সবজি বই আর কিছুই নয়, আদতে নিরামিষ হওয়া সত্ত্বেও উপাসনা-উপবাসে রসুন ও পেঁয়াজ কেন নিষিদ্ধ? জেনে নিন কারণটা
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Why Are Garlic And Onion Banned During Worship And Fasting: পুরোহিত শুভম তিওয়ারি লোকাল18-কে ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে যদিও পেঁয়াজ এবং রসুন স্বাস্থ্যকর খাবার, হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলি এদের তামসিক এবং কখনও কখনও রাজসিক খাদ্য রূপে শ্রেণীবদ্ধ করেছে।
ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে খাদ্য কেবল পেট ভরানোর বিষয় নয়; এটি শরীর, মন এবং আত্মার উপরে প্রভাব ফেলে বলে বিশ্বাস করা হয়। হিন্দু ধর্ম খাদ্যকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে: সাত্ত্বিক, রাজসিক এবং তামসিক। সাত্ত্বিক খাদ্যকে বিশুদ্ধ, শান্ত দ্রব্য এবং মানসিক নিয়ন্ত্রণের সহায়ক বলে মনে করা হয়। রাজসিক খাদ্য উত্তেজনা এবং আকাঙ্ক্ষাকে উদ্দীপিত করে, অন্য দিকে, তামসিক খাদ্য অলসতা, ক্রোধ এবং নেতিবাচক প্রবণতাকে উৎসাহিত করে। এই কারণেই পূজা, উপবাস এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সময় সাত্ত্বিক খাদ্য গ্রহণ করা হয়।
advertisement
উপবাসের সময় পেঁয়াজ এবং রসুন কেন এড়িয়ে চলা উচিত? নিরামিষ হওয়া সত্ত্বেও ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং উপবাসের সময় পেঁয়াজ এবং রসুন গ্রহণ করা হয় না। পুরোহিত শুভম তিওয়ারি লোকাল18-কে ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে যদিও পেঁয়াজ এবং রসুন স্বাস্থ্যকর খাবার, হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলি এদের তামসিক এবং কখনও কখনও রাজসিক খাদ্য রূপে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। (Representative Image)
advertisement
এই খাবারগুলি আসলে শরীরের শক্তিকে নীচের দিকে টেনে আনে, মনের অস্থিরতা এবং কামনা বৃদ্ধি করে, ধ্যানের সময় একাগ্রতা ব্যাহত করে বলে বিশ্বাস করা হয়। যেহেতু উপবাস এবং উপাসনার লক্ষ্য মনকে পবিত্র করা এবং ঈশ্বরের কাছাকাছি নিয়ে আসা, তাই তামসিক খাবার গ্রহণের ফলে মন পার্থিব আকাঙ্ক্ষার দিকে বিচ্যুত হতে পারে, যা আধ্যাত্মিক অনুশীলনের উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে। (Representative Image)
advertisement
পেঁয়াজ এবং রসুনের পৌরাণিক উৎপত্তি: পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময়ে মোহিনী রূপে ভগবান বিষ্ণু অমৃত বিতরণ করছিলেন। এক অসুর ছলনা করে দেবতাদের মধ্যে বসে অমৃত পান করেছিল। যখন সূর্যদেব এবং চন্দ্রদেব চিনে ফেলে অভিযোগ করেন, তখন ভগবান বিষ্ণু তাঁর সুদর্শন চক্র দিয়ে অসুরের মাথা কেটে ফেলেন, এর ফলে রাহু ও কেতুর সৃষ্টি হয়। কথিত আছে যে, পেঁয়াজ এবং রসুনের উৎপত্তি হয়েছিল অসুরের শরীর থেকে পড়া রক্তের ফোঁটা থেকে, যে কারণে এই খাবারগুলিকে তামসিক এবং অপবিত্র বলে মনে করা হয়, এই জন্যই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে তা নিষিদ্ধ। (Representative Image)
advertisement
আয়ুর্বেদিক দৃষ্টিকোণ এবং সাধুদের অনুশীলন: আয়ুর্বেদ পেঁয়াজ এবং রসুনকে তীক্ষ্ণ, উষ্ণ এবং উদ্দীপক দ্রব্য হিসেবে দেখে। বিশ্বাস করা হয় যে এগুলি ইন্দ্রিয়গুলিকে উত্তেজিত করে এবং ক্রোধ, অলসতা এবং কাম বৃদ্ধি করে। তাই, যোগী এবং সাধুরা এগুলি এড়িয়ে চলেন, তাঁদের আধ্যাত্মিক অনুশীলনগুলি নির্বিঘ্নে বজায় রাখার জন্য সাত্ত্বিক খাদ্য বেছে নেন। (Representative Image)
advertisement
সাত্ত্বিক খাদ্যের মাহাত্ম্য: আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং মানসিক শুদ্ধিকরণের ক্ষেত্রে উপবাসের গুরুত্ব অপরিসীম। শাস্ত্র অনুসারে উপবাসের সময় ফল, দুধ, দই, শাকসবজি এবং শস্যের মতো সাত্ত্বিক খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই জাতীয় খাবার শরীরকে হালকা এবং মনকে স্থিতিশীল রাখে, আধ্যাত্মিক বিকাশে সহায়তা করে। (Representative Image)
advertisement