পৃথিবীর বাইরে আর কোনও পড়শি গ্রহে কি রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব? গত শতাব্দী থেকেই এই নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। খুব শিগগির বোধহয় মিলতে চলেছে উত্তর। শুক্র গ্রহে ফসফিন গ্যাসের সন্ধান মিলেছে গত মাসে। প্রাণের হদিশ পাওয়া যাবে কি না, সেই উত্তরও মিলতে চলেছে এই সপ্তাহেই। রোবটসমেত একটি মহাকাশযান এই সপ্তাহেই ঘুরবে শুক্রের চারপাশে। সেখান থেকেই জানা যেতে পারে আদৌ সেই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কি না!
হাওয়াই-এর জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল টেলিস্কোপেই প্রথম মাস খানেক আগে শুক্র গ্রহে ফসফিন গ্যাস পাওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। পরে চিলির আলমা রেডিও টেলিস্কোপ এর সত্যতা নিশ্চিত করে।
বার্লিনের ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানেটারি রিসার্চের গবেষক জন হেলবার্ট এটি নিয়ে খুব উৎসুক। তাঁর তৈরি মার্কিউরি রেডিওমিটার অ্যান্ড থার্মাল ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোমিটার এই সপ্তাহেই ঘুরে বেড়াবে শুক্রের আশেপাশে। সেই গ্রহের ভূপৃষ্ঠের ৬৭০০ মাইলের মধ্যে ঘুরপাক খাবে বেপিকলম্বো যন্ত্রটি। আর সঙ্গে করে নিয়ে আসবে বেশ কিছু তথ্য।
শুক্র গ্রহে ফসফিনের সন্ধান পেয়ে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেন গ্রিভস জানিয়েছিলেন যে, ঘটনায় তাঁরা খুবই অবাক হয়েছেন। আবার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির মহাকাশবিজ্ঞানী ক্লারা সসা এবং সিলভা জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে শুক্র গ্রহে ফসফিন গ্যাসের সন্ধান পাওয়া ভিনগ্রহের প্রাণের সন্ধান পাওয়ার মতোই চাঞ্চল্যকর। তবে তাঁদের আসল উদ্দেশ্য প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজ করা। সাম্প্রতিকতম এই আবিষ্কার বলে দিচ্ছে এই মহাকাশে আমরা একাই নই, অন্য গ্রহেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে।
তিনটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সমন্বয়ে একটি ফসফিন গ্যাসের অণু তৈরি হয়। মানুষের জন্য অবশ্য এটি খুবই বিষাক্ত। পৃথিবীর নিকটতম গ্রহটিই হল শুক্র। পৃথিবীর চেয়ে আকৃতিতে অনেক ছোট হলেও গঠনগত বেশ মিল রয়েছে দুয়ের মধ্যে। সূর্যের থেকে এর দূরত্ব অবশ্য পৃথিবীর চেয়ে কম। সৌরজগতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলা গ্রহদের মধ্যে বুধের পরেই রয়েছে শুক্র। এই গ্রহের ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৪৭১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্র গ্রহের চারপাশে ৯০ শতাংশ সালফিউরিক অ্যাসিডের মেঘ রয়েছে। এই রকম অবস্থায় পৃথিবীর অধিকাংশ প্রাণই বেঁচে থাকতে পারে না, তবে বেশ কিছু বিজ্ঞানীদের অনুমান শুক্র গ্রহের ওই আম্লিক পরিবেশে কিছু বায়বীয় জীবাণুর বেঁচে থাকা সম্ভব। বেঁচে থাকতে অক্সিজেন প্রয়োজন হয় না, একমাত্র এমন বাস্তুতন্ত্রের প্রাণীরাই ফসফিন উৎপন্ন করে। আবার শুক্র গ্রহের মাটিতে যে অক্সিজেন রয়েছে, এটিও পরীক্ষিত। অনুমান করা হচ্ছে ওই গ্রহে অনবরত ফসফিন তৈরি হচ্ছে, আবার অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে তা অনবরত ধ্বংসও হয়ে যাচ্ছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Venus