আগরতলা: তেইশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে একক রাজনৈতিক দল হিসাবে বিজেপির ঠিক পরেই নাম ত্রিপুরার বুবাগ্রা (রাজা) প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্যের দল তিপ্রামোথার। নির্বাচনের আগে বহু চেষ্টা করেও জোট হয়নি। এমনকি, দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরেও নয়। তবে, নির্বাচন মিটে গেলেও তিপ্রামোথার সঙ্গ পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। অন্তত, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যে তো তাই মনে হয়েছে।
আগরতলায় এসেই তিপ্রামোথা প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্যের সঙ্গে, কথা বলতে চেয়েছেন বিজেপির 'দূত' তথা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। জয়ের জন্য দলীয় কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, “আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য তিপ্রামোথা বেশ কিছু ইস্যু তুলে ধরেছে। যদি ত্রিপুরা রাজ্য ভাগ করার দাবি ছেড়ে দেন তারা, তবে আমরা কথা বলতে রাজি। আমরা আদিবাসী মানুষদের সমস্যা মেটাতে রাজি, কিন্তু গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড নিয়ে আমরা কথা বলতে পারব না। ত্রিপুরা অভিন্নই থাকবে। এর জন্য রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরে যা কিছু করা দরকার, তা করা হবে।”
হিমন্তের এ হেন বার্তার পরেই উত্তর এসেছে মাণিক্যের কাছ থেকেও। হিমন্তের বার্তা প্রসঙ্গে প্রদ্যোতের প্রতিক্রিয়া, "আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিবৃতি শুনেছি। ওঁরা আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। ওঁরা যদি যথোপযুক্ত সম্মান এবং মর্যাদা জানিয়ে আমাদের ডাকেন, আমরাও কথা বলব। কিন্তু, কোনও পদের লোভে নয়। আমরা শুধুমাত্র ত্রিপুরা- সমস্যার সাংবিধানিক সমাধানের জন্যেই বসব।"
এরপরে সুর আরও চড়িয়ে প্রদ্যোৎ বলেন, "আমরাই ত্রিপুরার আদি বাসিন্দা। যদি মনে করেন, আমাদের অধিকারকে অগ্রাহ্য করে ত্রিপুরা শাসন করবেন, তাহলে সমস্যায় পড়বেন। ত্রিপুরার আদি বাসিন্দাদের অধিকারের কথা ভেবেই তিপ্রামোথা তৈরি করা হয়েছে।" জানিয়ে দেন, পৃথক তিপ্রাল্যান্ডের লিখিত প্রতিশ্রুতি না পেলে তাঁরা কোনওভাবেই আলোচনায় যেতে রাজি নন। প্রদ্যোতের কথায়, "আমরা এখানকার ভূমিপুত্র। আমাদের সাংবিধানিক অধিকারের জন্য আমরা লড়াই করছি। যদি ওঁরা আমাদের লিখিত ভাবে প্রতিশ্রুতি দেন, তাহলেই একমাত্র আমরা আলোচনায় বসতে পারব। কোনও পদের লোভে নয়।"
আরও খবর: ইস্তফা দিলেন মানিক, কে হচ্ছেন ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? শুরু জল্পনা..
ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও, আদিবাসী-জনজাতি ভোট বিজেপির তুলনায় বেশি গিয়েছে তিপ্রামোথার দিকেই৷ বিজেপির জোটসঙ্গী আইপিএফটি একটি আসন জিতলেও, বিজেপির প্রতি আদিবাসীরা তেমন দাক্ষিণ্য দেখায়নি। আর আদিবাসী বা জনজাতি ভোটের এই ভাবে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াকে ভাল ভাবে নিচ্ছে না বিজেপি শিবির৷ কারণ, লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তর পূর্ব ভারতের আসন ধরে রাখতে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে আদিবাসী-জনজাতিদের ভোট৷ সেই কারণেই, বিজেপি তিপ্রামোথার সঙ্গ চাইছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।