East Bardhaman News: পুতুল গ্রামে এখন ঘরে ঘরে 'পৌষমাস', দম ফেলার সময় নেই! পকেট ভর্তি করতে মেলায় যাওয়ার তোড়জোড়
- Published by:Nayan Ghosh
- hyperlocal
- Reported by:Bonoarilal Chowdhury
Last Updated:
East Bardhaman News: পূর্বস্থলীর নতুনগ্রাম আজ পরিচিত কাঠপুতুলের গ্রাম নামে। শীতকাল এলে এই গ্রামে ব্যস্ততা যেন বহু গুণ বেড়ে যায়।
পূর্বস্থলী, পূর্ব বর্ধমান, বনোয়ারীলাল চৌধুরী: পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলীর নতুনগ্রাম আজ পরিচিত “কাঠপুতুলের গ্রাম” নামে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কাঠের পুতুল তৈরি করে নিজেদের ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন এখানকার মানুষ। একসময় যা ছিল শুধুমাত্র নেশা ও পেশার মিশ্রণ, আজ সেই কাষ্ঠশিল্প নতুনগ্রামকে রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। গ্রামের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতেই চোখে পড়ে একের পর এক শিল্পীর ব্যস্ততা। কারো উঠোনে রাজা–রানির কাঠের মূর্তি আঁকা হচ্ছে, কোথাও আবার তৈরি হচ্ছে পেঁচা, গৌর-নিতাই, কিংবা বিভিন্ন নিত্যনতুন আসবাব।
প্রায় প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে কাঠের এই শিল্প। সারাবছরই চলে কাঠ কাটা, ঘষামাজা, আকার দেওয়া, রঙ করা। সব মিলিয়ে যেন সবসময় একটা কর্মশালা পুরো গ্রামজুড়ে। তবে বছরের অন্য সময়ের তুলনায় শীতকাল এলে এই ব্যস্ততা যেন বহু গুণ বেড়ে যায়। শীত পড়তেই গ্রামের পুরুষদের বেশিরভাগই আর বাড়িতে থাকেন না। নিজেদের তৈরি কাঠের সামগ্রী নিয়ে তাঁরা বেরিয়ে পড়েন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কারণ শীতকাল মানেই রাজ্য জুড়ে বড় বড় গ্রাম্য মেলা, পৌষমেলা, হস্তশিল্প মেলা থেকে শুরু করে সরকারি অনুষ্ঠান, সব জায়গাতেই নতুনগ্রামের কাষ্ঠশিল্পীদের ডাক পড়ে।
advertisement
আরও পড়ুন : খাঁচায় দেওয়া হল ছাগলের টোপ, বাঘ ধরতে ৪৫ জনের টিম! জাল দিয়ে চার কিলোমিটার ঘিরল বন দফতর
গ্রামের শিল্পী গৌরাঙ্গ ভাস্কর বলেন, “শীতকালে বিভিন্ন জায়গায় মেলা হয়। আর এই মেলার সিজেন এলেই আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। আয় ভাল হয় এইসময়।” রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন মেলায় এখন স্থায়ী জায়গা পাচ্ছেন শিল্পীরা। সেখানে তাঁরা নিজেদের তৈরি শিল্পকর্ম সাজিয়ে বসেন। দীর্ঘ এক বছরের শ্রমশিল্পের প্রকৃত মূল্য মেলে এই মেলাগুলিতে। তাই শীতকাল তাঁদের কাছে শুধু ব্যস্ততার নয়, আয়েরও প্রধান সময়। অনেক শিল্পী ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মেলায় পৌঁছেও গেছেন, কেউ আবার বাড়িতেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, নতুন ডিজাইনের পুতুল, আসবাব, শো-পিস তৈরি করে চলেছেন পুরোদমে। গ্রামবাসী প্রফুল্ল ভাস্কর বলেন, “ছেলে মেয়ে সবাই এইসময় কাজে ব্যস্ত থাকে।
advertisement
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অনেকেই বিভিন্ন মেলায় বেরিয়ে গেছে। সরকার থেকেও আমাদের এখন মেলা দেয়। এইসময় আমাদের ভাল হয়, এই আয় থেকে মোটামুটি আমাদের চলে।” গ্রামে এখন সকাল থেকে রাত সব সময়ই কেমন একটা উৎসবের আবহ। কেউ রঙ মেশাচ্ছেন, কেউ কাঠ ঘষছেন, কেউ আবার বিক্রির জন্য জিনিসপত্র বেঁধে প্যাকেট করছেন। গ্রামবাসীদের মুখেও ধরা পড়ছে শীতের আনন্দ আর কাজের সন্তুষ্টি। যেন শীত পড়তেই পুরো গ্রাম জেগে ওঠে নতুন উদ্যমে। সবার চোখে মুখে একটু বেশি হাসি, একটু বেশি আশার আলো। নতুনগ্রামের এই কাঠের শিল্প শুধু তাঁদের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে মজবুত করছে না, একইসঙ্গে বহন করে চলছে বাংলার দীর্ঘদিনের লোকশিল্পের ঐতিহ্য। এই গ্রাম আজও প্রমাণ করে দেয় ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে শিল্পকে ভালবেসে কাজ করলে, এক টুকরো কাঠও হয়ে উঠতে পারে শিল্পীর হাতে জীবন্ত সৃষ্টি।
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Barddhaman (Bardhaman),Barddhaman,West Bengal
First Published :
December 03, 2025 3:21 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
East Bardhaman News: পুতুল গ্রামে এখন ঘরে ঘরে 'পৌষমাস', দম ফেলার সময় নেই! পকেট ভর্তি করতে মেলায় যাওয়ার তোড়জোড়
