হোম /খবর /বর্ধমান /
দেবীজ্ঞানে জ্যান্ত বিষধরের পুজো আজও, সাপে-মানুষে সহাবস্থান যুগ যুগ ধরে

Snake bite| এখানে দেবীজ্ঞানে জ্যান্ত বিষধরের পুজো আজও, সাপে-মানুষে সহাবস্থান যুগ যুগ ধরে

রবিবার শুক্লপক্ষের পূর্ণিমার প্রতিপদে মহাধুমধামের সাথে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে পালিত হল দেবী ঝঙ্কেশ্বরীর পুজো।

রবিবার শুক্লপক্ষের পূর্ণিমার প্রতিপদে মহাধুমধামের সাথে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে পালিত হল দেবী ঝঙ্কেশ্বরীর পুজো।

Snake bite| ওঠাবসা সবই সাপের সঙ্গে। এই গ্রামগুলিতে সাপকে পুজো করা হয় দেবীরূপে।

  • Share this:

#বর্ধমান: সাপ দেখলেই ভয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় অনেকেরই। তার ওপর সেই সাপ যদি হয় বিষধর কেউটে - তবে তো কথাই নেই। তবে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার ও মঙ্গলকোটের কয়েকটি গ্রামে সেই বিষধরদের সঙ্গে সহাবস্থান বাসিন্দাদের। ওঠাবসা সবই সাপের সঙ্গে। এই গ্রামগুলিতে সাপকে পুজো করা হয় দেবী রূপে।

রবিবার শুক্লপক্ষের পূর্ণিমার প্রতিপদে মহাধুমধামের সাথে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে পালিত হল দেবী ঝঙ্কেশ্বরীর পুজো। গত কয়েক শত বছর ধরে এই পুজোকে কেন্দ্র করে  আনন্দে মেতে উঠেন ভাতারের বড়পোষলা ও ছোট পোষলা গ্রামের বাসিন্দারা। জ্যান্ত বিষধরের মাথায় সিঁদুর লেপে ফুল দিয়ে পুজো করা হয়।

গোটা দেশের মধ্যে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টিকারী কোবরা প্রকৃতির সাপ ঝাংলাই বা ঝঙ্কেশ্বরী। বর্ধমানের ভাতার ও মঙ্গলকোটের ৭টি গ্রামে অবস্থান এই সাপের। কেবলমাত্র ভারতের তাবড় তাবড় গবেষকরাই নয়,বিদেশ থেকেও বহু গবেষক এসে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গেছেন। কিন্তু এখানে এই সাপের ছোবলে মৃত্যু কম কেন সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত স্বতঃসিদ্ধ কোন সিদ্ধান্ত তাঁরা জানাতে পারেননি। তবে এটা ঠিকই যে ঝাংলাই কোবরা প্রজাতির অতি বিষধর সাপ। কোবরার অন্য প্রজাতির মতই এদের বিষ ছিটিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।

 এই ঝাংলাইকে স্থানীয় গ্রামাবাসীরা মনসা মঙ্গল কাব্যে বর্ণিত কালনাগিনী বলেই মনে করে থাকেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন এই কাল নাগিণীই লখীন্দরকে লোহার বাসর ঘরে দংশন করে। বেহুলার ছোঁড়া যাঁতির আঘাতে তখনই লেজের কিছুটা অংশ কেটে যায়। আর এই ঘটনায় কৃষ্ণের অভিশাপে কালনাগিনীর ঠাঁই হয় পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে – এই সাতটি গ্রামকেই পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল বলে বিশ্বাস করেন গ্রামবাসীরা।এলাকার বাসিন্দারা আজও বিশ্বাস করেন মুশারু, ছোটপোষলা,বড়পোষলা, শিকড় তোড়, পলসোনা এবং মইদান এই গ্রামগুলিতেই একদা অবাধ বিচরণ ছিল এই সাপের। পরবর্তী সময়ে কালের নিয়মে কিংবা অন্য সাপের কারণে আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হতে থাকে এই বিরল প্রজাতির কোবরা।

বর্তমানে পলসোনা, মুশারু, ছোট ও বড় পোষলা গ্রামেই দেখতে পাওয়া যায় এই সাপকে। বিষধর। রয়েছে বিশাল ফণাও। মাথায় গোল চক্রাকারের চিহ্ন।

মনে করা হয় এই সাপ কাউকে ছোবল মারার আগে সাপ বিষ ছিটিয়ে দেয় পরে কামড়ায়। তাই এই সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে খুব কম জনেরই।

এই চারটি গ্রামেই বাড়ির মধ্যে, উঠানে, রান্না বা শোওয়ার ঘরেও হঠৎ হঠাৎ দেখতে পাওয়া যায় এই সাপকে। যদিও এলাকার বাসিন্দারা তাতে এখন আর ভীত হন না।

Published by:Arka Deb
First published:

Tags: Snake