হোম /খবর /উত্তরবঙ্গ /
স্কুলেরই ক্লাসরুমে ছাত্রীকে গণধর্ষণ! পরিকাঠামোহীন এমন স্কুল আছে কেন? উঠছে প্রশ্ন

Maldah News: গাজোলে স্কুলে ঢুকে ছাত্রীকে গণধর্ষণ! প্রশ্নের মুখে বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো, তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা

এদিন বিকেল নাগাদ গাজোলে পৌঁছে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।

  • Local18
  • Last Updated :
  • Share this:

মালদহ: মালদহের গাজোলে স্কুলের ভিতরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনার জেরে প্রশ্ন উঠল স্কুলের পরিকাঠামো নিয়েই। এই জুনিয়র হাইস্কুলে কোনও সীমানা প্রাচীর নেই। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস থাকলেও কাগজেকলমে পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ৩৭। বাস্তবে এই সংখ্যা আরও কম। মাত্র ১৩। শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র একজন। গত শনিবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্কুলে যেতে পারেননি সেই একমাত্র শিক্ষক। আর তাঁর অনুপস্থিতিতেই স্কুলে ঢুকে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ করে বহিরাগতেরা। যে ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা জেলা।

স্কুলের লাগোয়া প্রাথমিক স্কুলে একইসঙ্গে দুই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিলের ব্যবস্থা রয়েছে। ঘটনার দিন শিক্ষক না এলেও প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিল নেওয়ার জন্য স্কুলে থেকে গিয়েছিল ছাত্রীরা। ওইদিন জুনিয়র হাইস্কুলে মাত্র ন'জন ছাত্রী উপস্থিতি ছিল সেই দিন। ঘটনার সময় এদের মধ্যে আরও কয়েকজন বাড়ি চলে যায়। ফলে প্রায় ফাঁকাই ছিল স্কুল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, এরই সুযোগ নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

আরও পড়ুন: শিউরে ওঠার মতো ঘটনা, স্কুল চলাকালীন স্কুলেরই ঘরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ! কোথায় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা?

ঘটনা সামনে আসার পরেই হইচই পড়ে যায় জেলার প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলে। ঘটনায় ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের কথা জানান মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া। কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন মালদহের শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব এদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এফআইআর- এ নাম থাকা তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনজনেরই চারদিনের পুলিশ হেফাজত পাওয়া গিয়েছে। হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি, ওই ছাত্রী ও তাঁর সঙ্গীর বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছে।

এদিকে স্কুলের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন স্কুলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একমাত্র শিক্ষক সঞ্জীব সরকার। একক শিক্ষক হওয়ায়, মিড ডে মিল থেকে পড়াশোনা সব কাজই তাঁকে একা করতে হয় বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষক। ঘটনার দিন তিনি আসতে না পারায়, প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষকে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের দিয়ে দেওয়া হয়। সেই কারণেই অনেকে মিড ডে মিল পাওয়ার জন্য থেকে গিয়েছিল বলে তাঁর অনুমান।

আরও পড়ুন: গাড়ি-বাইকের মাইলেজের তো খোঁজ রাখেন, কিন্তু ট্রেন? ১ কিলোমিটার যেতে কত লাগে ডিজেল?

এদিকে ঘটনার জেরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। এদিন দুপুরে স্কুল পরিদর্শনে যান গাজোলের বিজেপি বিধায়ক চিন্ময় দেববর্মন। স্কুল ঘুরে দেখে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক বলেন, "যা পরিকাঠামো রয়েছে তাতে এমন স্কুল থাকার চেয়ে না থাকায় ভাল।" বিষয়টি তিনি বিধানসভায় তুলবেন বলে জানিয়েছেন।

পরে ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। এদিন বিকেল নাগাদ গাজোলে পৌঁছে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। সঙ্গে ছিলেন প্রশাসনিক কর্তারাও। সংবাদ মাধ্যমে মন্ত্রী বলেন, "অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। বিকৃত মস্তিষ্কের ফল। ঘটনা না ঘটলে হয়ত স্কুলের এমন পরিস্থিতির কথাও জানা যেত না। প্রশাসন ও সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ করবে।"

সেবক দেবশর্মা

Published by:Satabdi Adhikary
First published:

Tags: Malda, Maldah, Maldah news