বর্ধমান: রোগী করোনা আক্রান্ত। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর উপসর্গ ছিল একটু অন্য রকমের। বারে বারে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তাতেই সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। পরীক্ষায় ধরা পড়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওই মহিলা রোগী। তাঁর সম্পূর্ণ হার্ট ব্লক ছিল। ঝুঁকি নিয়ে সেই কোভিড পজিটিভ রোগিণীর শরীরে সফল ভাবে পেসমেকার বসিয়ে নজির সৃষ্টি করলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন-স্বপ্নপূরণ বাবুলের, ৬২টি সিঁড়ি ভাঙার দিন শেষ বালি ঘাট স্টেশনে
রোগীর নাম আসু বিবি। বয়স ৫০ বছরের আশপাশে। তিনি পশ্চিম বর্ধমানের জামুরিয়ার শিবপুরের বাসিন্দা। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে রাখার ঝুঁকি নেননি। শনিবার তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা বিভাগে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তিনি বারেবারেই অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন। তার কারণ খোঁজার চেষ্টা শুরু করেন বর্ধমান মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা। তাঁরা নিশ্চিত হন ওই রোগী করোনার পাশাপাশি হৃদরোগে আক্রান্ত। এরপর কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। তাতে দেখা যায় সম্পূর্ণ হার্ট ব্লক রয়েছে ওই রোগিণীর। তাঁরা দ্রুত পেসমেকার বসানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু কোভিড আক্রান্ত রোগীর শরীরে পেসমেকার বসানো খুবই ঝুঁকির ব্যাপার।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক পদস্থ আধিকারিক জানান সোমবারের মধ্যেই ওই রোগিণীর পেসমেকার বসানোর প্রয়োজনিয়তার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। দেরি হয়ে গেলে তাঁর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি উইং অনাময় হাসপাতাল হৃদরোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। সোমবারই অনাময় হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং দ্রুত পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার অস্ত্রপচার করে পেসমেকার বসানো হয়।
আরও পড়ুন-আজও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে, আগামী ক’দিন আবহাওয়ার কি পূর্বাভাস? জেনে নিন
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত প্রাথমিকভাবে পেসমেকার বসানো হয়েছে। ওই রোগী করোনা মুক্ত হলে পাকাপাকিভাবে পেসমেকার বসানো হবে। তবে যেহেতু রোগী করোনা আক্রান্ত তাই এক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে ওই রোগিণীকে অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার নার্স টেকনিশিয়ান মিলিয়ে পাঁচজন অপারেশন থিয়েটারে পিপিই কিট পরে প্রস্তুত ছিলেন। রোগী যাওয়ার পরেই অপারেশন শুরু হয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক পর অস্ত্রোপচার শেষে তাঁকে পুনরায় বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে বর্ধমান মেডিক্যালের করোনা বিভাগে ফেরত পাঠানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ওই রোগীর কোভিড মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করা সম্ভব ছিল না। তাতে তাঁর প্রাণসংশয়ের যথেষ্ট আশঙ্কা ছিল। সেজন্যই কোভিড পজিটিভ থাকা সত্ত্বেও রোগিনীর অস্ত্রোপচার করা হয়। আপাতত তিনি সুস্থই রয়েছেন।
শরদিন্দু ঘোষ
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bardhaman, Coronavirus