East Burdwan News: বর্ধমানের কুলীনগ্রাম থেকেই রথের দড়ি পৌঁছে যেত পুরীতে 

Last Updated:

East Burdwan News: পুরীর জগন্নাথদেবের রথ যাত্রার সঙ্গে আজও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কুলীন গ্রামের নাম। এই গ্রাম থেকেই রথের দড়ি যেত পুরীতে 

ফাইল চিত্র 
ফাইল চিত্র 
#পূর্ব বর্ধমান: পুরীর জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার সঙ্গে আজও জড়িয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের এক গাঁয়ের নাম। এখানেই এক সময় এসেছিলেন মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যদেব। প্রতিবার রথযাত্রা এলেই বারে বারে স্মৃতির পাতা থেকে যেন উঁকি দেয় পূর্ব বর্ধমানের কুলীন গ্রামের নাম। এখানকার রথযাত্রা উৎসব ৫০০ বছরেও অধিক সময়ের প্রাচীন। চৈতন্যদেবের আদেশ মেনে পুরীর জগন্নাথের রথের জন্য এই কুলীনগ্রাম থেকেই পাঠানো হত রেশমের পাটের দড়ি। রথের অনেক আগেই পাটের দড়ি কুলীনগ্রাম থেকে পৌছে দেওয়া হত পুরীতে। সেই প্রথা এখন থমকে গেলেও কুলীন গ্রামের রথ আর পুরীর রথ মাহাত্ম্য গুনে একই বলেই আজও বিশ্বাস করেন ভক্তরা।
কথিত আছে, কুলীন গ্রামের বসু পরিবারই কুলীনগ্রামে রথ যাত্রা উৎসবের সূচনা করেছিলেন। পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কুলীন গ্রামে জন্মগ্রহন করেছিলেন বাংলা সাহিত্যের অমূল্য গ্রন্থ 'শ্রীকৃষ্ণবিজয়' কাব্যের রচয়িতা মালাধর বসু। এই মালাধর বসুর পৌত্র লক্ষ্মীকান্ত বসু সত্যরাজ খান নামে ভূষিত হয়েছিলেন । তিনি শ্রীচৈতন্য দেবের অন্যতম ভক্ত ও পার্শ্বদ ছিলেন। পুরীর জগন্নাথ দেবের রথের জন্য কুলীনগ্রাম থেকে পট্টডোরী পাঠানোর আদেশ সত্যরাজ খানকে করেছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। ভক্ত সত্যরাজ খান সেই আদেশ মাথাপেতে পালন করেছিলেন।
advertisement
জানা গিয়েছে, আগে প্রতি বছর রথের নির্দিষ্ট দিনের অনেকটা আগেই এখানকার বসুপরিবার থেকে পুরীতে পট্টডোরী পৌঁছে দেওয়া হত। সেই প্রথা মেনে বেশ কয়েকশো বছর যাবৎ রথের অনেক আগেই কুলীনগ্রাম থেকে পট্টডোরী পৌছে দেওয়া হত পুরীতে। মাঝে কয়েকটা বছর পট্টডোরী খামে ভরে ডাকযোগে পুরীতে পাঠানো হচ্ছিল। বছর পাঁচ-দশ হল সেই প্রথা বন্ধ হয়েছে। তবুও রথের দিন গোটা দেশের ভক্তদের ভিড়ে জমজমাট থাকে ইতিহাস প্রসিদ্ধ কুলীন গ্রামের রথযাত্রা উৎসব প্রাঙ্গন।
advertisement
advertisement
বৈষ্ণবতীর্থ কুলীনগ্রামটি জামালপুর খানার আবুজহাটী দুই পঞ্চায়েত এলাকায় অবস্থিত। এই গ্রামের মধ্যস্থলে রয়েছে জগন্নাথ দেবের মন্দির। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে আজও নিমকাঠের তৈরি জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার এই বিগ্রহের পুজোপাঠ হয়ে আসছে। রথ যাত্রা উৎসবের আগে এই বিগ্রহ নতুন রঙে সাজানো হয়। যে সুসজ্জিত রথে এই তিন দেবতাকে এখন বসানো হয় সেটি সূচনার সময়কার রথ না হলেও রথটি বহুদিনের পুরানো। রথটি প্রায় ৩০ ফুট উচ্চ এবং প্রায় ১৬-১৭ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট রথটি শাল, সেগুন ও নিম কাঠ দিয়ে তৈরি।আনুমানিক ৫০০ বছররেও বেশী সময় আগে মালাধর বসুর পৌত্র লক্ষ্মীকান্ত বসু কুলীনগ্রামে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার বহুকাল পরে কুলীনগ্রামে শুরু হয়েছিল রথযাত্রা উৎসব পালন। এমনটা হওয়ার কারন কি ছিল তা অবশ্য কুলীন গ্রামের এখনকার রথযাত্রার উৎসব আয়োজকদের কেউই জানাতে পারেননি।
advertisement
পুজারী শচীনন্দন মুখোপাধ্যায় জানান, সাবেকি রীতি রেওয়াজ মেনে কুলীনগ্রামের জগন্নাথ মন্দিরে হচ্ছে বিশেষ পুজোপাঠ। এখানকার পুজোয় অন্যান্য ফল যাই থাক কাঁঠাল চাই। এছাড়াও জগন্নাথদেবের জন্য খিচুড়ি ভোগ, বলরাম দেবের জন্য অন্নভোগ ও সুভদ্রাদেবীর জন্য পায়েস ভোগ রান্না করা হয়। সবকিছুই দেবতাকে নিবেদন করে পুজোপাঠ শুরু হয়। পুজোপাঠ শেষে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ মন্দির থেকে বাইরে বার করা হয়। প্রথম রথের চার পাশে বিগ্রহগুলি সাতবার ঘোরানো হয়। এর পর রথের সবথেকে উঁচু ধাপে বসানো হয় বিগ্রহ গুলিকে। পুজোপাঠ হয়। তার পর রথে ওঠেন প্রধান পুজারি। রথ টানার জন্য দুটি দড়ি রথে বাঁধা হয়। রথের দিন বিকালে রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হয় কুলীন গ্রামের রথ তলায়। এই গ্রামের রঘুনাথ জিউ এর মন্দির জগন্নাথ দেবেরমাসির বাড়ি বলে পরিচিত। প্রধান পুরোহিত এবং সহযোগী পুরোহীত গণ রথ থেকে তিন দেবতার বিগ্রহ নামিয়ে রঘুনাথ জিউয়ের মন্দিরে রেখে আসেন।উল্টোরথেরদিন ঠিক একই ভাবে তিন দেবতার বিগ্রহ ফের জগন্নাথ মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়।
advertisement
অতিমারীর প্রভাব কাটতে না কাটতেই শুক্রবার সারা দেশজুড়ে প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হচ্ছে রথ যাত্রা উৎসব। সেই উপলক্ষে শ্রীচৈতন্যদেবের পদধূলী ধন্য কুলীনগ্রামও আগের মতো নতুন সাজে সেজে উঠেছে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা কুলীনগ্রামে জড়ো হয়েছেন। বসেছে বিশাল মেলা।
Malobika Biswas
বাংলা খবর/ খবর/পূর্ব বর্ধমান/
East Burdwan News: বর্ধমানের কুলীনগ্রাম থেকেই রথের দড়ি পৌঁছে যেত পুরীতে 
Next Article
advertisement
Durga Puja Weather Update: নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়
নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কতটা হতে পারে
  • নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন !

  • তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস?

  • বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়

VIEW MORE
advertisement
advertisement