এক বন্ধ্যা নারীর বৃক্ষ মাতা হয়ে ওঠার গল্প

Last Updated:

থিম্মাক্কার কোনও স্কুল-কলেজের শিক্ষা নেই । আর পাঁচজন দরিদ্র ভারতীয় নারীর মতো শ্রমিক ছিলেন তিনি।

Shalini Datta
#বেঙ্গালুরু: ২৫ বছর বিবাহিত জীবনের পরেও থিম্মাক্কা কোনও সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি । আজও সমাজে প্রচলিত আছে সন্তান না হলে কোনও নারী পূর্ণ হয় না। তাই সমাজ তাকে এক ঘরে করে দিয়েছিল । কিন্তু থিম্মাক্কা দুর্বল হয়ে পড়েন নি সমাজের প্রতি নিয়েছিলেন এক মধুর প্রতিশোধ।
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের গুব্বি তালুকের বাসিন্দা বেকাল চিক্কাইয়ার সঙ্গে থিম্মাক্কার বিয়ে হয়েছিল। তাদের সন্তান না হওয়ায় সেই দুঃখ ভুলে থাকতে তিনি এবং তার স্বামী সিদ্ধান্ত নেন যে তারা প্রচুর গাছ লাগাবেন। এবং সন্তানের মত তাদের যত্ন করে বড় করবেন । থিম্মাক্কার কোনও স্কুল-কলেজের শিক্ষা নেই । আর পাঁচজন দরিদ্র ভারতীয় নারীর মতো শ্রমিক ছিলেন তিনি। ভূমি হীন দিনমজুর এই দম্পতির কোনও সন্তান না থাকায় সমাজ তাদের বর্জন করেছিল। কথা বলার সমস্যা থাকায় চিক্কাইয়াকে সবাই বলতো তোতলা চিক্কাইয়া। সমাজবিচ্যুত একলা দিনগুলোতে বিষন্ন মনে তারা সমাজকে একটা যথাযথ জবাব দেওয়ার কথা ভাবতেন। তখনই তাদের মাথায় আসে গাছ লাগানোর কথা।
advertisement
advertisement
প্রথম বছরে ১০টি, দ্বিতীয় বছরে ১৫টি, তৃতীয় বছরে ২০টি বট গাছের চারা লাগান। এই সময় কচি চারা গুলো দেখাশোনা করার জন্য চিক্কাইয়া দিনমজুরের কাজ ছেড়ে দেন। থিম্মাক্কার রোজগারে সংসার চলত, আর বাড়ি ফিরে তিনি স্বামীর সঙ্গে হাত লাগাতেন। প্রতিদিন প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তারা এই চারা গাছগুলোকে, জল দিতেন, গরু ছাগলের কাছ থেকে বাঁচার জন্য তারা কাঁটাতারের বেড়াও বানিয়ে দেন। তাদের গ্রাম হুলিকাল থেকে কুদুর পর্যন্ত ২৮৪টা বটগাছ লাগিয়েছিলেন। প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছগুলি তাদের ভালোবাসার নিদর্শন।
advertisement
১৯৯১ সালে থিম্মাক্কার স্বামী মারা যান কিন্তু তিনি তাতেও দমে যাননি একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন। যে সমাজ তাদের এক ঘরে করেছিল তারাই এখন থিম্মাক্কার কাজের প্রতি সম্মান দেখিয়ে গ্রামবাসিরা তাকে 'সালুমারাদা' বলে ডাকে। কন্নড় ভাষায় যার মানে' গাছেদের শাড়ি'।
স্থানীয়দের মাধ্যমে তার কথা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ১৯৯৬ সালে তিনি' জাতীয় নাগরিক সম্মান' পান এবং তার কথা গোটা দেশ জানতে পারে। কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে তার গাছগুলি দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে কর্ণাটক সরকার। তবে তিনি বলেন সন্তানদের নিজে পালন করলেই তিনি বেশি খুশি হতেন। ২০১৬ সালে একটি নামজাদা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের বিচারে ১০০ জন প্রভাবশালী নারীদের তালিকার মধ্যে তার নামও জায়গা করে নিয়েছে ।আন্তর্জাতিক স্তরে এর উদ্যোগে বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় থিম্মাক্কা ফাউন্ডেশন তৈরি হয়েছে।
advertisement
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ৮০ বছরে প্রায় আট হাজার গাছ তাদের সন্তানের মতো বড় করে তুলেছেন ১০৬ বছরের এই বৃক্ষ মাতা। এবার তিনি ভারতে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হয়েছেন পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নের কারণে। এছাড়াও তিনি অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছেন।
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
এক বন্ধ্যা নারীর বৃক্ষ মাতা হয়ে ওঠার গল্প
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement