#রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মী সুধীর সরকার নিজের বিভাগেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। রায়গঞ্জের উকিলপাড়ার বাসিন্দা সুধীর সরকার রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরিক্যাল বিভাগের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মী। সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তার ডিউটি চিঠি আসে।
নির্বাচনের ডিউটি চিঠি আসার পর থেকেই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সংগঠনের নেতা তপন নাগের কাছে ডিউটি থেকে অব্যাহতির জন্য বিভিন্নভাবে আবেদন করেছিলেন। জানা গিয়েছে, সংগঠনে তরফে নির্বাচনের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েহিল তাঁকে। কিন্তু তারপরেও তিনি কেন শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সেরিক্যালচার বিভাগের মধ্যেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এমনকি বিভাগের মধ্যে কীভাবে আত্মহত্যা করা সুযোগ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে সেরিক্যালচার বিভাগের প্রধান অমিত মন্ডল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয় বিকাল পাঁচ'টায়। এ দিন তিনি চুটির পরে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। অন্যান্যদিন সুধীরবাবু ছুটির পরে বেরিয়ে গেলেও, এ দিন বিভাগেই বসে ছিলেন। বাড়ি যাবেন কিনা প্রশ্নের জবাবে অসংলগ্ন উত্তর দেন। তবে তিনি যে এ ধরনের ঘটনার জন্য বিভাগে থেকে যাবেন, তা কেউই অনুমান করতে পারেনি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ সবাই বিভাগ বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। বিভাগের চাবিও যথাস্থানে রেখে দেওয়া হয়েছিল। এরপর সবাই বাড়ি চলে গেলে সুধীর সরকার আবার বিভাগে ফিরে এসে গোলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেনি কর্মী সংগঠনের নেতা তপন নাগ জানান, সুধীরবাবু একজন দুর্বল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কোন ঘটনা ঘটলেই একই কথা বারবার বলতেন। তবে জনপ্রিয় ছিলেন পড়ুয়াদের কাছে। তিনি আরও জানান, গত লোকসভা নির্বাচনেও সুধীর সরকারের ডিউটি এসেছিল। ডিউটি থেকে অব্যাহতির জন্য তাঁর কাছে একাধিকবার এসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে যেতেই হয়েছিল। ফলে এ বারেও ডিউটি থেকে অব্যহতি দেবার আশ্বাস দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। তাঁর সহকর্মীদের অনুমান, গত নির্বাচনের আতঙ্ক তাঁকে গ্রাস করেছিল। তাই এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ডিউটি আসার পর থেকেই তিনি চরম আতঙ্কে ছিলেন। ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেবার আশ্বাস দিলেও তিনি সেই আশ্বস্ত হতে পারেননি। সেই আতঙ্ক থেকেই সম্ভবত এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সুধীর সরকারের ছেলে শুভঙ্কর সরকার জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির পরই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। এ দিন অনেক রাত্রি পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় তার খোঁজে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীর কাছে খোঁজ নিলে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরিকালচার বিভাগে খোঁজার জন্য নিয়ে যান। ঘরের দরজা খুলতেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থেকে সমস্ত কর্মীরা হাজির হন। সেরিকালচার বিভাগ থেকেই পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায়।
Uttam Paul
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।