#শিলিগুড়ি: পারদ নামছে প্রতিদিনই। সঙ্গে হিমেল হাওয়ার জেরে কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে শৈলশহর। হাড় হিম করা ঠাণ্ডার মজা লুফে নিতে হাজির পর্যটকেরা। নিউ নর্মালে ভালো ভিড় জমেছে পাহাড়ে। সন্ধ্যেয় ম্যালে সেই ভিড়ের চেনা ছবি। টানা এক মাস কাটিয়ে আজ সকালের দার্জিলিংয়ের রাজভবন ছাড়লেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সকালে অপরূপতায় মোড়া কাঞ্চন দর্শন। আর তাই বাড়ছে পর্যটকদের সংখ্যা। এমনই ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কুল কুল আবহাওয়ায় পারদ চড়ছে পাহাড়ে। রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। মোর্চার দুই শিবিরের লড়াইয়ে উত্তাপ বেড়েই চলছে। আজ বিনয়পন্থীদের হুঁশিয়ারি তো কাল পালটা বিমলপন্থীদের হুঁশিয়ারি! দুই শিবিরের লড়াইয়ে জমজমাট পাহাড়ের রাজনীতি।
যেদিকে নজর সমতলের রাজনৈতিক দলগুলোর। ফায়দা তোলার অপেক্ষার অঙ্ক কষছে তারা। একদিকে গেরুয়া শিবির, অন্যদিকে জোড়াফুল শিবির। কিন্তু পাহাড়ের জমি দখলে চলছে যুযুধান দুই শিবিরের জোর লড়াই। এক ইঞ্চি জমি কেউ কাউকে ছাড়তে নারাজ। এক মঞ্চে কেউই বসবে না। সাফ জানিয়ে দিয়েছে দুই শিবির। অর্থাৎ দুই মোর্চার জোড়া লাগার সম্ভাবনা নেই। গত পরশু কার্শিয়ং মোটর স্ট্যাণ্ডের জনসভা মঞ্চ থেকে বিনয় তামাং এবং অনীত থাপাকে কড়া আক্রমণ করেন বিমলপন্থী মোর্চার মহাসচিব রোশন গিরি। সাড়ে তিন বছর সভায় যোগ দিয়ে আপ্লুত রোশন বলেন, এটা তো ট্রায়াল। আরো খেলা বাকি। বিমল গুরুং এলেই পাহাড় ঝুঁকবে তাদের শিবিরে। তারই পালটা সেই মোটর স্ট্যান্ডেই সভা করেন অনীত থাপা। অসুস্থতার জন্যে সভায় যোগ দিতে পারেননি বিনয় তামাং। অনীত থাপা আজ নরমে গরমে তোপ দাগেন বিমল গুরুং, রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে।
তাঁর সাফ দাবী, পাহাড়ে বদলার রাজনীতি নয়। শান্তি ফিরে এসছে। তা অটুট থাকবে। বিমল গুরুং আসতেই পারেন পাহাড়ে। তবে একজন সাধারণ বাসিন্দা হিসেবে থাকুন। পাহাড়ে নেতৃত্ব দেবেন বিনয় তামাং। ২০১৭-তে গোলমালের সময়ে পাহাড় ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন রোশন গিরি, বিমল গুরুংরা। ওই সময় পাহাড়ের হাল ধরে শান্তি ফিরিয়ে আনেন বিনয় ও অনীত জুটি। এখন আবার পাহাড়ে এসে অশান্তি ছড়ানীর চেষ্টা করলে তা পাহাড়বাসী ছেড়ে দেবে না। তবে কখোনই বদলার রাজনীতি নয়। আজ অনীত স্পষ্টত বলেন, বিমল গুরুংকে স্বাগত জানানোর প্রশ্নই নেই। প্রসঙ্গত আগামী ৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি আসছেন বিমল গুরুং। ওইদিনই বাঘাযতীন পার্কে সভা করবেন। তারই পালটা সভার ডাক আজ দিয়েছেন অনীত থাপা। সুকনায় হবে ওই মহা জনসভা। লাখ লাখ লোকের জমায়েত হবে। সবমিলিয়ে দুই শিবিরের হুঁশিয়ারি, পালটা হুমকিতেই স্পষ্ট বিনয় বনাম বিমলের লড়াইয়ে উত্তাপ বাড়বে বই কমবে না। আর এর ফায়দা কে তোলে, বিজেপি না তৃণমূল? সেদিকেই চেয়ে রাজ্য। ফল মিলবে একুশের লড়াইয়ে।
PARTHA PRATIM SARKAR