Snake friend Russian woman in India: সাপেদের পরম বন্ধু, লাগেনি ভয়ও! ৮ বছর ধরে ভারতের গুহায় লুকিয়ে বসবাস রাশিয়ান মহিলার, জানুন তাঁর কাহিনি...
- Published by:Sounak Chakraborty
- news18 bangla
Last Updated:
Snake friend Russian woman in India: রাশিয়ার নিনা কুটিনা গত ৮ বছর ধরে কর্ণাটকের গোকর্ণে একটি গুহায় দুই কন্যাসন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন। জঙ্গলের প্রেমে পড়ে তিনি দেশে ফেরেননি। পুলিশ যখন তাঁদের উদ্ধার করে, তখন তাদের গল্প শুনে চমকে যায় গোটা প্রশাসন, জানুন বিস্তারিত...
কানাড়া: কর্ণাটকের উত্তর কানাড়া জেলার গোকর্ণ অঞ্চলের রামতীর্থ পাহাড়ে এক গুহা থেকে উদ্ধার হলেন এক রাশিয়ান নারী এবং তাঁর দুই কন্যা সন্তান। তাঁদের জীবনযাত্রা শুনে অবাক পুলিশও মাথা চুলকোতে বাধ্য হয়। ওই মহিলার নাম নিনা কুটিনা। তাঁর দাবি, তিনি গত আট বছর ধরে গোকর্ণের গভীর জঙ্গলে, একটি দুর্গম গুহায় বাস করছেন এবং সেখানে সাপদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।
শুক্রবার সকালে রামতীর্থ পাহাড়ে নিয়মিত টহলের সময় সাব-ইন্সপেক্টর শ্রীধর এসআর এবং তাঁর দল গুহার দিকে যাওয়ার পায়ের ছাপ লক্ষ্য করেন। তারা সেগুলো অনুসরণ করে পৌঁছে যান এক গুহার কাছে, যার প্রবেশপথে প্লাস্টিক কভার এবং দেবদেবীর ছবি টাঙানো ছিল। ভেতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, এক রাশিয়ান নারী তাঁর দুই কন্যা সন্তান নিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন।
advertisement
advertisement
গুহার ভেতরে কাটানো ৮ বছরের জীবন নিনা জানিয়েছেন, তিনি ২০১৬ সালে একটি বিজনেস ভিসায় ভারতে এসেছিলেন এবং গোকর্ণ ও গোয়ার রেস্তোরাঁ ও পর্যটন ক্ষেত্রে কাজ শুরু করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তবুও তিনি ভারত ছাড়েননি। বরং গোকর্ণের গভীর জঙ্গলে আশ্রয় নেন।
advertisement
২০১৮ সালে একবার নেপালে যান এক্সিট পারমিট নিয়ে, তবে ফের ভারতে ফিরে আসেন এবং কর্ণাটকের উপকূলীয় এলাকায় লুকিয়ে থাকতে শুরু করেন। শ্রীধর জানান, “নিনা ধ্যান ও প্রার্থনা ভালোবাসেন, হোটেলে থাকলে পরিচয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয় ছিল বলেই তিনি জঙ্গলকে বেছে নেন।”
advertisement
নিনার দাবি, গুহার কাছে থাকা ঝরনায় তাঁরা প্রতিদিন স্নান করতেন। সেই সময় আশেপাশে সাপ ঘোরাফেরা করলেও, কখনও তাদের আক্রমণ করেনি। বরং তাঁর মতে, “সাপেরা আমাদের বন্ধু হয়ে গেছে, কখনও ক্ষতি করেনি।”
নিনা জানিয়েছেন, তাঁর দুই কন্যা সন্তানের জন্ম ভারতে হলেও, তিনি তাঁদের বাবার বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি। পুলিশ এখনও খতিয়ে দেখছে যে প্রসবের সময় কোনও চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছিলেন কিনা। গুহার ভেতর নিনা পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী জমা রেখেছিলেন। বর্ষার সময় তিনি ও তাঁর কন্যারা খুবই সীমিত পোশাক পরতেন এবং মোমবাতির আলো কিংবা প্রাকৃতিক আলোতেই থাকতেন।
advertisement
নিনা মাঝে মাঝে শহরে গিয়ে খাবার ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেন এবং তখনই মোবাইল চার্জ দিতেন। গুহার জীবনকেই তিনি ও তাঁর কন্যারা বেছে নিয়েছিলেন। মেয়েরা কখনও আলো বা বিছানা দেখেনি, তাই যখন তাঁদের এক আশ্রমে রাখা হয়, তখন তাঁরা বিদ্যুতের আলো ও নরম বিছানা দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায়।
পুলিশের তরফে সাব-ইন্সপেক্টর শ্রীধর বলেন, “১৮ বছরের সার্ভিস জীবনে এমন মা ও সন্তানদের গুহায় বসবাস করতে দেখিনি। তবুও তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও মানসিকভাবে স্থিতিশীল।” পুলিশ গুহার পাশে পাওয়া নিনার পুরনো পাসপোর্ট এবং অন্যান্য নথি ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস (FRRO)-এ পাঠিয়েছে।
advertisement
শনিবার রাতে নিনা ও তাঁর দুই কন্যাকে করওয়ারের মহিলা রিসেপশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন সকালে শ্রীধরকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে রুশ ভাষায় নিনা লেখেন – “আমাদের গুহার জীবন শেষ। আমাদের আরামদায়ক ঘর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমাদের এমন এক কারাগারে রাখা হয়েছে, যেখানে নেই আকাশ, নেই ঘাস, নেই ঝরনা। আমাদের কঠোর মেঝেতে ঘুমোতে হচ্ছে, আর বলা হচ্ছে – এটা তোমাদের নিরাপত্তার জন্য।”
advertisement
নিনা তাঁর সন্তানদের নিয়মিত ড্রইং, গান, মন্ত্রজপ, যোগাসন এবং শরীরচর্চা শেখাতেন। তাঁদের ফোনে মেয়েদের আনন্দঘন মুহূর্তের ছবি পাওয়া গেছে।
নিনা চান না যে তাঁকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হোক। তাঁর দাবি, “আমি ভারত, এর প্রকৃতি, এবং এই দেশের ধ্যান-ধ্যানকে ভালোবাসি। আমাকে এই দেশ থেকে আলাদা করা মানে আমার আত্মাকে ভেঙে ফেলা।”
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
July 14, 2025 4:56 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
Snake friend Russian woman in India: সাপেদের পরম বন্ধু, লাগেনি ভয়ও! ৮ বছর ধরে ভারতের গুহায় লুকিয়ে বসবাস রাশিয়ান মহিলার, জানুন তাঁর কাহিনি...