নাগপুর: মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মহারাষ্ট্রের নাগপুরে৷ একের পর এক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চলল লুঠপাট, ভাঙচুর৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ৷
নাগপুরের মহল এলাকায় এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ যে গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সেগুলি থেকে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গিয়েছে৷ দুটি জেসিবি মেশিনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে উন্মত্ত জনতার আক্রমণে আহত হন এক দমকল কর্মী৷
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মোট চারজন আহত হয়েছেন৷ উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানোর পাশাপাশি লাঠি চার্জও করে পুলিশ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহল সহ নাগপুরের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ নতুন করে যাতে আর কোনও উত্তেজনা না ছড়ায়, সে বিষয়টিও নজরে রাখছে পুলিশ প্রশাসন৷
advertisement
#WATCH | Maharashtra: Explosions heard on vehicles that have been torched in Mahal area of Nagpur; tensions have broken out here following a dispute between two groups. pic.twitter.com/rssI72v8od
ডিসিপি অর্চিত চন্দক দাবি করেছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই অশান্তির ঘটনা ঘটেছে৷ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই পুলিশ কর্তা৷ পাথর ছোড়ার মতো ঘটনায় যাতে কেউ যুক্ত না হন, সেই আবেদনও করেছেন তিনি৷ পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও আহত হন৷ অন্তত চারটি গাড়িতে আগুন ধরানো হয়৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটে৷ অশান্তির এই ঘটনার পর উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
advertisement
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার পর থেকে মধ্য নাগপুরের মহল এলাকায় অশান্তি শুরু হয়৷ তার আগে বিকেলবেলা ঔরঙ্গজেবের সমাধিস্থল অন্যত্র সরানোর দাবিতে একটি মিছিল বের হয় ওই এলাকায়৷ শান্তি বজায় রাখার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ৷ গুজবে কান না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নাগপুরের সাংসদ নীতিন গড়কড়িও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করেছেন, গুজব থেকেই এই অশান্তির ঘটনা ঘটেছে৷
নীতিন গড়কড়ি ভিডিও বার্তায় আবেদন জানান, ‘আমি আশ্বস্ত করছি এই অশান্তির ঘটনার পিছনে যারাই দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করবে পুলিশ এবং প্রশাসন৷ মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে৷ তাই কেউ কোনও গুজবে কান দেবেন না৷’
advertisement
मुख्यमंत्री देवेंद्र फडणवीस जी यांचे नागपूरकरांना शांततेचे आवाहन
नागपुरातील महाल परिसरात दगडफेक आणि तणावपूर्ण स्थिती निर्माण झाल्यावर पोलिस प्रशासन परिस्थिती हाताळत आहेत. या परिस्थितीत नागरिकांनी प्रशासनाला संपूर्ण सहकार्य करावे, असे आवाहन मुख्यमंत्री देवेंद्र फडणवीस जी यांनी… pic.twitter.com/zlIR6rmLBS
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও জানান, ‘নাগপুরের মহলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা খুবই নিন্দনীয়৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছে৷ আমি পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি, অশান্তির পিছনে যারাই থাকুক না কেন কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে৷ যারা সমাজে অশান্তি ছড়াবে, তাদের কাউকে রেয়াত করা হবে না৷ প্রত্যেকের কাছে আমার আবেদন, নাগপুরকে অশান্ত হতে দেবেন না৷ কেউ অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’
যদিও এই পরিস্থিতির জন্য ফড়ণবীশ সরকারকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা৷ উদ্ধব ঠাকরে পন্থী শিবসেনার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘মহারাষ্ট্র সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে গোটা রাজ্যের সর্বনাশ করছে৷ যার পরিণতি হতে চলেছে ভয়ঙ্কর৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এলাকা নাগপুরেই এমন ঘটনা ঘটছে৷’ কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করা হয়েছে৷ মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি হর্ষবর্ধন সপকলের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা৷