East Medinipur News: সামান্য বেতনে চলে না সংসার, শিক্ষকতার পাশাপাশি গাইছেন গান, বিক্রি করছেন কাপড়! পূর্ব মেদিনীপুরের শিক্ষকের লড়াইকে স্যালুট জানাচ্ছেন সবাই
- Published by:Madhab Das
- hyperlocal
- Reported by:Madan Maity
Last Updated:
তিনি বিদ্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষক। সমাজ গড়ার কারিগর। তাঁর গানের গলা অসাধারণ। মঞ্চে তাঁর গানে মুহুর্মুহু করতালি পড়ে। অথচ এই মানুষটিকে সন্ধ্যা হলেই দেখা যায় এক কোণে বসে কাপড় বিক্রি করতে।
পটাশপুর, মদন মাইতি: তিনি বিদ্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষক। সমাজ গড়ার কারিগর। তাঁর গানের গলা অসাধারণ। মঞ্চে তাঁর গানে মুহুর্মুহু করতালি পড়ে। অথচ এই মানুষটিকে সন্ধ্যা হলেই দেখা যায় এক কোণে বসে কাপড় বিক্রি করতে। কেউ পাশে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলে হাসিমুখেই বলেন, “সংসার তো চালাতে হবে দাদা…”। তিনি এলাকায় বহুরূপী শিক্ষক নামে পরিচিত। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ ব্লকের পূর্ব খাড়গ্রামের বাসিন্দা অলকেশ মাইতি। তিনি বারবাটিয়া হাই স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক। ক্লাসরুমে ছাত্রছাত্রীদের যেমন মনজয় করেন, তেমনই মঞ্চে গান গেয়ে দর্শকদের মন মাতান। আবার তিনি কবিও। নিজের জীবনের নানা বেদনা নিয়ে লিখেছেন ‘দঃসুময়: কাব্যগ্রন্থ। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ‘দর্পন’, ‘মেঘবালিকার সঙ্গে’ কাব্যগ্রন্থ-সহ বহু ছোট কবিতা ও গল্প। প্রকাশ করছেন নিজের পত্রিকা। কিন্তু তা আজ আর্থিক অভাবে বন্ধ। সংসার চালাতে তিনি শিক্ষক, কখনও গায়ক, আবার কখনও কাপড় বিক্রেতা— এক শরীরে যেন বহুরূপের পরিচয়।
শিক্ষক অলকেশবাবুর প্রতিদিনের জীবনটাই যেন সংগ্রামমুখর। ক্লাসে তিনি পড়ান উৎসাহ আর আন্তরিকতা দিয়ে। মাঝেমধ্যেই গানের সুরে পড়ুয়াদের মনোযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর সুরেলা কণ্ঠে ছাত্রছাত্রীরা মুগ্ধ হয়ে হাততালি দেয়। পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যেন বন্ধুর মতো। তাই পড়ুয়ারাও তাঁকে ভালবাসে, সম্মান করে। শিক্ষকতার প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এতটাই গভীর যে, সামান্য বেতনেও তিনি এই পেশা ছাড়তে চান না। তবে পরিবারে বাবার দায়িত্ব পূরণ করতে তাঁকে বাকি সময়ে অন্য আয়ের পথ খুঁজতেই হয়।
advertisement
advertisement
মঞ্চই তাঁর আরেক পরিচয়। স্থানীয় একটি বাংলা ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত অলকেশবাবু সুযোগ পেলেই গিটার হাতে মঞ্চে উঠে পড়েন। দর্শকদের সামনে দাঁড়িয়ে গান গাইলে চারদিক যেন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। করতালির শব্দে ভরে যায় পরিবেশ। তাঁর গলায় এমন এক জাদু আছে, যা মুহূর্তেই দর্শকদের মন জয় করে। ব্যস্ত দিনের মাঝে রাতের অনুষ্ঠান, আবার পরদিন সকালেই স্কুলে ক্লাস নেওয়া— এভাবেই চলছে তাঁর একাধারে শিক্ষকতা ও গায়ক জীবনের দ্বৈত ভূমিকা।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কিন্তু শুধু শিক্ষকতা ও গানেই সংসার চলে না। তাই সময় পেলেই তিনি দোকানে বসে জামা-কাপড় বিক্রি করেন। পরিবারের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে— রয়েছে ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী, বৃদ্ধা মা। সংসার চালাতে, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য অতিরিক্ত আয়ের জন্য প্রতিদিন লড়াই করতে হয়। তবুও কোনও অভিযোগ নেই তাঁর গলায়। বরং হাসিমুখেই বলেন, “বিদ্যালয়ের পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে যে বেতন পাই, তাতে সংসার চালান সম্ভব নয়। তাই বাকি সময়ে যা পারি করি।” তাঁর এই বহুরূপী রূপ, এই লড়াই, এই নিষ্ঠা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হন। সমাজের চোখে তিনি শুধু শিক্ষক নন— এক নিরলস সংগ্রামী যোদ্ধা, যাঁকে দেখে সত্যিই স্যালুট জানাতে ইচ্ছে করবে।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Purba Medinipur,West Bengal
First Published :
November 26, 2025 3:17 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
East Medinipur News: সামান্য বেতনে চলে না সংসার, শিক্ষকতার পাশাপাশি গাইছেন গান, বিক্রি করছেন কাপড়! পূর্ব মেদিনীপুরের শিক্ষকের লড়াইকে স্যালুট জানাচ্ছেন সবাই
