#হুগলি: বাস্তবেই তিনি ব্যতিক্রমী। একদিন রিকশা চালাতেন। সেই মানুষটাই এখন রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক। কিন্তু ক্ষমতা হাতে এলেই তাঁর পা এখনও মাটিতেই। প্রতিনিয়ত ছুটে বেড়াচ্ছেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সেই সেই ছুটে বেড়ানোয় 'গতি' আনতে এবার রিকশার বদলে টোটো কিনে নিলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী (Manoranjan Byapari)। আর টোটোতে নিজের বসা ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে বিধায়ক লিখলেন, 'আপনাদের বিধায়ক, আপনাদের সেবক। এতদিনে তার আপনাদের আশীর্বাদে, দয়া আর দানে একটা নিজের বাহন হল। যেকোনও দিন, যেকোনও সময় এই বাহন বিধায়ককে নিয়ে পৌঁছে যাবে আপনার দরজায়।'
একদিন তার রিকশায় সওয়ার হয়ে জিজীবিষা শব্দের অর্থ জিজ্ঞেস করেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। এরপরই বদলে যায় মনোরঞ্জন ব্যাপারীর জীবন। জেলের জীবনের রেশ কাটিয়ে হয়ে ওঠেন বাংলার 'দলিত লেখক'। 'অন্য ভুবন', 'জিজীবিষার গল্প'র মতো নানান বইতে উঠে এসেছে তাঁর সেই অতীত জীবন। রিকশাচালক থেকে সাহিত্যিক হয়ে ওঠা সেই মনোরঞ্জন ব্যাপারীকেই এবার বলাগড় থেকে বিধানসভার প্রার্থী করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচার পর্বেও তাঁর ছুটে চলা নজরে পড়েছিল সকলের। ভোটের বাক্সেও তার প্রতিফলন ঘটে। অভাবনীয় ভাবে বলাগড় থেকে জয় ছিনিয়ে আনেন মনোরঞ্জন।
আর তারপর থেকেই তিনি ছুটে চলেছেন অবিরত। ইয়াসের ঝড়ের মধ্যেই হোক বা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো- বলাগড় এখন বিধায়ককে নিয়ে কার্যত গর্বিত। মনে রাখা প্রয়োজন, নিজের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় বলাগড়বাসীর মনে দাগ কেটেছিলেন মনোরঞ্জন বাবু। পরিচিত হাফ শার্ট আর গলায় গামছা দিয়ে রিকশা চালিয়েই মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। যাত্রী আসনে সাজানো ছিল তাঁর লেখক জীবনের ২১ টি গ্রন্থ।
বিধায়ক হওয়ার পর জীবন স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা বদলে গিয়েছে। কিন্তু মনোরঞ্জন ব্যাপারী আলাদা। তিনি জানেন মাটিতেই পা রেখে চলতে হবে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় মনোরঞ্জন বলেছিলেন, 'বিধানসভার বাইরে এবং ভিতরে সেই বঞ্চিত শ্রেণির জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। কোনও আপস করব না।' সেই পথে চলতেই এবার টোটো কিনলেন 'দলিত লেখক'।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Manoranjan Byapari, TMC MLA