কুড়ি বছর ধরে ছিল না কোনও খোঁজ, আশা ছেড়ে দিয়েছিল পরিবারও; অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতেই উৎসবে মেতে উঠল গোটা গ্রাম
- Published by:Siddhartha Sarkar
- local18
Last Updated:
ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে, এই আশায় থানা-পুলিশ থেকে ধর্মস্থান কিছুই বাদ রাখেননি পরিবারের সদস্যরা। গ্রামবাসীরাও এই ঘটনায় তাজ্জব হয়েছিলেন। তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি।
Report: Aarya Jha
মধুবনী: সেই ২০০৪ সালে রোজগারের আশায় ঘর ছেড়েছিলেন। তারপর আচমকাই যেন উবে গিয়েছিলেন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরবে, এই আশায় থানা-পুলিশ থেকে ধর্মস্থান কিছুই বাদ রাখেননি পরিবারের সদস্যরা। গ্রামবাসীরাও এই ঘটনায় তাজ্জব হয়েছিলেন। তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। কোনও খোঁজই মেলেনি ছেলের। তবে আচমকাই বছর কুড়ি বাদে ঘরে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া সেই ছেলে। হাতে যেন চাঁদ পেলেন পরিবারের সদস্যরাও! এ যেন কোনও ফিল্মি দৃশ্যের থেকে কম কিছু নয়।
advertisement
advertisement
বিহারের মধুবনী থেকে বাবুবরহী, তারপর খুতৌনা এবং সিদ্ধাপা নামে ছোট্ট একটি গ্রাম হয়ে জীবচ মণ্ডল পৌঁছেছেন নিজের গ্রামে। কিন্তু ২০ বছর ধরে কোথায় ছিলেন তিনি? আর এত দিন কী-ই বা করতেন তিনি? সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেন জীবচ। তাঁর বক্তব্য, শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। জীবচের কথায়, “২০০৪ সালে যখন ঘর ছেড়েছিলাম, তখন আমার বয়স মাত্র ১৫ বছর। বাড়িতে অভাবের কারণে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করা যায়নি। এই সঙ্কট কাটাতে প্রথম অমৃতসর গিয়ে পৌঁছই। আসলে আমি শুনেছিলাম – ওটা খুবই ভাল জায়গা। কিন্তু কাজ খোঁজার পরেও কাজ পাইনি। এরপর চণ্ডীগড়ে পৌঁছই। সেখানে এক দোলনার মালিকের সঙ্গে আলাপ হয়। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতাম। তবে টাকা নয়, বরং শুধু খাবার পেতাম। এই সময় একবার আমার হাত ভেঙে যায়। আর মালিক চিকিৎসা করিয়ে দিয়েছিলেন।”
advertisement
তবে জীবচের দাবি, তিনি বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও টাকার অভাবে তা করতে পারেননি। আর যেহেতু টাকা রোজগারের আশায় বাড়ি ছেড়েছিলেন, তাই সেটা ছাড়া বাড়ি যাওয়ায় ঠিক বলে মনে হয়নি তাঁর। তাই পঞ্জাবে কাজ সফল না হওয়ায় হিমাচলে পৌঁছে যান তিনি। সেখানেই হোটেলে কাজ পান। জীবচের কথায়, “সেটা লকডাউনের সময়কার কথা। সকলে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। অথচ আমার কাছে কোনও নথি না থাকায় ইচ্ছা থাকলেও বাড়ি ফেরা হয়নি।”
advertisement
ছেলে ঘরে ফেরায় মায়ের আনন্দ বাঁধভাঙা! ছেলেকে কাছছাড়া করতে চাইছেন না। বিয়ে দিয়ে তবেই ছেলেকে ভিন রাজ্যে পাঠাবেন। আর তাঁর প্রার্থনায় সাড়া দিয়েছেন বলে মাতা রানির উদ্দেশ্যে তিনি সোনার নাকছাবি নিবেদন করবেন বলেও জানান জীবচের মা। পরিবারের পাশাপাশি খুশি গ্রামবাসীরাও।
এদিকে ওই গ্রামে রয়েছে বাল্যবিবাহের চল। ফলে ছোটবেলাতেই জীবচের বিয়ের সম্বন্ধ পাকা করা ছিল গ্রামেরই একটি মেয়ের সঙ্গে। কিন্তু জীবচের সন্ধান না মেলায় ওই মেয়েটির পরিবার সেই সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছে। তবে সেই সময় বদলে গিয়েছে। গত সপ্তাহে হিমাচলের বন্ধু সতপালের সঙ্গে বাড়ি ফিরে সবটা শুনেছেন জীবচ। বর্তমানে তাঁর বয়স ৩৫ বছর। তিনি জানান, সমস্ত কিছু বদলে গিয়েছে। আপাতত বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জীবচ। তারপরে আবার ফিরে যাবেন হিমাচলে।
view commentsLocation :
Madhubani,Bihar
First Published :
August 11, 2024 8:44 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
কুড়ি বছর ধরে ছিল না কোনও খোঁজ, আশা ছেড়ে দিয়েছিল পরিবারও; অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতেই উৎসবে মেতে উঠল গোটা গ্রাম