থমকে গিয়েছে বর্ধমানের বেনসেন টাওয়ার ক্লক! স্মার্টওয়াচের যুগেও ইতিহাসের হারানো ছন্দ ফেরাতে উদ্যোগী পুরসভা

Last Updated:

একশো বছরের পুরনো বর্ধমানের বেনসেন টাওয়ার ক্লক পুনরায় সচল করার উদ্যোগ নিল বর্ধমান পৌরসভা।

+
বর্ধমানের

বর্ধমানের বেনসেন টাওয়ার ক্লক

বর্ধমান, সায়নী সরকারঃ একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে বর্ধমানের বুকে দাঁড়িয়ে আছে বেনসেন টাওয়ার ক্লক। আঞ্জুমান কাছারি বাড়ির ৪৮ ফুট লম্বা স্তম্ভের উপর অবস্থিত একটি চতুর্মুখী ঘড়ি, যা একসময় ছিল শহরবাসীর একমাত্র ভরসা।
শহরের যে কোন জায়গা থেকেই দেখতে পাওয়া যেত এই ঘড়ি। বাজত ঘণ্টাও। কিন্তু বর্তমানে থমকে গিয়েছে ঘড়ির কাঁটা। ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো এই ঘড়ি আজও কত স্মৃতি বহন করে চলেছে।সময়ের সঙ্গেই বদলেছে পরিস্থিতি বর্তমানে সকলের হাতেই স্মার্টফোন বা ঘড়ি। কিন্তু আজও যেন এই ঘড়ির দিকে তাকালে বোঝা যায় কত অজানা ইতিহাসের সাক্ষী এটি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ নেই কোনও পরিচয়পত্র, নেই নিজের বলতে কিছুই! একচালার ঘরে সঙ্গী ‘এই’ অবলা, এ যেন এক আজব নাগরিক
জানা যায়, আগে সময় বোঝার জন্য বর্ধমানের নিয়ম ছিল, প্রতিদিন সকাল ছ’টা ও সন্ধ্যা ছ’টার সময় বর্ধমানের কৃষ্ণসায়রের পাড়ে একটি কামান দাগা হত। সকালে সেই কামানের আওয়াজ শুনেই দিন শুরু হত। আবার সন্ধ্যায় কামানের আওয়াজ শুনে বাড়ি ফিরতেন সকলে। ১৮৯৩ সালে বর্ধমানের রাজা বিজয় চাঁদ মেহতাবের আমলে লন্ডনের জে.ডাবলু বেনসেনকে দিয়ে একটি চতুর্মুখী ঘড়ি তৈরি করা হয়। আঞ্জুমান কাছারি বাড়ির ৪৮ ফুটের একটি স্তম্ভর ওপর ঘড়িটি স্থাপিত হয়। কারণ সেই সময় বর্ধমান শহরের অধিকাংশ মানুষের কাছেই ঘড়ি ছিল না। খুব কম মানুষের কাছে পকেটঘড়ি ছিল। তাই সকলের সময় দেখার সুবিধার জন্য রাজা বিজয় চাঁদ মেহতাব এই ঘড়িটি তৈরি করান। সেই সময় শহরে ছিল না আকাশচুম্বি অট্টালিকা। তাই ঘড়িটি শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেখা যেত। এর ঘন্টার আওয়াজও শোনা যেত বহুদূর পর্যন্ত।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুনঃ অনুপ্রেরণার অপর নাম জগন্নাথ! প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে পা দিয়ে লিখেই কলেজে ভর্তির আবেদন
ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, ১৯০৪ সালে যখন কার্জন গেট তৈরি হয় তখনও পর্যন্ত কার্জন গেট থেকে দাঁড়িয়ে এই ঘড়ি দেখা যেত। কারণ সেই সময় পর্যন্ত বর্ধমান শহরে দোতলা বাড়ি ছিল না বললেই চলে। দোতলা বাড়ি বলতে শুধুমাত্র রাজবাড়ি ছিল। এমনকি শোনা যায় স্বাধীনতার পরেও বি.সি রোডে মাত্র আটটি দোতলা বাড়ি ছিল। এখন প্রচুর দোতলা, তিনতলা বাড়ি হয়ে যাওয়ায় আর দূর থেকে দেখা যায় না ঘড়িটিকে। আগে সংস্কার করা হলেও বর্তমানে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে ঘড়িটি।
advertisement
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ইতিমধ্যেই ঘড়িটি সংস্কারের জন্য পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বর্ধমান পৌরসভার পুরপ্রধান পরেশ চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, কালের ব্যবধানে বড় বড় বাড়ি হয়ে যাওয়াতে কার্জন গেট থেকে বি.সি রোড হয়ে রাজবাড়ি পর্যন্ত ঘড়িটি ঢাকা পড়ে গিয়েছিল, ফলে দেখা যেত না ঘড়িটিকে। কিন্তু এ বছর কার্জন গেট থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার হয়েছে এবং ইলেকট্রিক পোলগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে ঘড়িটি পুনরায় দূর থেকে দেখা যায়। যা কিছু ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন বর্ধমানে আছে সেগুলি একে একে আমরা পুনরুদ্ধার করে সকলের সামনে তুলে ধরব। তার মধ্যে এই রাজবাড়ির ঘড়িটি অন্যতম। পাশাপাশি যেসব ব্যবসায়ীরা বিনা অনুমতিতে নির্মাণকার্য করছিলেন তাদেরকেও নোটিস পাঠানো হয়েছে। কেন তারা অবৈধ নির্মাণ করে বর্ধমানের ঐতিহ্যকে ঢেকে দিচ্ছেন তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
advertisement
১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বর্ধমানের বুকে দাঁড়িয়ে আছে বেনসেন টাওয়ার ক্লক। এটি শুধু একটি ঘড়ি নয়, এটি যেন বর্ধমানের ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী। বর্তমানে ঘড়িটি অচল হয়ে পড়লেও, এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব এখনও অপরিসীম। সম্প্রতি এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে উদ্যোগী হয়েছে বর্ধমান পৌরসভা। এই উদ্যোগের ফলে বেনসেন টাওয়ার ক্লক আবারও তার পুরোন গৌরব ফিরে পাবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে বর্ধমানের সমৃদ্ধ ইতিহাস, আশাবাদী শহরবাসী।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
থমকে গিয়েছে বর্ধমানের বেনসেন টাওয়ার ক্লক! স্মার্টওয়াচের যুগেও ইতিহাসের হারানো ছন্দ ফেরাতে উদ্যোগী পুরসভা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement