নয়াদিল্লি: কৃষিপ্রধান অর্থনীতির দেশে কৃষি নিয়ে আরও একটু ভাবনা-চিন্তা প্রয়োজন কি না, তা নিয়ে অনেক আলোচনাই হয় চারপাশে। সমস্ত চাহিদা মেটানো হয়ত সেভাবে সম্ভব হয় না কোনও সরকারের পক্ষেই। কিন্তু সে দিকে তাকিয়েই তো ঘুরে চলে চাকা— রাজনীতি, সমাজ, অর্থনীতির। ভারতের একটা বড় অংশের নাগরিকই তাঁদের প্রাথমিক আয়ের উৎস হিসেবে কৃষির উপর নির্ভর করেন। তাই কেন্দ্রীয় বাজেটের লক্ষ্য থাকে কৃষিক্ষেত্রেই।
হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই সংসদে ২০২৩ সালের বাজেট পেশ করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেদিনের জন্য অনেক প্রত্যাশাই রেখেছেন ভারতীয় কৃষকেরা। তবে এই প্রত্যাশা শুধু কৃষকের নয়, পরোক্ষে আপামর জনগণের, তা বলাই যায়। এবারের বাজেটেও কৃষকের আয় বৃদ্ধি নিয়ে সরকারি পদক্ষেপের আশা থাকছেই। কোন কোন ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে প্রত্যাশা দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—
২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে তহবিল বরাদ্দ হওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে জৈব বা রাসায়নিক— যে কোনও দিক থেকেই কৃষি ক্ষেত্রে কীটপতঙ্গ, আগাছা এবং রোগ প্রতিরোধ নতুন, নিরাপদ, এবং আরও কার্যকর পদ্ধতি তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। এই ধরনের গবেষণা উন্নয়ন কার্যক্রমে নিয়োজিত সংস্থাগুলিকে খানিকটা উৎসাহ দিলে তারা এধরনের কাজে আরও বিনিয়োগ করতে পারে। ২০২৩ সালে কৃষি উৎপাদন সর্বাধিক করার জন্য এই ক্ষেত্রে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ (PLIs)-এর মতো অতিরিক্ত সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই রাজ্যে ফের অমিত শাহ! পঞ্চায়েত ভোটের আগে জোড়া সভার ইঙ্গিত কোথায় কোথায়?
ভারতের পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রকের তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, কৃষিক্ষেত্রে ২০২০-২১ সালে ৩.৬ শতাংশ এবং ২০২১-২২ সালে ৩.৯ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। কোভিড ১৯-এর সঙ্কটময় সময়েও কৃষিক্ষেত্রে অসাধারণ স্থিতিস্থাপকতা বজায় ছিল। খাদ্যসঙ্কট ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, সরবরাহ শৃঙ্খল সমস্যা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক সমস্যাগুলি প্রতিটি অর্থনীতিকে ব্যাহত করেছে। ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী মন্দার সূত্রপাত ঘটেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী কৃষি এবং খাদ্য শিল্পের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল একথা অস্বীকার করার জায়গা নেই।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ২০২৩ কেন্দ্রীয় বাজেটের লক্ষ্য হওয়া উচিত, আগামী দিনে কৃষিক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির প্রচার, বিশেষত যেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার লক্ষ্যে তৈরি হয়েছে। এর থেকে কৃষি উৎপাদনশীলতা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনই বাড়বে কৃষকের লাভ। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP) নীতিকে যৌক্তিক করার খানিকটা দায়ও সরকারের রয়েছে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আগামী দিনে দেশে খাদ্যশস্যের উৎকর্ষতার চাহিদা মেটাতে মাটির উর্বরতা ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট অপরিহার্য হয়ে উঠবে। ফলে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস এবং সারের দামও একটি বড় বিষয়। এই প্রয়োজনীয় পণ্যগুলি কৃষকের সাধ্যের মধ্যে থাকলে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনই উৎকর্ষও বৃদ্ধি পাবে।
কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি তহবিল জমা করার মতো পদক্ষেপ করার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এতে তাঁরাই পছন্দ করে নিতে পারবেন যে কোন পণ্য এবং কোন পরিষেবা কৃষি খাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে হবে। এতে রফতানি পরিকল্পনাতেও গতি আনা সম্ভব হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।