হোম /খবর /দেশ /
নেই নতুন বায়না, ভাঁড়ার শূন্য! পটের গায়েই সচেতনতার বার্তা ফুটিয়ে তুলছেন পটশিল্পী

নেই নতুন বায়না, ভাঁড়ারও শূন্য! তবু পটের গায়েই সচেতনতার বার্তা ফুটিয়ে তুলছেন পটশিল্পীরা

  • Share this:

Sujit Bhowmik

#মেদিনীপুর: করোনা লকডাউন সংকট এনেছে পেশায়। আমফান ঝড় ধ্বংস করেছে তাঁদের বাড়িঘর। তবু কোনকিছুই তাঁদের হাত থেকে কাড়তে পারেনি শিল্পকর্ম। হাতের শিল্পকর্মই যাঁদের আয় ও উপায়ের একমাত্র মাধ্যম, পূর্ব মেদিনীপুরের সেই পটশিল্পীদের কাজে ছেদ পড়েনি আজও। লকডাউনে আয় উপায় বন্ধ হলেও নিজেদের সৃষ্টিকর্ম, পটচিত্র আর পট গানের সাহায্যে  করোনা সচেতনতাতেই এখন হাত লাগিয়েছেন চন্ডীপুরের পটশিল্পীরা। করোনার কারণে লকডাউন। আর তার কারণেই বাজারের হাল পুরো বেহাল অবস্থায়। তবু আশাবাদী সকলেই, দিন আবারও ঘুরবেই। দুরবস্থা থাকলেও ছন্দপতন ঘটেনি আঁকিবুকিতে। প্রথাগত ভাবেই এঁকে চলেছেন চন্ডীপুর ব্লকের হবিচক নানকারচক গ্রামের পটুয়ারা।

পটুয়াপাড়ার প্রায় শতাধিক পটুয়া শিল্পী এখন পটে ফুটিয়ে তুলছেন নানান কাহিনী থেকে জন সচেতনার বার্তা। পূর্ব মেদিনীপুরের চন্ডীপুর ব্লকের এই গ্রামের পটুয়াদের রয়েছে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার থেকে রাজ্য, দেশের-সহ আন্তর্জাতিক স্থরের নানা স্বীকৃতি। তবে লকডাউনের কারণে সকলেরই অবস্থা যথেষ্টই করুণ। পটচিত্রের বাজার নেই। তাই আয়ও নেই। বন্ধ রোজগার। তারই মধ্যে মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বাড়াতে নতুন ভাবনা ভেবেছেন। করোনা নিয়ে জন সচেতনতা গড়ে তুলতে করোনা পট তৈরি করেছেন পট শিল্পী সায়রা চিত্রকররা। লকডাউনে রাস্তায় নেমে প্রচারের সুযোগ না থাকলেও ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পট গান প্রচারে সচেতনতা চালাচ্ছেন সকলে। ফেসবুক প্রচারের মাধ্যমে সচেতনার বার্তা দিচ্ছেন পট শিল্পী সায়রা চিত্রকরা।

এই সময় পূজোর বাজার ধরার পাশাপাশি বড় বড় থিম পূজোর লক্ষ লক্ষ টাকার অর্ডার আসত। কিন্তু লকডাউনে এবার একেবারেই বায়না নেই। আবার যেটুকু অর্ডার ছিল সেটাও আমফানের দাপটে নষ্ট। এই দুঃসময়ে তাঁদের কেউ খোঁজ নেয়নি বলে আক্ষেপ রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত কল্পনা চিত্রকরের। তবু ও তিনি পট এঁকেই চলেছেন, তিনি আশাবাদী বাজার ঘুরে  দাঁড়াবেই। হবিচক নানকারচক লোকশিল্প পটুয়া  সমিতির  সম্পাদক আবেদ চিত্রকর বলেন, ফি বছর এই সময় প্রচুর অর্ডার পেতাম দুর্গাপুজোর। কিন্তু এ বছর একেবারেই শূন্য। দীর্ঘ লকডাউনের ফলে পটুয়াদের অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারেই সঙ্কটজনক। সরকারি সাহায্য না পেলে ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। এভাবে লকডাউন চললে আগামী দিনে শিল্পীদের হয়তো পেশা পরিবর্তন করতে হবে। একই সুর শোনা গেল সমিতির সহ সভাপতি বাবলু পটিদারের কথায়। পট চর্চা নিয়ে যিনি কাজ করছেন স্থানীয় শিক্ষক অরুনাংশু প্রধান বলেন, লকডাউনের জেরে উৎসব অনুষ্ঠান বন্ধ, তাই এই অবস্থা কাটিয়ে তুলতে সরকার অনলাইন ট্রেডিং-এর ব্যবস্থা করলে শিল্পীরা ঘুরে দাঁড়াবে। তবে সমস্যা মাথায় নিয়েও নিজেদের শিল্পকর্ম দিয়ে করোনার কঠিন সময়ে মানুষকে সচেতন বার্তা দিতে ভুলছেন না তাঁরা।

Published by:Simli Raha
First published:

Tags: Medinipore