৩৫০ বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়ির পুজোয় দেবীর নৈবেদ্যে থাকে গ্রীষ্মকালীন এই 'বিশেষ' ফল

Last Updated:

Durga Puja 2025: দুর্গাপূজার সঙ্গে বনেদি বাড়ির ইতিহাস যেন একে অপরের পরিপূরক। জয়নগরের মিত্র বাড়ির দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অলৌকিক সব কাহিনী। কথিত আছে, জয়নগরের মিত্র বাড়িতে দুর্গা পুজোর শুভ সূচনা করেন স্বয়ং দেবী দুর্গা।

+
মিত্র

মিত্র বাড়ির প্রতিমা

জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা: ঘাসের আগায় শিশির বিন্দু এবং শিউলি ফুলের গন্ধে আকাশে বাতাসে ভরে উঠেছে। আকাশে শরতের মেঘ এবং কাশফুলের দোলায় উমা আসছে বাপের বাড়িতে। চারিদিকে সেজে উঠছে। হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত প্রতিমা তৈরিতে।
দুর্গাপূজার সঙ্গে বনেদি বাড়ির ইতিহাস যেন একে অপরের পরিপূরক। জয়নগরের মিত্র বাড়ির দুর্গা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অলৌকিক সব কাহিনী। কথিত আছে, জয়নগরের মিত্র বাড়িতে দুর্গা পুজোর শুভ সূচনা করেন স্বয়ং দেবী দুর্গা। দেবীর স্বপ্নাদেশে শুরু হয় দুর্গাপুজো।শোনা যায়, স্বয়ং মা দুর্গা সাধারণ মহিলার বেশে এসে জমিদার বাড়ির গৃহকর্তা অন্নদাপ্রসাদ মিত্রের স্ত্রী ভুবনমোহিনী মিত্রকে পুজো শুরু করার কথা বলেন৷
advertisement
advertisement
সেই কয়েক শতাব্দী ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মিত্র জমিদার বাড়িতে শুরু হয় পুজো ৷ প্রায় ৩৫১ বছরেরও বেশি পুরানো মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো৷ জমিদারি প্রথা না থাকলেও অতীতের নিয়ম মেনে প্রতি বছর পুজো হয় এখানে। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অদ্ভুত কাকতালীয় ঘটনা। সাধারণত শরৎকালের কাঁঠাল দেখা যায় না। কিন্তু প্রতিবছর জয়নগরের মিত্র বাড়িতেই ঘটে সেই কাকতালীয় ঘটনা। বাড়ির একটি কাঁঠাল গাছে দুর্গাপুজোর সময় কাঁঠাল ফলবেই ৷ সেই কাঁঠাল সন্ধি পুজোয় নৈবেদ্য হিসাবে মা দুর্গাকে নিবেদন করা হয়।
advertisement
জমিদার বাড়ির বিশাল ঠাকুর দালানে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর দু\’দিন পর থেকেই মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায় ৷ তৎকালীন সময়ে জমিদারির সুবাদে সুন্দরবনের কাকদ্বীপ, জয়নগর, কুলতলি, গোসাবা, নামখানা, রায়দিঘি, মথুরাপুর ইত্যাদি এলাকাজুড়ে জমিদারি প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করেছিল মিত্ররা। অতীতে জমিদার বাড়িতে প্রজা রাই পুজোর যাবতীয় জিনিসপত্র পাঠাতেন।
advertisement
পুজোর ক’দিন ভিড়ে গমগম করত মিত্রবাড়ি ৷ কিন্তু, জমিদারির অবসান ঘটার পর অতীতের জৌলুস হারিয়েছে মিত্রবাড়ির পুজো। এখনও প্রাচীন নিয়ম মেনে জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো ও মহালয়ায় দেবীর চক্ষুদান করা হয়। পূর্বে সাতটি করে পাঁঠাবলির ব্যবস্থা থাকলেও, বর্তমানে দুটি করে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। বাড়ির সামনেই সুবিশাল জলাশয়ে কলা-বৌ স্নান থেকে শুরু করে প্রতিমা বিসর্জন সবটাই হয়ে থাকে।
advertisement
কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা ভিন রাজ্যে ও ভিনদেশে থাকলেও পুজোর চারদিন সকলে বাড়ি ফেরেন ৷ বংশ পরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা মিত্রবাড়িতে প্রতিমা গড়েন ৷ প্রতিবছর বহু মানুষ ভিড় জমান জমিদার বাড়ির এই পুজো দেখতে।
advertisement
মিত্র পরিবারের সদস্য শুভেন্দু মিত্র তিনি জানান, “জমিদারি পতনের পর ধীরে ধীরে করে পূজোর জৌলুষ কমে গিয়েছে।তবে জৌলুস কমে গেলেও নিয়ম নিষ্ঠায় কোনও ভাঁটা পড়েনি। এখনও বলিদান প্রথা রয়েছে। আগে প্রতিদিনই বলিদান হতো এখন দুটি করে বলিদান হয়। এছাড়াও আমাদের এই পুজোর ১৭ দিন চলে। এক সময় পুজোয় প্রতিদিনই মোষ বলি হত। পরে মোট ন’টা পাঁঠা বলি হত। তবে এখন মাত্র দুটো বা তিনটে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। এই বাড়ির পুজোতে কোনও অন্নভোগ হয় না। পরিবর্তে লুচি বা শুধুমাত্র ফল, মিষ্টির ভোগ হয়।”
advertisement
বর্তমান প্রজন্ম অতীতের সেই জৌলুস ধরে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পুজোর আগে এই জয়নগরের মিত্র বাড়িতে পরিবারের সদস্যরা চরম ব্যস্ত। ঠাকুরদালান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে পূজোর অন্যান্য সামগ্রিক এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যোগাযোগান্তি করতে ব্যস্ত। ভক্তি ও নিষ্ঠা মেনে এখনও এই পুজোর চালাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে মিত্র পরিবারের সদস্য শিউলি ঘোষ জানান, “পুজোর কয়েকটা দিন এই পরিবারে মহিলারা চরম ব্যস্ত থাকে। এমনকি এখন থেকেই ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে আমাদের। পুজোর সময় নাড়ু থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম মিষ্টি বানাতে হয় আমাদের। এখানে জন্মাষ্টমীর পরের নবমীতে বোধন শুরু হয় ৷ তখন থেকেই ব্যস্ততার শুরু ৷ সেই নবমী থেকে বিজয়া দশমীর আগের নবমী পর্যন্ত প্রতিদিন ৪০ টা করে বেলপাতা দিয়ে দেবীর পুজো হয় ৷ বলতে গেলে, এখানে পুজো চলে প্রায় ১৭ দিন ধরে ৷”
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
৩৫০ বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়ির পুজোয় দেবীর নৈবেদ্যে থাকে গ্রীষ্মকালীন এই 'বিশেষ' ফল
Next Article
advertisement
Dilip Ghosh: ছাব্বিশের আগেই গুরুদায়িত্বে ফিরছেন দিলীপ? শুভেন্দুর সামনেই মহা চাল দিলেন শমীক
ছাব্বিশের আগেই গুরুদায়িত্বে ফিরছেন দিলীপ? শুভেন্দুর সামনেই মহা চাল দিলেন শমীক
  • ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে মরিয়া বঙ্গের গেরুয়া ব্রিগেড। সেই লক্ষ্যে এবার আরএসএসের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করছে বঙ্গ বিজেপি। বৃহস্পতিবার সেই বৈঠক শেষ হলেও অবশ্য নতুন রাজ্য কমিটি গঠন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

VIEW MORE
advertisement
advertisement