'রানার' মনে আছে? মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও জীবন যুদ্ধের রানার! জানেন কেন?
- Published by:Suman Majumder
- hyperlocal
- Reported by:Ranjan Chanda
Last Updated:
Medinipore- বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সেই পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে সকালবেলায় খবরের কাগজ পাঠকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে। এখনও সেই কাজে কোনও ছেদ পড়ে নি।
পশ্চিম মেদিনীপুর: বয়স তার মেরে কেটে পনেরো। সকাল থেকে বিদ্যালয়ে দেওয়া সাইকেল নিয়ে সে বের হয়, খবরের কাগজ নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেয় সে।
শীত হোক কিংবা বর্ষা বছরভর এটাই রুটিন তার। ঘরে অভাব, বাবা এবং মা অসুস্থ। সংসার চালাতেই তাই বাবার পেশাই ভরসা তার। বাবাও বাড়িতে বাড়িতে বিলি করতেন খবরের কাগজ।
বাবার অসুস্থতার পর সেই হাল ধরেছে বছর ১৫ এর ছেলে। মাত্র একমাস পরে মাধ্যমিক পরীক্ষা, হয়তো পরীক্ষা দিন পর্যন্ত তাকে এই কাজ করে যেতে হবে। ঘরে আর্থিক অসচ্ছলতা, গৃহশিক্ষক নেই তার, তবে হার মানেনি। মনের জোরেই সাইকেল চালিয়ে খবরের কাগজ বিক্রি করে পরিবারের সকলের পেট চালায় সবং ব্লকের দশগ্রামের দেবাঞ্জন। এভাবে প্রস্তুতি নিয়ে মাধ্যমিক দেবে সে।
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে স্ত্রী, স্বামীর হাত-পা বাঁধা! বীরভূমের রাস্তায় এ কী ঘটল?
পেট বড় বালাই। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর সেই পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে সকালবেলায় খবরের কাগজ পাঠকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করে। এখনও সেই কাজে কোনও ছেদ পড়ে নি। সংসার তো চালাতে হবে। আর এক মাস পর মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু তার চেয়েও বড় ‘পরীক্ষা’ অভাবী সংসারের জোয়াল টানা।
advertisement
সামনেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, যে সময়ে বেশি করে পড়াশোনায় মন দেওয়া জরুরী, তখন নির্দিষ্ট সময়ে খবরের কাগজ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবাঞ্জন ভুঁইয়াকে।
সবং ব্লকের দশগ্ৰাম গ্ৰাম পঞ্চায়েতের কোলন্দা গ্ৰামের বাসিন্দা দেবাঞ্জন। বিলকুয়া সপ্তগ্ৰাম হাই স্কুলের ছাত্র। রোজ সকালে এই খবরের কাগজ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে সেখান থেকে রোজগারের অর্থে কোনোরকমে ডাল-ভাত খেয়ে দিন গুজরান হচ্ছে এই হতদরিদ্র পরিবারের। সকালে কাগজ বিলি করে বেলার দিকে বাড়িতে ফেরা। তারপর সময় বের করে পড়তে বসা।
advertisement
কোনও প্রাইভেট টিউশন নেই। নিজেই পড়ে। কিন্তু তারমধ্যেও পড়ার ফাঁকে বাড়ির কাজও তাকে করতে হয়। উপায় নেই। কারন বাবা এখন চোখে দেখতে পান না। মা রোগশয্যায়। ফলে পরিবারের দৈনন্দিন কাজ করতে হয় তাকে ও তার দিদিকে।
আরও পড়ুন- বছরের প্রথমে চমক দিঘায়! ল্যাংচা, রসগোল্লায়, সরভাজায় মজেছে পর্যটন থেকে স্থানীয়রা
সামান্য ছিপ ছিপে চেহেরা। বয়সও নিতান্তই সামান্য। এই বয়সে সংসারের ভার তার কাঁধে। তবে সামনে তো পরীক্ষা। এরকমভাবে সকালে সংবাদপত্র বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়ে সময় তো নষ্ট হচ্ছে? তবে সেই উত্তর যেন অধরা সকলের কাছে।
advertisement
পড়ার চাপের থেকেও সাংসারিক চাপ আরও ভয়ংকর।আগে এই কাজটি দেবাঞ্জনের বাবা নিমাই ভুঁইয়া করতেন। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর এই কাজের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে তার মাধ্যমিক পড়ুয়া ছেলে। কয়েক বছর ধরে বাড়িতে বাড়িতে সংবাদপত্র বিলি করে আসছে সে। তবে এই সংসারিক যন্ত্রণার মুক্তি কোথায়? স্বাচ্ছন্দ্যে পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে পারবে দেবাঞ্জন? সেই প্রশ্ন সকলের।
advertisement
রঞ্জন চন্দ
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
January 08, 2025 5:49 PM IST