অপূর্ব সুন্দর... ভগবানপুর বেরা বাড়িতে আজও আতস কাচের উপর সূর্যের আলো ফেলে হোমের আগুন জ্বলে

Last Updated:

বিসর্জনের আগে প্রতিমাকে পুরো দিঘি প্রদক্ষিণ করান হয়। ভগবানপুরের বেরা বাড়ির দুর্গাপুজো তাই আজও প্রমাণ করে, আড়ম্বর কমলেও ঐতিহ্যের আলো কখনও ম্লান হয় না।

+
বেড়াবাড়ি

বেড়াবাড়ি দুর্গাপুজো

ভগবানপুর: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুরের বেরা বাড়ি। প্রায় ২৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে দুর্গাপুজো চলে আসছে। শুধু পুজো নয়, এ বাড়ি হয়ে উঠেছে এক ঐতিহ্যের ঠিকানা। সময় বদলেছে, সমাজের অনেক কিছু রূপান্তরিত হয়েছে, আচার-অনুষ্ঠানের নানা দিকও সহজ হয়ে গিয়েছে, তবুও এখানকার কিছু রীতি আজও অটুট থেকে গেছে। এ বাড়ির হোমে আজও দেশলাই বা লাইটার নয়, আতস কাঁচের উপর সূর্যের আলো ফেলে অগ্নি সংযোগ করা হয়।
প্রযুক্তি নির্ভর এই আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে যখন আগুন জ্বালানো সবচেয়ে সহজ কাজ, তখন বেরা বাড়ি এখনও ধরে রেখেছে প্রকৃতির আলো-আগুনের সেই পুরোনো যোগসূত্র। আর এই প্রথাই আজও ভগবানপুরের দুর্গাপুজোকে আলাদা করে তোলে। যা দেখতে প্রতিবছর এলাকাবাসীদের ভিড়ে গমগম করে বেরা বাড়ি চত্বর। এ বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা কাহিনি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, একসময় দেবী গাংচিল রূপে এসে পুজোগ্রহণ করতেন। পরিবারের সদস্যরা তো বটেই, গ্রামবাসীরাও সেই বিশ্বাস আঁকড়ে ধরে আছেন। যদিও এখন আর গাংচিল দেখা যায় না, তবুও তাঁরা মনে করেন দেবী জাগ্রত। মানত পুরণের জন্য অনেকে আসেন, কেউ পুত্র কামনায় বড় বাতাসা দেন, আবার কেউ বোবা সন্তানের মুখে কথা ফোটার আশায় ওল উৎসর্গ করেন।
advertisement
এই পুজোর সূচনা করেছিলেন পরিবারের আদিপুরুষ জমিদার দর্পনারায়ণ বেরা। তিনি চিরকুমার ছিলেন। সেই সূত্রে এখনও প্রথা অনুযায়ী দু’জন অবিবাহিত ব্রাহ্মণের কাঁধে ভর করে কলা বউকে দিঘিতে স্নান করান হয়। এখানে কোনও পশুবলি হয় না। প্রতিমা গড়ার কাজ শুরু হয় কনকষষ্ঠীর দিন। আগে পুজোর সময়ে ব্রাহ্মণরা এক লক্ষ দুর্গা মন্ত্র জপ করতেন, যদিও এখন আর তা হয় না। তবুও নৈবেদ্যে এখনও এক কুইন্টাল চাল দেওয়া হয়।
advertisement
advertisement
একসময় নবমীতে পাত পেড়ে ভোজনের আয়োজন হত । এক পয়সা করে দক্ষিণা দেওয়া হত। দিঘি থেকে নৌকায় ঘট আনার রীতি ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জমিদারি হারিয়ে যাওয়ায় সে সব ঐতিহ্য আজ অতীত। সামান্য দেবোত্তর সম্পত্তি ও স্থানীয় সাহায্যেই এখন পুজো খরচ বহন করা হয়।তবুও সবকিছুর মাঝেই টিকে আছে এক অমূল্য ঐতিহ্য, আতস কাঁচের মাধ্যমে আগুনে হোমের অগ্নি সংযোগ।
advertisement
এলাকাবাসীদের মতে, এটি কেবল পুজোর রীতি নয়, বরং প্রকৃতির শক্তির প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক। দশমীতে দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় দিঘির জলে। তবে বিসর্জনের আগে প্রতিমাকে পুরো দিঘি প্রদক্ষিণ করান হয়। ভগবানপুরের বেরা বাড়ির দুর্গাপুজো তাই আজও প্রমাণ করে, আড়ম্বর কমলেও ঐতিহ্যের আলো কখনও ম্লান হয় না।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
অপূর্ব সুন্দর... ভগবানপুর বেরা বাড়িতে আজও আতস কাচের উপর সূর্যের আলো ফেলে হোমের আগুন জ্বলে
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: শীতের আমেজ ! কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই
শীতের আমেজ ! কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই
  • শীতের আমেজ !

  • কলকাতায় রাতের তাপমাত্রা নামবে

  • দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই

VIEW MORE
advertisement
advertisement