শিলিগুড়ি : বছর দুই-তিনেক আগের কথা। উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রতিটি পখিরালয়েই পরিযায়ী পাখির দেখা মেলা ভার ছিল। এখন ছবি কিছুটা বদলেছে। মূলত পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিত্রটা পাল্টেছে। গত ২ বছর ধরে এনিয়ে কাজ করে আসছে শিলিগুড়িরই (Siliguri) একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠন "অপ্টোপিক"।
আরও পড়ুন : লোকালয়েই তীব্র প্রসববেদনা, জঙ্গলে ফেরার পথে চাবাগানের কাছে শাবকের জন্ম দিল হস্তিনী
সংগঠনের কর্তারা এক সমীক্ষায় জানতে পারেন মূলত দুই কারণে পরিযায়ী পাখির (migratory birds) সংখ্যা কমে যাচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত দূষণ এবং বনভোজন। কারণ জানা যেতেই তার সমাধানে এগিয়ে আসেন তাঁরা। শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি তিস্তা ক্যানালকে বেছে নেন তাঁরা। বহু বছর ধরেই এখানে পরিযায়ী পাখির ঢল নেমে আসে নভেম্বরে। ক্রমেই তা বাড়ছিল। কিন্তু বছর পাচ-ছয় ধরে লক্ষ করা যায় যে পাখির সংখ্যা হু হু করে কমছে। মূলত ওই দুই কারণেই।
আরও পড়ুন : ক্লাসরুম জুড়ে ভাঙা বেঞ্চ-চেয়ার, চিকিৎসকদের ব্যবহৃত পোশাক, ক্লাস শুরু হল না এই কলেজে
তাই গত বছর স্থানীয় ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধি, বিডিও এবং পুলিশকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠকে বসে সংগঠনটি। পিকনিক বন্ধের আর্জি জানায় সংগঠনের সদস্যরা। সামিল করা হয় স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। প্রস্তাব মতো লড়াই শুরু। মূলত যেখানে পরিযায়ীদের আনাগোনা সেই ক্যানাল সংলগ্ন এলাকায় পিকনিক বন্ধ করা হয়। পিকনিক বন্ধ মানে প্লাস্টিকের গ্লাস, থার্মোকলের থালার ব্যবহারও বন্ধ । বন্ধ হয়ে পড়ে তারস্বরে মাইক বাজানোও। আর এতেই ফল মেলে হাতেনাতে। ফের ভিনদেশি পাখির আনাগোনা গত বছর থেকে বাড়তে শুরু করে ফুলবাড়িতে। পিকনিক বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটা অংশ অখুশি হলেও অধিকাংশ স্থানীয় বাসিন্দাই খুশি। এখন তাঁরা অন্য স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন : দূষণে উত্তরবঙ্গে শীর্ষে মহানন্দা, উৎসব শেষে নদীকে বাঁচানোর উদ্যোগ
শনিবার এলাকায় ফের সচেতনতা প্রচারে যান সংগঠনের সদস্যরা। ছিলেন সংগঠনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক তথা অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারাও। এই মূহূর্তে ফুলবাড়িতে প্রায় ৬০-৭০ প্রজাতির ভিনদেশি পাখি রয়েছে। এখানে দেখা মিলবে রুডিশিল্ড ডাক, রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড, গ্যাডওয়াল, গ্রে হেডেড ল্যাপউইং, নর্থান ল্যাপউইং, লেসার উইসলিং টিল-সহ একাধিক প্রজাতির পাখি। মূলত ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চিন থেকে উড়ে এখানে পরিযায়ীরা আসে। আর পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি "অপ্টোপিক" সংগঠনও। সংগঠনের কর্তা দীপজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগে এখানে থার্মোকল, প্লাস্টিকের ছড়াছড়ি ছিল। এখন প্রায় নেই বললেই চলে। যা পরিযায়ী পাখিদের কাছে আদর্শ পরিবেশ।’’
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Siliguri