উত্তর ২৪ পরগনা: পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা ধরনের মেলা| বিশেষ বিশেষ পার্বণে সেইসব মেলার জনপ্রিয়তা রয়েছেস্থানীয় মানুষের মধ্যে৷ তেমনি এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার প্রাচীন মসলা মেলার। প্রায় ২০০ বছর আগে ১৮২৩ সালে গোবরডাঙ্গার জমিদার খেলারাম মুখোপাধ্যায়ের পুত্র কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়যমুনা নদীর ধারে জমিদার বাড়ি লাগোয়া মাঠে শুরু করেছিলেন মসলা মেলার। উদ্দেশ্য ছিল কৃষকরা বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে তাদের জমির উৎপাদিত ফসল বিক্রি করবেন এবং ফসল বিক্রি করে জমিদারের খাজনা মিটিয়ে যাবেন। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই সূচনা হয়েছিল এই মেলার। নাম দেওয়া হয়েছিল গোষ্ঠ বিহার মসলা মেলা। আজ অবশ্য জমিদারি প্রথার অবলুপ্তি ঘটেছে। নেই কৃষকদের খাজনা দেওয়ার নিয়মও। তবুও ঐতিহ্য মেনে মেলা চলে আসছে ২০০ বছর ধরে। পয়লা বৈশাখের প্রথম দিন ভোর তিনটে থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। আজও বহুদূর থেকে কৃষকরা তাদের জমির উৎপাদিত ফসল নিয়ে আসেন বিক্রি করার জন্য। আবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু ক্রেতারা আসেন কৃষকদের কাছ থেকে মসলা কিনতে। বছরের প্রথম দিন পাইকারি বেচাকেনা হলেও পরবর্তীতে আরও ১৫ দিন ধরে চলে খুচরো মসলার হাট। মেলাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিক ভাবেই জমজমাট থাকে যমুনা নদীর ধারে এই ময়দান। সমস্ত রকম বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। যমুনা নদী দিয়ে একসময় নৌকায় করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পসরা নিয়ে আসত কৃষকরা।মজেছে সেই নদী, তাই কালের নিয়মে এখন যানবাহনের পরিবর্তন ঘটেছে।মসলা মেলায় কৃষকরা যেমন মশলা বিক্রি করতে পারেন, তেমনই আবার ব্যবসায়ী ওসাধারণ মানুষসারা বছরের প্রয়োজনীয় মশলা বাড়ির জন্য কম দামে কিনে নিয়ে যান এই মেলা থেকে। বহুদূর থেকে সাধারণ মানুষ মসলা কিনতে চলে আসেন এই দিনে। বহু মসলার ব্যবসায়ী আছেন, যারা মনে করেন বছরের প্রথম দিন এই মসলা হাট থেকে বেচাকেনা শুরু করলে সারাবছর ব্যবসা ভালো হবে। এই বিশ্বাস থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নববর্ষের সকালে ব্যবসায়ীরা মসলা কিনতে আসেন গোবরডাঙ্গার এই মসলা মেলায়। জমিদার বাড়ির পাশেই রয়েছে প্রসন্নময়ী কালী মন্দির। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে মেলার পাশাপাশি মাকে ধর্ষণের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের ভিড় পরিলক্ষিত হয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Gobordanga, North 24 Parganas