ঘরে ঘরে বিয়ের প্রস্তুতি, আলপনা সেজে উঠেছিল গ্রাম! সন্ধ্যায় 'বর-বউ' ফিরতেই উৎসবে মাতলেন সকলে

Last Updated:

Bandna Parab : বহু বছর ধরে পালিত হয়ে আসা এক লোকউৎসব৷ ‘বাঁদনা পরব’৷ তারই প্রধান অঙ্গ ‘গরুর বিয়ে’৷ প্রতি বছরই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আগের দিন এই অনুষ্ঠান পালিত হয়৷

+
বাঁদনা

বাঁদনা পরব

বিনপুর, ঝাড়গ্রাম, তন্ময় নন্দী : পাত্র-পাত্রী তৈরি৷ নির্দিষ্ট সময়ে লোকাচার মেনেই হল বিয়ে৷ তবে এই বিয়ে মানুষের নয় গরুর৷ না, কোনও কুসংস্কার নয়, এই বিয়ের কারণ বহু বছর ধরে পালিত হয়ে আসা এক লোকউৎসব৷ ‘বাঁদনা পরব’৷ তারই প্রধান অঙ্গ ‘গরুর বিয়ে’৷ প্রতি বছরই ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আগের দিন লোকসংস্কৃতির অঙ্গ হিসাবে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়৷ বুধবার সকাল থেকে সেই ছবি দেখা গিয়েছে জঙ্গলমহলের একাধিক গ্রামে। প্রথমে গরুদের স্নান করিয়ে গায়ে বিভিন্ন রঙ দিয়ে ছাপ দিয়ে সাজানো হয়। পায়ে জল ঢেলে সেই জল গামছা দিয়ে মোছানো হয় পা। এরপর পায়ে ঘুঙুর পরিয়ে, গরুর মাথায় রঙিন ফিতে বেঁধে সাজিয়ে তোলা হয়৷ বিয়ের পর মিষ্টি খাওয়ানো হয়।
‘গরুর বিয়ে’ উপলক্ষে গরুগুলিকে সাজানো হয় বিভিন্ন রঙে৷ সাজিয়ে তোলা হল নানাভাবে৷ বাংলার প্রাচীন লোকসংস্কৃতিগুলির মধ্যে অন্যতম বাঁদনা পরব। মূলত ঝাড়খণ্ড এবং বাংলার ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার কুড়মি, ভূমিজ, লোধা, মাহাত প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই বাঁদনা উৎসব পালন করেন। আসলে বাঁদনা পরব হল হল গরুর বন্দনা বা গরুর সেবা। একটি কৃষিভিত্তিক উৎসব। আমন ধান চাষের শেষে গরুদের বন্দনা করে কৃতজ্ঞতা জানানোর রীতি। বিনপুরের বাসিন্দা রাজীব মুর্মু বলেন ‘বছরের পর বছর ধরে এই উৎসব গ্রামে পালিত হয়ে আসছে৷ এর সঙ্গে বেশ কিছু লোকাচারও জড়িয়ে আসছে৷ আমরা ছোটবেলা থেকেই তা একই রকমভাবে দেখে আসছি৷’
advertisement
advertisement
প্রযুক্তির দুনিয়ায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন উৎসবের রকমফের ঘটলেও গ্রামবাংলার প্রাচীন লোকাচার হিসাবে এই অনুষ্ঠানটির কোনও পরিবর্তন ঘটেনি৷ শতাব্দীকাল ধরে এই নিয়মে, অনুষ্ঠানে মেতে ওঠেন স্থানীয় মানুষজন৷ তবে গরুকে যে ভাবেই সাজিয়ে তোলা হোক না কেন, ধান দিয়ে একটি বিশেষ মুকুট তৈরি করা এদিন বাধ্যতামূলক৷ একে ‘মোড়’ বলা হয়৷ জমি থেকে কতকগুলি পাকা ধানের শিষ এনে তা দিয়ে সুদৃশ্য ‘মোড়’ তৈরি করা হয়৷ পরে সেটি গরুর মাথায় পরিয়ে দেওয়া হয়৷
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিশেষত সন্ধের সময় এই অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়৷ কারণ, সকাল থেকেই বাড়ির মূল দরজা থেকে গোয়ালঘর পর্যন্ত আলপনা দিয়ে রাখেন বাড়ির বউ-মেয়েরা৷ এরপর দুয়ারে কিছু ঘাস দিয়ে রাখা হয়৷ সন্ধের সময় গরুর দল মাঠ থেকে ঘরে ফিরে এলে প্রথমে তাকে রং দিয়ে সারা গায়ে ছাপ দেওয়া হয়৷ তার পর সেই ঘাস খেয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে৷ সন্ধের সময় গোবর দিয়ে একটি যমরাজের কাল্পনিক মূর্তি তৈরি করে দুয়ারে রাখা হয়৷ তার উপর একটি প্রদীপ জ্বেলে দেওয়া হয়৷ সেই প্রদীপের উপর পা দিয়ে আগুন নিভিয়ে গোয়ালঘরে ঢোকে গরুর দল৷ এরপর বিভিন্ন ভাবে বন্দনা করা হয়৷ তাই ‘বন্দনা’ শব্দ থেকেও এই উৎসবের নামকরণ হতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করেন৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
ঘরে ঘরে বিয়ের প্রস্তুতি, আলপনা সেজে উঠেছিল গ্রাম! সন্ধ্যায় 'বর-বউ' ফিরতেই উৎসবে মাতলেন সকলে
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: শীতের আমেজ ! কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই
শীতের আমেজ ! কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই
  • শীতের আমেজ !

  • কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে

  • দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই

VIEW MORE
advertisement
advertisement