Sandeep Saini
#হিসার: পায়েস খাইয়ে স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে কোদাল দিয়ে খুন (Murder) করলেন এক ব্যক্তি। তার পর ১১ পাতার একটি সুইসাইড নোট (Suicide Note) লিখে ‘মোক্ষ’ লাভের আশায় তিনিও আত্মহত্যা করলেন। এই নৃশংস ঘটনার কথা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই আবার এতে দিল্লির বুরারির ঘটনার ছায়া দেখছেন (Hisar Murder And Suicide Case)!
পুলিশ সূত্রে খবর, হরিয়ানার অগ্রোহার নঙ্গথলার বাসিন্দা রমেশ (Ramesh) নামে ওই যুবক ১১ পাতার ওই সুইসাইড নোটে নিজের পরিবারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। রমেশের সুইসাইড নোট থেকে স্পষ্ট যে, তিনি জীবন নিয়ে হতাশ। নোটে এ-ও স্পষ্ট যে, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রমেশের পাশে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সবিতাও (Sabita)।
১১ পাতার ওই সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, “আপনাদের সবার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমার নিরীহ-নিষ্পাপ স্ত্রী ও সন্তানকে নিষ্ঠুর পৃথিবীতে একা ছেড়ে যেতে পারব না।” এর পর কী ভাবে ওই যুবক তার পরিবারকে হত্যা করেছেন, তা সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে লেখা রয়েছে ওই নোটে।
রমেশ আরও লিখেছেন, “ছোটবেলা থেকেই আলাদা ছিলাম। তার পর কলেজে পড়তেই পৃথিবীকে আলাদা চোখে দেখতে শুরু করলাম। সব কিছুকেই নকল বলে মনে হতে লাগল। এর মধ্যেই বাবা চলে গেলেন। আর সেখানে থেকেই আমার সর্বনাশ শুরু হয়।” কেবল বাইরের জগতের উপরেই নয়, পরিবারের লোকেদের প্রতিও রমেশের বিদ্বেষ ধরা পড়েছে ওই সুইসাইড নোটে।রমেশ ওই নোট থেকে স্পষ্ট যে, তিনি সাংসারিক বিষয় থেকে পালাতে চাইতেন। তিনি ওই নোটে জানিয়েছেন, গত ১০-১৫ বছরে বহু বার বাড়ি ছেড়ে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তিনি। কিন্তু দুবছর আগের একটি অ্যাক্সিডেন্টের কারণে শরীর ভেঙে গিয়েছিল, ফলে তাঁর সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছে পূরণ হয়নি। ক্রমে ক্রমে নানান সাংসারিক ঝামেলায় জড়িয়ে আরও জীবন বিমুখ হয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক।
ওই সুইসাইড নোটের শেষে রমেশের আকুতি, তাঁকে যেন কাপুরুষ না-ভাবা হয়। তিনি লিখেছেন, “আমাকে কেউ কাপুরুষ এবং খুনি বলবেন না, আমার ধন-সম্পদ যা-ই হোক না-কেন, আমি আমার স্ত্রীকে সন্তান-সহ জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছি।”
আরও পড়ুন-বিয়ের ৬ মাস পরেই সন্তানের জন্ম! শাশুড়ি বউমাকে ঘরছাড়া করলে জানা গেল আসল রহস্য
নিজের জীবনের খোঁজেই এমনটা করেছেন বলে বিশ্বাস করেন রমেশ। তাঁর কথায়, “কয়েক লক্ষ বছর পর পৃথিবীতে কেউ থাকবে না। প্রতি দিন লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। তাই আমাদের চলে যাওয়া বা না-যাওয়ায় কিছু আসবে-যাবে না। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আবার সব স্বাভাবিক হয়ে সবার জীবন ছন্দে ফিরতে শুরু করবে। এই পৃথিবীটাই আসলে জাল।”
কী ছিল রমেশের শেষ ইচ্ছা?
তিনি চেয়েছিলেন, সন্ন্যাসীর মতো বিদায় নিতে। তাই রমেশ শেষ ইচ্ছে হিসেবে লিখেছেন, “আর কোনও পিছুটান রইল না। হাসপাতাল থেকে সরাসরি শ্মশানে নিয়ে অন্ত্যেষ্টি করতে হবে। হরিদ্বারের যেতে হবে না, বরং শ্মশানের গাছ-পালায় আমার দেহ পোড়ানোর পরে অবশিষ্ট ছাইটা দিয়ে দিলে ভালো। আর আমার ঘর সব সময় বন্ধ রাখতে হবে, এতেই আমার আত্মা শান্তি পাবে।”
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।