শুষ্ক এবং জলশূন্য স্থানেই দিব্যি জীবনধারণ ! কিন্তু সন্তানদের তেষ্টা মেটাতে অসম্ভবকেও সম্ভব করে তোলে বিরল প্রজাতির এই পাখিটি
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
Rare Indian Birds: কিন্তু এখানকার আসল বিশেষত্ব হল, এই জায়গা জুড়ে থাকা পাখিদের জগৎ। তবে বিশেষ ভাবে বলতে গেলে উল্লেখ করতেই হবে বিরল স্যান্ড গ্রাউজ পাখির কথা।
অনুজ গোতাম, সাগর: সুবিস্তৃত বিন্ধ্য পর্বতমালার কোলেই অবস্থিত নওরাদেহি টাইগার রিজার্ভ। সেখানে রয়েছে বিরল প্রজাতির প্রাণীদের বাস। শুধু তা-ই নয়, বাঘ, লেপার্ড, নেকড়ে, নীলগাই এবং চিতলের মতো দুর্ধর্ষ প্রজাতির বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল হয়ে উঠেছে এটি। বলা ভাল, এই টাইগার রিজার্ভের প্রত্যেকটি কোণায় যেন জীববৈচিত্র্য ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু এখানকার আসল বিশেষত্ব হল, এই জায়গা জুড়ে থাকা পাখিদের জগৎ। তবে বিশেষ ভাবে বলতে গেলে উল্লেখ করতেই হবে বিরল স্যান্ড গ্রাউজ (Sandgrouse) পাখির কথা। আসলে এই পাখিটি নিজের সন্তানদের তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এক অনন্য পন্থা অবলম্বন করে থাকে।
জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই টাইগার রিজার্ভে রয়েছে ৯২ রকম প্রজাতির গাছ এবং ৪৯ রকম প্রজাতির গুল্মজাতীয় গাছ ও ভেষজ। শুধু কি তা-ই, রয়েছে ১৮ রকম প্রজাতির লতানো উদ্ভিদ এবং ৩৫ রকম প্রজাতির ঘাসও। আর সব মিলিয়ে এমন এক আবাসস্থল তৈরি হয়েছে, যা বন্যপ্রাণীদের জন্য একেবারে আদর্শ। সুরক্ষিত এলাকার ঘেরাটোপে বসবাস করছে ২৩০ রকমেরও বেশি প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে অন্যতম হল – রাজহাঁস, বক, সারস, বাজপাখি, শকুন, তিতির এবং কোয়েল, পায়রা, টিয়াপাখি, কোকিল, প্যাঁচা, ফ্লাইক্যাচার এবং ময়নার মতো পাখি।
advertisement
advertisement
এই পাখিটি প্রায় দুর্লভই বলা চলে! সমস্ত পাখির মধ্যে এমন একটি পাখি রয়েছে। যা বিরলতার দৃষ্টান্ত। আর এই পাখিটির নাম স্যান্ড গ্রাউজ। মূলত শুষ্ক এবং উষ্ণ অঞ্চলে, যেখানে জলের ঘাটতিই জীবনের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়, সেখানেই এই পাখির দেখা মেলে। আর সবথেকে বড় কথা হল, স্যান্ড গ্রাউজ পাখির জীবন কিন্তু লড়াইয়ের থেকে কিছু কম নয়। খাবারের জন্য বিরল প্রজাতির এই পাখিকে নির্ভর করতে হয় বীজ, শস্য এবং ঘাসের দানার উপর। কিন্তু নিজের শাবককে লালন করতে এরা অসম্ভবকেও সম্ভব করে থাকে।
advertisement
জলের জন্য অনন্য কায়দা: আসলে জলের চাহিদা মেটানোর জন্য এই পাখিগুলি ৩০-৪০ মাইল দূরে থাকা জলের কোনও উৎসের দিকে পাড়ি দেয়। সেখানে পৌঁছে তারা জলের মধ্যে বারংবার নিজেদের দেহকে সিক্ত করে। যার ফলে তাদের পালক স্পঞ্জের মতো জল শোষণ করে। পর্যাপ্ত জল আহরণ করা হয়ে গেলে তারা বাসায় ফিরে আসে। এরপর নিজেদের গায়ের পালক থেকে বাসায় অপেক্ষায় থাকা শাবকদের জল পান করায়। আর গা ঝাড়া দিয়ে বাকি জলটুকু সন্তানদের দেহে ছিটিয়ে দেয় তারা। এতে বাচ্চাদের শরীরও ঠান্ডা থাকে। আর অনন্য এই কৌশলের কারণেই তারা বিরল পাখিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। কারণ এহেন শুষ্ক অঞ্চলে সন্তানদের লালন করা কিন্তু সহজ কাজ নয়।
advertisement
স্যান্ড গ্রাউজের দুই প্রজাতিরই বাস: নওরাদেহি টাইগার রিজার্ভের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. এএ আনসারি বলেন যে, “এই এলাকাটি খুবই শুষ্ক। আর স্থানীয় পাখিরা এখানকার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়েই বসবাস করে। স্যান্ড গ্রাউজ পাখি তার ডানার নীচের অংশে জল শোষণ করে। তারপর সেই জল বাসায় এনে শাবকদের পান করায়। আর এভাবেই সন্তানদের তৃষ্ণা মিটিয়ে তাদের দেহ ঠান্ডাও রাখে। এই টাইগার রিজার্ভে অবশ্য দুই ধরনের প্রজাতির স্যান্ড গ্রাউজ এবং পেন্টেড স্যান্ড গ্রাউজই দেখা যায়। এরা সাধারণত বীজ, শস্য এবং খড় খেয়ে জীবনযাপন করে।” ড. এএ আনসারি আরও বলেন যে, মূলত বড় এবং খোলা মাঠেই এই পাখির দেখা মেলে। কিন্তু এই প্রজাতির পাখি আজ বিলুপ্তির মুখে। কারণ তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল ক্রমাগত ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 02, 2025 12:46 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
শুষ্ক এবং জলশূন্য স্থানেই দিব্যি জীবনধারণ ! কিন্তু সন্তানদের তেষ্টা মেটাতে অসম্ভবকেও সম্ভব করে তোলে বিরল প্রজাতির এই পাখিটি