Doctor without Degree: মাধ্যমিকে ফেল করেও চিকিৎসক! 'ডাক্তারপাড়ায়' চলছে রোগী দেখা, অপারেশনও
- Published by:Salmali Das
- news18 bangla
- Reported by:Sujit Bhoumik
Last Updated:
Doctor without Degree: সামন্তপাড়ার কেউ মাধ্যমিক পাশ। কেউ বা সেটাও করেননি। তাতে কী? নামের আগে 'ডাক্তার' শব্দ লিখে বড় বড় ফেস্টুন, ব্যানার। বাড়িতে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় চেম্বার খুলে দিব্যি রোগী দেখছেন। শুধু রোগী দেখাই নয়, ওষুধ প্রয়োগ করে অবশ করার পর অপারেশনও করছেন।
সুজিত ভৌমিক, তমলুক: সামন্তপাড়ার কেউ মাধ্যমিক পাশ। কেউ বা সেটাও করেননি। তাতে কী? নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দ লিখে বড় বড় ফেস্টুন, ব্যানার। বাড়িতে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় চেম্বার খুলে দিব্যি রোগী দেখছেন। শুধু রোগী দেখাই নয়, ওষুধ প্রয়োগ করে অবশ করার পর অপারেশনও করছেন। শুনতে অবাক লাগলেও নন্দকুমার ব্লকের বড়গোদাগোদার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাবলপুর গ্রামের সামন্তপাড়া এভাবেই ‘ডাক্তারপাড়া’ হিসেবে পরিচিত। গৃহকর্তা, তাঁর ছেলে, বউমা সকলেই নামের আগে ডাক্তার হিসেবে চেম্বারে অর্শ, বলি ও ভগন্দর রোগের চিকিৎসা করছেন। বছরের পর বছর ধরে এমন কারবার চলা সত্ত্বেও প্রশাসন ও স্বাস্থ্যদফতক নীরব।
আরও পড়ুনঃ দুর্নীতি, ব্যর্থতার অভিযোগ! রাজ্যের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অপসারণ করলেন রাজ্যপাল?
গোটা বিষয়টি শুনে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, এভাবে চিকিৎসা করা সম্পূর্ণ বেআইনি। পুলিসকে ব্যবস্থা নিতে বলব। তমলুকের নিমতৌড়ি থেকে ময়না যাওয়ার রাস্তা বরাবর এগলেই নন্দকুমার ব্লকের বাবলপুর বাসস্টপ পড়ে। ওই বাসস্টপে নামলেই অন্তত ২০টি ফ্লেক্স নজরে আসবে। প্রতিটি ফ্লেক্সে অর্শ, বলি ও ভগন্দর রোগ নিয়াময়ের জন্য ডাক্তারদের নাম লেখা। ওই গ্রামের বাসিন্দা হারাধন সামন্ত ৬০-৭০ বছর আগে প্রথম বাড়িতে চেম্বার করে এধরনের রোগের চিকিৎসা করতেন। হারাধনবাবুর তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের বেশিরভাগ এখন এই পেশাকেই বেছে নিয়েছেন। প্রত্যেকে নামের আগে ডাক্তার লিখে চুটিয়ে প্র্যাক্টিস করছেন। এভাবে বিপুল রোজগার হচ্ছে। বাড়ি দেখলে চোখ কপালে উঠবে। রোগীপিছু ২০০ টাকা ফি। ওষুধ, অপারেশনের খরচ আলাদা। চেম্বারে লাইন পড়ে যায়।
advertisement
advertisement
গুরুঠাকুর হারাধনবাবুর নাতি হলেন ব্যোমকেশ সামন্ত। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল কোষাধ্যক্ষ পদেও আছেন। আবার ছেলে শিবশঙ্করবাবু বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য। শ্রীরামপুর রোড থেকে ৫০ মিটার ভিতরে অট্টালিকার মতো সাজানো দ্বিতল বাড়ি। বাড়ির গেটে সবসময় লাগানো রয়েছে দু’টি গাড়ি। ব্যোমকেশবাবু এবং দুই ছেলে শিবশঙ্কর ও উমাশঙ্কর প্রত্যেকে নামের আগে ডাক্তার লিখে চিকিৎসা করে যাচ্ছেন। ব্যোমকেশবাবু মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তিনি বলেন, ঠাকুদার পেশা আমরা বহন করে চলেছি। দুই মেদিনীপুর ও হাওড়া থেকে রোগীরা আসেন। ফিসচুলা ও ভগন্দর হলে অপারেশন করতে হয়। অ্যালোপ্যাথি পদ্ধতিতেই চিকিৎসা করি। ব্যোমকেশবাবুর স্ত্রী শেফালিদেবী বলেন, অনেক মহিলা আমার স্বামী ও ছেলেদের এধরনের রোগ দেখাতে ইতস্তত করেন। আমি নিজে তাঁদের চিকিৎসা করি।
advertisement
সামন্তপাড়ার বেশ নামডাক রয়েছে নারায়ণচন্দ্র সামন্তের। চারবারের পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণবাবু ২০২৩ সালেও পঞ্চায়েতে প্রার্থী হন। কিন্তু, খুড়তুতো ভাই বিজেপির শিবশঙ্কর সামন্তের কাছে পরাজিত হন। সোম থেকে শনিবার নারায়ণবাবু দুই মেদিনীপুর ও হাওড়ায় সাত জায়গায় চেম্বারে রোগী দেখেন। হাওড়ার বাগনান, উদয়নারায়ণপুর, ঘাটাল, দাসপুর, হলদিয়ার গিরিশমোড়-সহ তাঁর চেম্বারের লিস্ট দেখলে যে-কেউ চমকে যাবেন। গ্রামের ভিতর বাড়ি থেকে রাজপ্রাসাদ। ছেলে শুভদীপও ‘ডাক্তার’। তিনি যে চারচাকা গাড়ি ব্যবহার করেন তাতে ডাক্তারের লোগো লাগানো আছে। এনিয়ে নারায়ণবাবু বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। সেই সুবাদে আমরা প্র্যাক্টিস করছি। এভাবেই পরবর্তী প্রজন্মও এই পেশায় যুক্ত হয়ে পড়েছে।
advertisement
এভাবেই সামন্তপাড়ার সুবল সামন্ত, খোকন জানা ‘গ্যারান্টি সহকারে’ অর্শ, বলি ও ভগন্দর রোগ সারান। বাসস্টপে অজস্র ফ্লেক্স। রোগীরা বাবলপুর বাসস্টপে আসার পর চেম্বারের ঠিকানা স্থানীয়দের কাছে জানতে চান। বাসস্ট্যান্ডের বাসিন্দা ঝর্ণা সামন্ত বলেন, আমরা কমিশনের বিনিময়ে অন্য কোথাও রোগীদের পাঠালে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় ওই ডাক্তারদের বাড়ির লোকজন।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
August 27, 2025 1:15 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Doctor without Degree: মাধ্যমিকে ফেল করেও চিকিৎসক! 'ডাক্তারপাড়ায়' চলছে রোগী দেখা, অপারেশনও