Humanity: দরজায় দরজায় ভিক্ষা করে অনাথ শিশুদের চিকি‍ৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, নার্স তৈরি করে চলেছেন স্বপ্নপূরণের কারিগর

Last Updated:

পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের পাঁউশি গ্রামের এই বয়স্ক মানুষটার গল্প শুনলে চোখে জল আসবে! নাম বলরাম করণ। নেশা অনাথ শিশুদের জীবন গড়ে দেওয়া। তাদের জীবনকে নতুন স্বপ্ন সাজিয়ে দেওয়া। তাই নিজে ভিক্ষা করে হাজার হাজার অনাথ ছেলে-মেয়েদের জীবন গড়ে দিয়েছেন তিনি! 

+
বলরাম

বলরাম করণ 

ভগবানপুর, সৈকত শী: নিজে ভিক্ষা করেন, অথচ তাঁর ছেলেমেয়েরা কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ নার্স, কেউ বা হাইকোর্টের আইনজীবী! পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ ব্লকের পাঁউশি গ্রামের এই বয়স্ক মানুষটার গল্প শুনলে চোখে জল আসবে! নাম বলরাম করণ। নেশা অনাথ শিশুদের জীবন গড়ে দেওয়া। তাঁদের জীবনকে নতুন স্বপ্ন সাজিয়ে দেওয়া। তাই নিজে ভিক্ষা করে হাজার হাজার অনাথ ছেলে-মেয়েদের জীবন গড়ে দিয়েছেন তিনি! বলরামবাবুর এই পথ চলা শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে।
কাঁথির রাস্তার পাশে আঁস্তাকুড়ে এক শিশুকে এঁটো খাবার খুঁজে খাচ্ছে দেখে। এরকম দৃশ্য দেখে বহু মানুষ পাশ কাটিয়ে চলে যায়। কিন্তু বলরাম করণ পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানেন শিশুটি অনাথ। আঁস্তাকুড়ের ওই শিশুকে নিয়ে আসেন নিজের বাড়ি। রাস্তাঘাটে বা স্টেশনে অনাথ শিশুদের দেখলেই নিজের বাড়িতে আনতে শুরু করেন বলরাম করণ। এক এক করে বাড়ি ভরে ওঠে অনাথ শিশুতে। শুরু হয় এক সংগ্রাম। যেখানে নিজের সংসার খুব স্বচ্ছল না, সেখানে এতগুলো অনাথ শিশুর ভরণ পোষণ দৈন্যের মুখে ঠেলে দেয়। এমনকি নিজের যেটুকু জমি জায়গা ছিল তা বিক্রি করে দেন। তাতেও এতগুলো শিশুর ভরণপোষণ সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অগত্যা নিজের ছোট্ট ঔষধ দোকান বিক্রি করে দেওয়ার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
advertisement
আরও পড়ুন : শ্যামাসঙ্গীত থেকে আধুনিক! তারাপীঠের সেবায়েতের কণ্ঠে গানের জাদুতে মুগ্ধতার রেশ
নিজের জমি জায়গা এবং ঔষধ দোকান বিক্রি করে ছোট একটি আশ্রম গড়ে তোলেন অনাথ শিশুদের জন্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে অনাথ শিশুর সংখ্যা। আর তাতেই তাদের খাদ্য সংস্থান যোগাড় করা কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। বলরাম করণ বলেন, “নিজের হাতে গড়ে তোলা অনাথআশ্রমের শিশুদের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেয় নিজের গ্রাম পাঁউশিতে বাড়ি বাড়ি চাল সংগ্রহের জন্য রেখে আসেন ভান্ডার। আর আবেদন করেন প্রত্যেক বাড়ির মায়েরা যেন তার অনাথ শিশুদের জন্য এই ভান্ডারে প্রতিদিন এক মুঠো করে চাল দেন। গ্রামের মানুষেরা ফিরিয়ে দেয়নি বলরাম কারণকে। দীর্ঘ এক দশক ধরে গ্রামের মানুষের সাহায্যে অনাথ আশ্রমের শিশুদের অন্ন সংস্থানের সমস্যা দূর হয়। অনাথ শিশুদের পড়াশোনা বা বিভিন্ন হাতের কাজে পারদর্শী করে তোলেন তিনি। বর্তমানে বিভিন্ন মানুষ এবং কোম্পানির সহায়তায় পাঁউশিতে বলরাম করণ গড়ে তুলেছেন অবৈতনিক স্কুল থেকে অনাথ শিশুদের রাখার ঘরবাড়ি।”
advertisement
advertisement
বলরাম করণের আশ্রম থেকে অনাথ শিশুরা পড়াশোনা করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন অনেকেই। কেউ পুলিশ অফিসার বা কেউ আইনজীবী আবার কেউ এম টেক ইঞ্জিনিয়ার। অনেক মেয়েই নার্স হিসেবে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও তারা বলরাম করণকে ভুলে যায়নি। সময় পেলেই চলে আসে তাদের এই বাড়িতে। বর্তমানে বলরাম-করণের আশ্রমে প্রতিদিন ১ হাজারেরও বেশি অনাথ ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি থাকা খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এই একটাই মানুষ হাজার হাজার পরিচয়হীন ছেলেমেয়েদের সমাজে পরিচয় গড়ে তুলে দিচ্ছেন প্রতিদিনই। অনাথ শিশুদের স্বপ্ন সাজিয়ে তুলতে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Humanity: দরজায় দরজায় ভিক্ষা করে অনাথ শিশুদের চিকি‍ৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, নার্স তৈরি করে চলেছেন স্বপ্নপূরণের কারিগর
Next Article
advertisement
১ কোটি টাকার মহারানি গাউন ! ২৫ জন কারিগরের শ্রমে চোখ ধাঁধাল সোনা, রুপো এবং মূল্যবান পাথরখচিত জয়পুরের এক মাস্টারপিস
১ কোটি টাকার মহারানি গাউন ! ২৫ জন কারিগরের শ্রমে চোখ ধাঁধাল জয়পুরের এক মাস্টারপিস
  • ১ কোটি টাকার মহারানি গাউন !

  • ২৫ জন কারিগরের শ্রমে চোখ ধাঁধাল সোনা, রুপো এবং মূল্যবান পাথরখচিত

  • জয়পুরের এক মাস্টারপিস

VIEW MORE
advertisement
advertisement