পয়লা বৈশাখের সঙ্গে বাঙালির কোনও সম্পর্ক নেই, এর সৌজন্যে মহামতী আকবর
Last Updated:
যতই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, মন্দিরে পুজো দিয়ে, দুপুরবেলা ভাল-মন্দ খাই না কেন, পয়লা বৈশাখের সঙ্গে বাঙালির কোনও সম্পর্ক নেই! ওই পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা বলা যেতে পারে!
#কলকাতা: যতই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, মন্দিরে পুজো দিয়ে, দুপুরবেলা ভাল-মন্দ খাই না কেন, পয়লা বৈশাখের সঙ্গে বাঙালির কোনও সম্পর্ক নেই! ওই পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা বলা যেতে পারে!
শুধু আমাদের বাংলাতেই নয়, সমস্ত ভারতেই, অঘ্রান মাসে বছর শুরু হত। সেখান থেকে হঠাৎ করে, কীভাবে আমরা বৈশাখে বর্ষবরণ আরম্ভ করলাম? এর সৌজন্য-সহায়তায় রয়েছেন মুঘল সম্রাট মহামতী আকবর। তিনি এমনিতেই ছিলেন দয়াবান মানুষ, 'ইলাহি'র মতো তাঁর দয়া মায়া। কিন্তু তিনি তো দেশের রাজা! এবার, রাজকোষে অর্থ না থাকলে, রাজকর জমা না পড়লে, তিনি প্রশাসনই বা চালাবেন কেমন করে? কিন্তু রাজকোষে অর্থ বা আর্থিক বস্তু জমা পড়ার সবচেয়ে অসুবিধের কারণ হয়ে দাঁড়াল গিয়ে 'ক্যালেন্ডার"!
advertisement
আকবরের অনেক আগে থেকেই বঙ্গদেশে প্রশাসন চলছিল হিজরি সন অনুযায়ী। কিন্তু হিজরি সন চান্দ্রমাস অনুযায়ী চলে। বাংলার মতো কৃষিপ্রধান দেশের ফসলি সন হিজরি সনের সঙ্গে মিলত না! ফলে, কৃষকদের মহা অসুবিধে দেখা দিল! কারন, রাজকর হিসেবে যাঁদের ফসলই দিতে হয়, তাঁরা চান্দ্রমাসের গতিতে এক-এক সময়ে রাজকর দেবেন কী করে? ফসল ওঠার নির্দিষ্ট সময়ে যদি রাজকর দেওয়া সম্ভব হয়, তবেই তাঁদের সবচেয়ে সুবিধা।
advertisement
advertisement
মহামতি আকবর দু'তরফ থেকেই সমস্যাটা বুঝলেন। তাঁকে রাজকর পেতে হবে-- এটা তাঁর রাজনৈতিক প্রয়োজন! আবার প্রজাদের সুবিধাও দেখতে হবে! এটা তাঁর শুভ বুদ্ধি। কাজেই, তিনি আমির ফতেউল্লা শিরাজি নামে এক বিদ্বান পণ্ডিতকে ভার দিলেন হিজরি চাঁদ এবং ভারতীয় ফসলি সনের সূর্যকে একত্র মেলাতে।
শিরাজির পরিশ্রম কম হয়নি! সে এক জটিল অঙ্ক! হিজরির চান্দ্রায়ণী গতি আর হিন্দুদের সূর্যসিদ্ধান্ত মিলিয়ে, তিনি নিজের সমকাল বাদ দিয়ে, বাদশাহ আকবরের সিংহাসনে বসার অভিষেক-বর্ষ থেকে একটা শতাব্দীর সূচনা করার চেষ্টা করলেন। কেননা, যখন বঙ্গাব্দ প্রচলনের এই চেষ্টা চলছে, তখন আকবরের রাজত্বকালের ২৮ বছর চলে গিয়েছে, তাঁর সমসাময়িক হিজরি সন তখন ৯৯৮। শিরাজি তখন আকবরের সিংহাসন লাভের বছর ধরে হিজরি সনের ৯৬৩ সনে বঙ্গাব্দ চালু করলেন। অর্থাৎ, বঙ্গাব্দ বৃদ্ধ হয়েই জন্মাল।
advertisement
বঙ্গাব্দের এক শতাব্দ ধরতে গেলে হিজরি একে ফিরে যেতে হবে চান্দ্রায়ণী গতিতে। কিন্তু হিজরি ৯৬৩-তে যে বৃদ্ধ বঙ্গাব্দের জন্ম হল, তার ঊর্ধ্বগতি চলল সৌরমাস ধরেই এবং তার আরম্ভটাও মুহররম থেকে হল না, হল বৈশাখ থেকে।
কাজেই, সবশেষে এটাই মেনে নেওয়া ভাল, বঙ্গাব্দের সূচনায় বাঙালির কোনও কারিগরি নেই, কিংবা নেই পরম্পরা চালিত কোনও ভাগবত সন্দর্ভ! যা আছে, তা হল চরম জাতীয় সংহতির প্রমাণ।
advertisement
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
April 02, 2018 5:39 PM IST