পূর্ব মেদিনীপুর: বাইক নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়েন যুবক। শরীরে ভালোমতো আঘাত লাগলেও প্রাণ ছিল। ওই অবস্থায় সাহায্য চেয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক রাস্তার মধ্যেই ছটফট করেন, কিন্তু সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি কেউ। সকলেই আহত যুবককে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। দীর্ঘক্ষণ ওই অবস্থায় পড়ে থেকে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন মাত্র বছর ২৪ এর শুভঙ্কর মাপারু। সমাজের অমানবিক আচরণের ফলে মাত্র দু’বছর বয়সেই পিতৃহীন হল ওই যুবকের ছেলে।
আরও পড়ুন: বাড়ি ফেরার সময় গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল দুই শিশুর
মঙ্গলবার সকালে এমনই অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক। তমলুকের পদুমবসান এলাকায় হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের উপর এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শুভঙ্কর মাপারু একটি জল কোম্পানির গাড়িচালক ছিলেন। প্রতিদিন সকালে তিনি বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে কাজে যোগ দিতে যেতেন। এদিনও তাই করেছিলেন। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাইক নিয়ে নিমতৌড়ির কুলবেড়িয়া গ্রামের বাড়ি থেকে বের হোন শুভঙ্কর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পদুমবসানের কাছে কোনও গাড়ি ওই যুবকের বাইককে ধাক্কা মারে। তিনি ছিটকে রাস্তার পাশে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা একটি বোলের উপর গিয়ে আছড়ে পড়েন।
স্থানীয়রাই জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরও দীর্ঘক্ষণ বেঁচে ছিলেন ওই যুবক। কিন্তু পথচারীরা দেখলেও কেউ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনি। হয়রানি এড়াতে সকলেই পাশ কাটিয়ে চলে যান। দীর্ঘক্ষণ ওই অবস্থায় পড়ে থাকার পর মৃত্যু হয় শুভঙ্কর মাপারুর। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁর দেহ তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য। খবর দেওয়া হয় ওই যুবকের বাড়িতে।
মৃত শুভঙ্করের বাড়িতে মা-বাবা, স্ত্রী ও দুই বছরের এক পুত্র সন্তান আছে। তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। কিন্তু সমাজের অমানবিক আচরণের ফলে শুভঙ্করকে হারিয়ে কার্যতা ভেসে যাওয়ার মুখে গোটা পরিবার। খবর পেয়ে তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজে ছুটে আসেন ওই যুবকের পরিজনেরা। এই দুর্ঘটনা আবারও সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমরা দিনে দিনে কতটা অসামাজিক হয়ে উঠছি!
সৈকত শী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Inhuman behaviour, Tamluk