Alipurduar: কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সবচেয়ে ভালো করে দেখা যায় বলেই সিকিমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য ''পেলিং''
- Published by:Ravi Singh3
Last Updated:
কংক্রিটের কৃত্রিম শহর থেকে অনেক দূরে যেখানে গা ছুঁয়ে মেঘেদের আনাগোনা, রং বেরঙের রঙিন পাহাড়ি ফুল, প্রজাপতি, কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ি গ্রামে ক্লান্ত মন ছুটে যায় বারবার।
দীপেন্দ্র লাহিড়ী, আলিপুরদুয়ার: কংক্রিটের কৃত্রিম শহর থেকে অনেক দূরে যেখানে গা ছুঁয়ে মেঘেদের আনাগোনা, রং বেরঙের রঙিন পাহাড়ি ফুল, প্রজাপতি, কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ি গ্রামে ক্লান্ত মন ছুটে যায় বারবার। যেনো নতুন করে নিঃশ্বাস নিতে শেখায় পাহাড়।
দিগন্ত বিস্তৃত চা বাগান,পাহাড়ের গায়ে লেগে গড়ে ওঠা জনপদ ও প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য মন কেড়ে নেয় বারবার ভ্রমণ পিপাসুদের।পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ , পাশ দিয়ে বয়ে চলা চঞ্চলা তিস্তাপেরিয়ে একঘেয়ে জীবন থেকে খানিকটা স্বস্তি পেতে এবার আপনার ঠিকানা হতে পারে পশ্চিম সিকিমের পেলিং। পশ্চিম সিকিম সবচেয়ে পরিচিত হিল স্টেশন হলেও নীল আকাশে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘার নৈসর্গিক শোভা দেখার জন্য, পেলিং পর্যটকদের পছন্দের স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম ।
advertisement
অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পেলিং এর আশেপাশে ছড়িয়ে আছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। মনেস্ট্রি , পাহাড়ি ঝর্না , লেক , উপত্যকা , নদী ,কমলা লেবুর বাগান কি নেই ! প্রকৃতি যেনো অপরূপ সৌন্দর্যে দু হাত দিয়ে ভরিয়ে তুলেছে পেলিংকে।পেলিং এর খানিক নিচে রয়েছে দারাপ ভিলেজ, দারাপ থেকে আরো ৬ কিমি চললে পথের বাঁদিকে দেখা মিলবে সুন্দরী রিম্বি ঝর্ণার।
advertisement
advertisement
পাহাড়ের কোল বেয়ে নেমে আসা রিম্বি যেন জীবনের সমস্ত মলিনতাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় আপন ছন্দে।কাছেই রয়েছে রিম্বি অরেঞ্জ গার্ডেন ,বাগানে নানান ফুলের গাছের পাশাপাশি রয়েছে অনেক কমলালেবুর গাছ। আরো খানিকটা নেমে রিম্বি নদী। খরস্রোতা পাহাড়ি নদী রিম্বি খোলা, নদীবক্ষে ছড়ানো প্রস্তরখন্ডের মধ্যে দিয়ে কলকল করে বয়ে চলেছে।
পেলিং এর আরেকটি দর্শনীয় স্থান হলো খেচেওপালরি লেক। পাহাড় ঘেরা এক নৈসর্গিক পরিবেশ । লেকের চারপাশ ঘিরে রয়েছে প্রচুর গাছ । তবে এর একটা আলাদা পরিচিতি আছে। এই লেকে একটিও পাতা ভাসতে দেখা যায় না, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। স্থানীয় বাসিন্দারা এই লেকটিকে ইচ্ছেপূরণের লেক বলে। এখানে নাকি প্রার্থনা করলে ইচ্ছে পূরণ হয়, এমন কাহিনী বর্ণিত আছে।
advertisement
পেলিং অনতিদূরে রয়েছে ঘন সবুজ পাহাড়ের প্রেক্ষাপটে অনেক উঁচু থেকে সশব্দে ঝরে পড়া দুগ্ধ ফেনিত জলধারা কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস । এখানের আরেকটি অন্যতম আকর্ষণ স্কাই ওয়াক। আকাশ পথে পেলিং এর অপরূপ সৌন্দর্য যা মেঘের ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় নীল নির্জনে। সমবেত বৌদ্ধ মন্ত্রের উচ্চারণে আর পাহাড়ি তিব্বতি সুরের যন্ত্র সঙ্গতে আত্মিক শান্তি লাভের জন্য কিছুটা সময় কাটাতেই পারেন প্রায় তিন শতাধিক বছরের প্রাচীন \”পেমিয়াংসি মনাস্ট্রি\” তে ।
advertisement
উপাসনার সময়ে পৌছতে পারলে মেলে এক অনাবিল শান্তির হাতছানি ।পেলিংয়ের সাইট সিয়িং ট্যুরের জন্য আরও রয়েছে দক্ষিণ দিকের সিংশোর ব্রিজ, ডেন্টাম ও নেপাল সীমান্তের কাছে পাহাড়ি গ্রাম উত্তরে। তবে বর্ষায় ধ্বস নামলে পেলিং থেকে ডেন্টামের সংযোগকারী রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় বেশিরভাগ সময়ে।গরমেই ছুটিতে প্রকৃতির এই অনাবিল স্বাদ আস্বাদনের জন্য এবার আপনার পরবর্তি গন্তব্যের ঠিকানা হোক মোহময়ী পশ্চিম সিকিমের ছোট্ট পাহাড়ি জনপদ পেলিংয় ।
advertisement
একনজরে পেলিং এর দর্শনীয় স্থান :
■সাঙ্গাচোলিং চেনরেজিগ ট্যুরিজম পার্ক
■স্কাইওয়ার্ক
■সাঙ্গাচোলিং মোনাস্ট্রি
■ছাঙ্গে জলপ্রপাত
■রিম্বিক জলপ্রপাত
■রক গার্ডেন
■কাঞ্চনজঙ্ঘা জলপ্রপাত
■খেচেওপালরি লেক
পেলিং ভ্রমণের আদর্শ সময়: গ্রীষ্মের মরসুমে এবং পুজার পর পেলিং এ পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে। পাহাড়ে ধসের জন্য বর্ষাকাল ছেড়ে এই সময়ই হলো পেলিং ভ্রমণের আদর্শ সময়। কিভাবে যাবেন: নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পেলিং-এর দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটার।
advertisement
পুরো গাড়ি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে প্রায় ৩৫০০-৪০০০ টাকা।শিলিগুড়ি এসএনটি বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসও ছাড়ে পেলিং-এর, সকাল সাড়ে ১০টায়। ভাড়া মাথাপিছু ১৮০ টাকা। শিলিগুড়ি এসএনটি থেকে অল্প কিছু দুরে গেজিং-এর শেয়ার জিপও ছাড়ে, ভাড়া মাথাপিছু ৩০০ টাকা। দিনের শুরুর দিকে রওনা দিন পেলিং-এর উদ্দ্যেশ্যে।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
April 18, 2022 10:52 AM IST