‘চল্লিশ হাজার ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়’, এহেন মন্তব্য ভাইরাল হতেই তৈরি হল তীব্র জনরোষ; ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন KIIT-র সেই অধ্যাপক

Last Updated:

KIIT Student Suicide: অশান্তির মাঝেই একটি ভিডিও-য় দেখা যাচ্ছে যে, ক্যাম্পাসে প্রতিবাদকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মী। যা আপাতত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।

‘চল্লিশ হাজার ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়’, এহেন মন্তব্য ভাইরাল হতেই তৈরি হল তীব্র জনরোষ (Screengrab)
‘চল্লিশ হাজার ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়’, এহেন মন্তব্য ভাইরাল হতেই তৈরি হল তীব্র জনরোষ (Screengrab)
ভুবনেশ্বর: সম্প্রতি ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (KIIT)-তে ঘটে গিয়েছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। এক সহপাঠীর সঙ্গে সম্পর্কের সমস্যার জেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন কেআইআইটি-তে পাঠরত এক নেপালি ছাত্রী। এর জেরে নেপালের ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন এবং অফলাইন প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচার চেয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর সদস্যরা। এমনকী, এই বিষয়টার জেরে এখন ভারত আর নেপাল – এই দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। অশান্তির মাঝেই একটি ভিডিও-য় দেখা যাচ্ছে যে, ক্যাম্পাসে প্রতিবাদকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মী। যা আপাতত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমানে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওয়-য় মঞ্জুষা পাণ্ডে নামে এক অধ্যাপককে দেখা গিয়েছে। আর ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রায় ৪০ হাজার পড়ুয়াকে খাওয়ান এবং পড়ান। আবার জয়ন্তী নাথ নামে আর এক কর্মী আরও বলেন, ছাত্রছাত্রীদের পিছনে যে টাকা খরচ করা হয়, তা নেপালের জাতীয় বাজেটের সমান। আসলে এঁদের বিদেশি-ভীতি সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে অশান্তির আগুনে যেন আরও ঘি ঢেলেছে।
advertisement
advertisement
আর প্রতিবাদ-আন্দোলনের জেরে কর্মীদের সাসপেন্ড করেছে কেআইআইটি। ছাত্রছাত্রীদের কাছে অফিসিয়াল ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ক্ষমা চেয়ে নিয়ে কর্মীরা জানিয়েছেন যে, এই মন্তব্য ঝোঁকের মাথায় করা হয়েছে। চিঠিতে ক্ষমা চেয়ে কেআইআইটি-র তরফে জানানো হয়েছে যে, “গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায় আমাদের ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কেউ কেউ যেভাবে আচরণ করেছেন, তাতে আমরা সত্যিই অনুতপ্ত। আমরা আমাদের ছাত্রদের ভালবাসি এবং কখনও তাঁদের প্রতি কোনও খারাপ আচরণ করিনি। আমাদের দু’জন কর্মকর্তার মন্তব্য অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ছিল। যদিও এই মুহূর্তে তাঁদের ব্যক্তিগত ক্ষমতা নিয়ে ঝোঁকের মাথায় যে মন্তব্য করা হয়েছে, আমরা তাঁদের কাজকে সমর্থন করি না।”
advertisement
বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, “আমরা তাঁদের কাজ থেকে সরিয়ে দিয়েছি। যা কিছু ঘটেছে, তার জন্য আমরা ক্ষমা চেয়েছি। আর এই ভাবে আমরা নেপালের মানুষের প্রতি নিজেদের স্নেহ এবং ভালবাসা জানাচ্ছি।”
advertisement
নেপালের ছাত্রছাত্রীদের আপাতত ক্লাস শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই বিবৃতিতে। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে যে, “ভারতের মানুষ তথা গোটা বিশ্বের মানুষকে যেভাবে তাঁরা ভালবাসেন, নেপালের মানুষকেও ঠিক সেভাবেই ভালবাসেন।” এদিকে নেপালের ছাত্রছাত্রী, ভাই এবং বোনেদের অনুভূতিকে আঘাত করার জন্য ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন অধ্যাপক মঞ্জুষা পাণ্ডে।
একটি ভিডিও বিবৃতিতে তিনি বলেন যে, “গত ১৬ তারিখ রাতে আমি ঝোঁকের মাথায় যে মন্তব্য করেছি, তার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে এই ভিডিওটি করছি। আমি জানাতে চাই, যে মন্তব্য আমি করেছি, তার দায় সম্পূর্ণ ভাবে আমার। এর সঙ্গে কেআইআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও যোগ নেই। আর আমার মন্তব্য যদি নেপালি পড়ুয়া এবং নেপালের বাসিন্দাদের অনুভূতিকে আঘাত করে, তাহলে আমি তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
advertisement
এদিকে গার্লস হোস্টেল অ্যান্ড স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্সের প্রাক্তন যুগ্ম ডিরেক্টর জয়ন্তী নাথও নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। একটি ভিডিও বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, “আমার সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে আমি একটা মুহূর্তের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আসলে সেই সময় ছাত্র আন্দোলন আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেড়ে গিয়েছিল। আমার উদ্দেশ্য কখনওই কাউকে আঘাত করা বা অবজ্ঞা করা ছিল না এবং আমার কথার কারণে কারও অনুভূতিতে অনিচ্ছাকৃত আঘাত লাগলে আমি গভীর ভাবে দুঃখিত। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, আমার মন্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় এমনকী কর্তৃপক্ষের মতামত প্রতিফলিত হয় না।”
advertisement
তিনি আরও যোগ করেন যে, “যা ঘটেছে, তার জন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। যদিও এটা বোঝানো গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, প্রতিবাদের সময় দেওয়া বিবৃতিগুলির সরাসরি প্রতিক্রিয়া ছিল আমার কথাগুলি। এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্যে আমার উত্তর সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে রক্ষা করার জন্য ছিল, কিন্তু তা নেপাল ও সেখানকার জনগণকে অপমান করার জন্য ছিল না।”
advertisement
এদিকে ইতিমধ্যেই ভুবনেশ্বর-কটক পুলিশ ২১ বছর বয়সী আদ্বিক শ্রীবাস্তবকে লখনউ থেকে গ্রেফতার করেছে। আসলে নেপালের বাসিন্দা ২০ বছর বয়সী প্রকৃতি লামসাল গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে আত্মঘাতী হয়েছেন। এরপরেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ১০৮ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায়য় পুলিশ কমিশনার সুরেশ দেব দত্ত সিং বলেন যে, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। আর কিছু প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি যে, কিছু হয়রানি হয়েছিল। যার জেরে ওই ছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন। সেই কারণে আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছি। আমরা তাকে পরীক্ষা-নিপীক্ষা করেছি। আজ তাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, আত্মঘাতী তরুণীর ব্যক্তিগত জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যা ফরেন্সিকের জন্য পাঠানো হয়েছে।”
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ফেসবুক পোস্টে বলেন, “সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্য থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, ভারতের ওড়িশার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কেআইআইটি)-র হোস্টেলে আত্মহত্যা করেছেন এক নেপালি ছাত্রী। আর নেপালি ছাত্রছাত্রীদের জোর করে হোস্টেল থেকে বার করে দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরও ঘোষণা করেছেন যে, নয়াদিল্লিতে নেপালের দূতাবাস থেকে দুই অফিসারকে পাঠানো হয়েছে, যাতে ওড়িশায় দুর্দশাগ্রস্ত নেপালি পড়ুয়াদের সাহায্য করা যায়। তিনি নিশ্চিত করে আরও বলেন যে, ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেলে থাকতে চান না কি বাড়ি ফিরতে চান, সেটা জেনে তাঁদের দেশে ফেরানো কিংবা হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থাও করা হবে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/পাঁচমিশালি/
‘চল্লিশ হাজার ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে খাওয়ানো হয়’, এহেন মন্তব্য ভাইরাল হতেই তৈরি হল তীব্র জনরোষ; ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন KIIT-র সেই অধ্যাপক
Next Article
advertisement
Maharashtra Doctor Death Update: কী চলত সরকারি হাসপাতালে, কেন নিজেকে শেষ করে দিলেন মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক? বিরাট কেলেঙ্কারি ফাঁস
কী চলত সরকারি হাসপাতালে,কেন নিজেকে শেষ করলেন মহারাষ্ট্রের তরুণী চিকিৎসক? কেলেঙ্কারি ফাঁস
  • মহারাষ্ট্রে তরুণী চিকিৎসকের আত্মহত্যার ঘটনায় এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল নির্যাতিতার পরিবার৷ মৃতার এক সম্পর্কিত ভাইয়ের অভিযোগ, ওই চিকিৎসককে ময়নাতদন্তের ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করতে বাধ্য করা হত৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement