কেন চাঁদ-সূর্যকে খেতে আসে রাহু, কেতু ? জানুন পুরাণের গল্প

Last Updated:

কেন হয় সূর্যগ্রহণ আর চন্দ্রগ্রহণ ? বিজ্ঞানের জ্ঞান পাশে একটু সরিয়ে রাখলে আরও একটা মত পাই আমরা ৷ সেটা হল পুরাণের মত ৷ পুরাণ মতে রাহু আর কেতু নামে দুই দানব সূর্য আর চন্দ্রকে গিলে ফেললেই নাকি সূর্যগ্রহণ আর চন্দ্রগ্রহণ হয় ৷

#কলকাতা: কেন হয় সূর্যগ্রহণ আর চন্দ্রগ্রহণ ? বিজ্ঞানের জ্ঞান পাশে একটু সরিয়ে রাখলে আরও একটা মত পাই আমরা ৷ সেটা হল পুরাণের মত ৷ পুরাণ মতে রাহু আর কেতু নামে দুই দানব সূর্য আর চন্দ্রকে গিলে ফেললেই নাকি সূর্যগ্রহণ আর চন্দ্রগ্রহণ হয় ৷ কিন্তু কেন সূর্য-চন্দ্রের উপর তাঁদের এত রাগ ৷ জেনে নিন সেই পুরাণের গল্প---
দেবতাদের স্বর্গরাজ্যে এসে প্রায়ই বিরক্ত করত অসুরের দল ৷ দানবের দৌরাত্ম্যে স্বর্গ থেকে বিতারিত হতে হয়েছিল দেবতাদের ৷ সেই সময়ই নারায়ণের স্তব শুরু করেন দেবতারা ৷ স্তবে সন্তুষ্ট হয়ে নারায়ণ ব্রহ্মাকে বলেন, সমুদ্র মন্থন করে উঠে আসবে অমৃত ভাণ্ড ৷ সেই অমৃত পান করলে দেবতারা চির আমরত্ব পাবেন ৷ স্বর্গরাজ্যও পুনরুদ্ধার করতে পারবেন ৷ কিন্তু সমুদ্র মন্থন তো কথার কথা নয় ৷ এই কাজে অসুরদেরও নিয়োগ করতে হবে ৷ কারণ একা দেবতাদের অত শক্তি নেই ৷ তখন নারায়ণ বললেন, মন্থনে অসুরদেরও কাজে লাগাতে হবে ৷ তবে অমৃত উঠে আসার পর তার সবটুকু যাতে দেবতারা পান সে ব্যবস্থা তিনিই করবেন ৷ নারায়ণের থেকে মন্ত্রণা পেয়ে কাজ শুরু হল ৷
advertisement
advertisement
Lunar Eclips1
ঠিক হল মন্থন হবে মন্দার পর্বত দিয়ে ৷ কিন্তু সেই পর্বতকে সমুদ্রে আনা হবে কী করে ? শেষ পর্যন্ত বিষ্ণুর পরামর্শে নাগরাজ বাসুকী সেই পর্বত এনে সমুদ্রে ফেললেন ৷ এই বাসুকী নাগকেই করা হল দড়ি ৷ এরপর দেবতারা ধরল বাসুকী লেজ আর অসুররা ধরল ফণা ৷ শুরু হল সমুদ্র মন্থন ৷ মন্থনের ফলে ধীরে ধীরে সমুদ্র থেকে উঠে আসতে শুরু করল নানা জিনিস ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সমুদ্র থেকে বেরিয়ে এল চন্দ্রমা ৷ তারপর এ ঐরাবত ৷ এল উচ্চৈশ্রবা কালো রঙের ঘোড়া ৷ তারপর এল পারিজাত পুষ্প ৷ শেষে এলেন ধণ্বন্তরী ৷ সঙ্গে অমৃত ভাণ্ড ৷ এদিকে সমুদ্ররাজ বরুন দেবতা এসে নালিশ করে বললেন যে সমস্ত জলপুরী তোলপাড় করে যে মন্থন হচ্ছে তাতে আমার সব কিছু ধংস হয়ে যাচ্ছে। তখন বিষ্ণু বললেন, দুর্বাসার শাপে লক্ষ্মী দেবী তোমার কাছে ছিলেন। এখন যদি লক্ষ্মী দেবীকে নারায়নের কাছে ফেরৎ পাঠাও তবে তিনি মন্থন বন্ধ করে দেবেন। এই শুনে সমুদ্ররাজ বরুন তাড়াতাড়ি লক্ষ্মী দেবীকে চতুর্দোলায় চড়িয়ে সমুদ্রে থেকে বের করে দিলেন। নারায়ণ লক্ষ্মী দেবীকে পেয়ে গিয়েছেন, অমৃত নিয়ে ধণ্বন্তরিও এসে গিয়েছেন, অতএব নারায়ণ মন্থন বন্ধ করার আজ্ঞা দিলেন। মন্থন বন্ধ হল।
advertisement
অ্যদিকে নারদের মুখ থেকে শিব খবর পেলেন দেবতারা সমুদ্র মন্থন করে অমৃত পেয়েছেন, অথচ তাঁকে কেউ কিচ্ছুটি জানায়নি ৷ রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ছুটে এলেন শিব ৷ নির্দেশ দিলেন আবার মন্থন শুরু করতে হবে ৷ শিবকে চটাতে কে চায় ? সুতরাং শুরু হল মন্থন ৷ কিন্তু এবার টানাটানির চোটে নাগরাজের মুখ দিয়ে বিষ বের হতে লাগল ৷ মন্দার পর্বতে দাবানল জ্বলে উঠল ৷ সব দেবতারা পালাতে শুরু করলেন ৷ এদিকে বিষে সমস্ত চরাচর বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে দেখে শিব এক চুমুকে সেই বিষ নিজের গলায় রাখলেন ৷ বিষের তীব্রতায় নীল বর্ণ ধারণ করল শিবের কণ্ঠ ৷ তারপর থেকে শিবকে নীলকণ্ঠ বলা হয় ৷Lunar Eclips2
advertisement
এবার শুরু হল অমৃত ভাগের পালা ৷ কথা মতো, দেবতাদের সমস্ত অমৃত দিতে অপরূপ সুন্দরী এক নারীর বেশ ধরে এলেন নারায়ণ ৷ সবাই তখন হাঁ করে সেই নারীকেই দেখতে মত্ত হয়ে গেল ৷ সুযোগ বুঝে গরুড় এসে অমৃতের কলসী নিয়ে পালালো ৷ পালানোর পথে চার ফোঁটা অমৃত পড়ে গেল পৃথিবীর বুকে ৷ সেই চার জায়গাতেই প্রতি বছর কুম্ভ মেলা হয় ৷ এ দিকে মোহিনীবেশী নারায়ণ গরুড়ের কাছ থেকে অমৃত নিয়ে বিলি করবার জন্য সবাইকে লাইন দিয়ে বসালেন। বলা হয়, অমৃত প্রথমে দেবতারা পাবেন ৷ সেই মতো অমৃতের ভাগ শুরু করা হল ৷ এদিকে রাগু-কেতু নামের দুই অসুর দেবতাদের বেশ ধরে লুকিয়ে ঢুকে পড়েছিল দেবতাদের দলে ৷ নারায়ণের চোখ এড়িয়ে গেলেও সূর্য-চন্দ্র সেটা দেখতে পায় ৷ সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণকে গিয়ে খবর দেন তাঁরা ৷ নারায়ণ তাঁদের গলা কেটে দেন ৷ কিন্তু অমৃত খাবার ফলে রাহুর মাথা ও কেতুর ধর অমর হয়ে আকাশে ঘুরতে থাকে ৷ আর সেই থেকেই সূর্য-চন্দ্রের উপর তাঁদের প্রচণ্ড রাগ ৷ যখনই সুযোগ পায় চাঁদ আর সূর্যকে গিলে নেয় তাঁরা ৷ তখনই হয় চন্দ্রগ্রহণ আর সূর্যগ্রহণ ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
কেন চাঁদ-সূর্যকে খেতে আসে রাহু, কেতু ? জানুন পুরাণের গল্প
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement