কাকদ্বীপ: পথের কাঁটা সরাতে ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র৷ সুপারি কিলার দিয়ে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ঢোলাহাট থানার শিমুলবেড়িয়ার ঘটনা৷ এখানেই পাওয়ার হাউসের পিছনে একটি খালে উদ্ধার হয় নামখানার পাতিবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা বছর তিরিশের গৃহবধূ সাহেবা বিবির দেহ৷ এই খুনের ঘটনায় ভিন রাজ্যের বাসিন্দা স্বামী নাসিরউদ্দিন শাহকে গ্রেফতার ঢোলাহাট থানার পুলিশ।
বেঙ্গালুরু থেকে অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে ঢোলাহাট থানায় নিয়ে আসা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, অ্যাডিং সেকশন ৩৭৬(আই),৩৭৬ এ, ১২০ বি ধারায় মামলা রুজু করে রবিবার তাঁকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে৷ অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই খুনের ঘটনায় আগেই আতিয়ার শেখ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ৷ তাঁকে জেরা করেই নাকি মৃতের স্বামীর সন্ধান মেলে। এই ঘটনায় দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে এই খুনের আসল রহস্য উদঘাটন করতে চায় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বছর দশেক আগে সাগরের খানসামাবাদের বাসিন্দা সাহেবা বিবির সঙ্গে নামখানা ব্লকের মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা নাসিরউদ্দিন শেখের বিয়ে হয়। পরে তাঁরা নামখানার পাতিবুনিয়াতে থাকতে শুরু করেন। কিছুদিন পরে স্বামী নাসিরুদ্দিন কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে চলে যান। ওই দম্পত্তির ২ সন্তানও ছিল। পরে আবার দ্বিতীয় বিয়ে করে নাসিরুদ্দিন। এরপর থেকে প্রথম স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়ে যায় নাসিরুদ্দিনের।
আরও পড়ুন: ঘরের কোন দিকে রাখেন সাত ঘোড়ার এই ছবি? ঠিক দিকে রাখলে জীবন সুখ-ধন-সম্পত্তি, নাহলে...
অভিযোগ, এরপর থেকেই সাহেবাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে শুরু করে নাসিরউদ্দিন। যোগাযোগ করে নিকট আত্মীয় আতিয়ার শেখের সঙ্গে। এই খুনের জন্য আতিয়ারের সঙ্গে টাকার চুক্তি হয় নাসিরুদ্দিনের। খুনের জন্য ভিন রাজ্য থেকে দফায় দফায় আতিয়ারকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। কিন্তু কথা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় নাসিরউদ্দিন চাপ দিতে থাকে আতিয়ারকে। অবশেষে আসে অ্যাকশনের দিন৷
খুনের দিন রাতে লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে বাস ধরে শিমুলবেড়িয়ায় চলে আসে আতিয়ার। অভিযোগ, পাওয়ার হাউস অতিক্রম করার পরে খাল পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয় সাহেবাকে৷ সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করে গলায় কাপড়ের ফাঁস দিয়ে খালের জল কাদার মধ্যে মুখ গুঁজে খুন করা হয় সাহেবাকে। সাহেবার সঙ্গে থাকা ছোট ছেলে কোনওক্রমে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে।
আরও পড়ুন: শাড়ির সেল নাকি কল তলার ঝগড়া! চুলের মুঠি ধরে চুলোচুলি ২ মহিলার, দেখুন ভাইরাল সেই ভিডিও
এই খুনের কিনারা করার জন্য ঢোলাহাট থানার ৫ জন একটি সিট গঠন করা হয়। ছোট ছেলের বয়ান অনুযায়ী শুরু হয় তদন্ত। এই খুনের ঘটনায় প্রথমে আতিয়ার শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করার পরে এই মামলার সঙ্গে সাহেবার স্বামীর যোগাযোগ থাকার সূত্র মেলে। তারপর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী পুলিশের একটি টিম রওনা দেয় ব্যাঙ্গালুরুর উদ্দেশে। শুক্রবার সাহেবার স্বামী নাসিরউদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় মন্দিরবাজারের ডিএসপি বিশ্বজিৎ নস্কর জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে শুরু করা হয়েছিল। আগেই একজনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই খুনে মূল অভিযুক্ত। এই খুনের কথা সে শিকার করে নিয়েছে। তবে তাঁকে এই খুনের জন্য সুপারি দিয়েছিল মৃতার স্বামী। তাঁকেও বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে এই খুনের আসল রহস্য উদঘাটন করা হবে।
বিশ্বজিৎ হালদার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।