#আলমগঞ্জ: বর্ধমানের মোটা শিবের প্রাচীনত্বের কথা শুনলে অবাক হতেই হয়। বর্ধমানের আলমগঞ্জের এই শিবকে মোটা শিব বলা হলেও তা বর্ধমানেশ্বর শিব মন্দির নামে অধিক পরিচিত। ইতিহাসবিদদের মতে, এটিই এ রাজ্যের সবচেয়ে বড় কালো পাথরের শিবলিঙ্গ। তাঁদের অনুমান, এই শিবলিঙ্গ ১৬০০ থেকে ১৭০০ বছরের প্রাচীণ। ইতিহাসবিদদের অনেকের মতে, স্বয়ং কনিষ্ক এই শিবলিঙ্গের পুজো করতেন নিয়মিত। শিবরাত্রি উপলক্ষে এখন সেজে উঠছে বর্ধমানের এই মন্দির চত্ত্বর। তৈরি হচ্ছে দোকান পাট। অগনিত ভক্ত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় করবেন। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। তৈরি হচ্ছে ব্যারিকেড।
রাজ্যের প্রসিদ্ধ শিব মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের আলমগঞ্জের বর্ধমানেশ্বর শিব মন্দির। বিশাল আকারের কারণে এই শিব ‘মোটা শিব’ বা ‘বুড়ো শিব’ নামেও পরিচিত। ১৯৭২ সালে এলাকায় পুকুর খোঁড়ার জন্য মাটি কাটার কাজ চলছিল। সেই সময় হঠাৎই পাথরের গায়ে গাঁইতির আঘাত লাগে। কৌতূহল বাড়ে কাজে যুক্ত শ্রমিকদের মধ্যে। ধীরে ধীরে খোঁড়া হয়। বের হয়ে আসে গৌরিপট্ট-সহ এই বিশাল আকারের শিবলিঙ্গ। এই শিবলিঙ্গের উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট। ওজন ১৩ টনেরও বেশি। গোটাটাই একটিই কালো পাথর নিপুনভাবে কেটে তৈরি। ক্রেনে করে তুলে স্থাপন করা হয় সেই শিবলিঙ্গ। রয়েছে দুধপুকুর। সেই পুকুরে স্নান সেড়ে পুজো দেন ভক্তরা। শ্রাবণ মাসে পাওয়া গিয়েছিল। তাই সেই মাসে এই শিবের আবির্ভাব দিবস পালন করা হয়। সেদিন হাজার হাজার পুণ্যার্থী গঙ্গা থেকে বাঁকে করে জল এনে শিবের মাথায় ঢালে। শিবরাত্রিতে অগণিত ভক্তের ভিড় হয় মন্দিরে। মেলা বসে। কয়েকদিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর বসে। এবারও করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে শিবলিঙ্গে জল ঢালবেন ভক্তরা।
এই শিবলিঙ্গের প্রাচীনত্ব নিয়ে ইতিহাসবিদদের মনে কোনও দ্বিমত নেই। তবে ঠিক কত বছরের প্রাচীন তা নিয়ে প্রামান্য কোনও তথ্য নেই। অনেকের মতে, এই শিবলিঙ্গ কনিষ্কের সময়ে। অর্থাৎ প্রায় ১৬০০ -১৭০০ বছর আগে। কনিষ্ক নিজে এই কালো শিবলিঙ্গে নিয়মিত পুজো করতেন। পরবর্তী সময়ে বন্যায় তা দামোদরে ভেসে আসে। তবে এত ভারি শিবলিঙ্গের পক্ষে নদীতে ভেসে আসার সম্ভাবনা নিয়েও ইতিহাসবিদদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে।
Saradindu Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: East Bardhaman, Mahashivratri 2021