক্টর জমি গিলে খাচ্ছে তোর্ষা, ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখুন
এখন পটাশপুরের সিংদা বাজারের সেই সাধারণ দোকানই তাঁর কর্মধাম। দিনভর সেখানে ঢাক-ঢোল, খোল, মৃদঙ্গ, তবলা থেকে শুরু করে নানা বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে চলেছেন। দূরদূরান্ত থেকে শিল্পীরা তাঁর কাছে বাদ্যযন্ত্র বানাতে আসেন। কেউ আবার আসেন বাদ্যযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে। কারণ একবার তাঁর হাতে পড়লে বাদ্যযন্ত্র যেন আবার নতুন প্রাণ ফিরে পায়।
advertisement
advertisement
দীপকবাবুর কথায়, “বাদ্যযন্ত্রও একটা জীবন্ত জিনিস। তাঁর শরীরের কোথায় ব্যথা হচ্ছে, হাতে নিলেই বুঝে যাই।” এমন আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠস্বরে বোঝা যায়, বাদ্যযন্ত্রের প্রতি তাঁর মমত্ববোধ কতখানি গভীর। বাদ্যযন্ত্রের সমস্যা শনাক্ত করার তাঁর এই অসাধারণ ক্ষমতাই আজ তাঁকে এলাকার ‘বাদ্যযন্ত্রের ডাক্তার’ করে তুলেছে।
তবে একটা সময় ছিল যখন সংসার চালানোই ছিল দুরূহ। বাদ্যযন্ত্র তৈরির এই কাজ দিয়ে ঠিকঠাক সংসার চলছিল না। অনেকেই এই কাজ ছেড়ে অন্য কিছু করতে বলেছিলেন। কিন্তু নেশাকে জড়িয়ে বেঁচে থাকাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। তাই কখনও হার মেনে নেননি। নিজের হাতের কাজের উপর ছিল বিশ্বাস। ধীরে ধীরে তাঁর প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে, বেড়েছে কাজের চাপ। দীপকবাবুর কাছে এখন ছয় জন শিল্পী অনবরত কাজ করে চলেছেন। তাঁদের রুজি-রোজগারের পথও খুলে দিয়েছেন তিনি।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
আজ এলাকায় কোনও বড় বাদ্যযন্ত্রের সমস্যা হলে সবার আগে তাঁর ডাক পড়ে। এমনকি বহু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা যাত্রাপালার আগে বাদ্যযন্ত্র ঠিক আছে কিনা, সেটা দেখার দায়িত্বও তাঁর উপরই, যেন বাদ্যযন্ত্রের সুরক্ষার ভার নিজের কাঁধে নিয়েছেন তিনি। দীপকবাবুর মতে, এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে দক্ষ হাতে প্রশিক্ষণ ও উপযুক্ত মূল্যায়ন প্রয়োজন। নয়তো ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের ঐতিহ্য। তাই তিনি চান, দেশীয় শিল্পও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বেঁচে থাকুক। তাই পেশাকে আঁকড়ে ধরে দৃঢ় মনোবলে এগিয়ে চলেছেন। সুরের বন্ধনেই যেন জীবনকে সুরেলা করে তুলেছেন পটাশপুরের এই বাদ্যযন্ত্র কারিগর দীপক ঘোড়াই।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Purba Medinipur,West Bengal
First Published :
November 22, 2025 3:25 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
East Medinipur News: হাতের জাদুতে ফিরে আসে হারানো সুর! দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন শিল্পীরা, বহু মানুষের ভরসা এই 'বাদ্যযন্ত্রের ডাক্তার’
