হোম /খবর /নদিয়া /
জানুন রামায়ণের বাংলা অনুবাদক কৃত্তিবাস ওঝার সম্পর্কে বিভিন্ন কাহিনী

Nadia News- রামায়ণের বাংলা অনুবাদক কৃত্তিবাস ওঝার শান্তিপুরের বাড়িতে তৎকালীন সময়ে দূরদূরান্ত থেকে আসতেন বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকরা

জানা যায় এই বট বৃক্ষের নীচে বসেই কৃত্তিবাস ওঝা রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন

জানা যায় এই বট বৃক্ষের নীচে বসেই কৃত্তিবাস ওঝা রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন

শান্তিপুর এবং ফুলিয়া স্টেশনের মধ্যবর্তী কবি কৃত্তিবাসের জন্ম ভিটায়, তার জন্মতিথিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন তৎকালীন সময়ে সারা রাজ্যের খ্যাতনামা কবি সাহিত্যিকরা

  • Hyperlocal
  • Last Updated :
  • Share this:

#নদিয়া: রামায়ণ রচনা করেন বাল্মিকী, কিন্তু রামায়ণের প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কবি কৃত্তিবাস। রামায়ণ বালি কান্ড, অযোধ্যা কান্ড, কিস্কিন্ধ‍্যা কান্ড, সুন্দরা কান্ড, লংঙ্কা কান্ড, এবং উত্তরাকাণ্ড এই কয়েকটি ভাগে বিভক্ত।

কবি কৃত্তিবাসের জন্মসাল সম্পর্কে নানান অভিমত থাকলেও আনুমানিক ৩৮১ খ্রিস্টাব্দ এবং মৃত্যু ১৪৬১ সাল হিসেবে ধরা হয়। আরও কিছু লেখা থেকে জানা যায়, তার পিতার নাম বনমালী, মাতা মালিনী, ছয় ভাই যার মধ্যে এক বৈমাত্রেয়, বোনও ছিলেন। তবে কবি কৃত্তিবাস ওঝার, পদবীটি লোকমুখে বিকৃত হয়। তিনি রাঢ় দেশীয় ব্রাহ্মণ।

বিভিন্ন ভাষায় রামায়ণের অনুবাদ হলেও, বাংলায় অনুবাদ সর্বশেষ্ঠ বলে মানেন পৃথিবীর সকল কবি সাহিত্যিকরা। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি, রামায়ণের অনুবাদ বাদেও শ্রীরাম পাঁচালীর রচয়িতা। তবে সে সময়ের রামায়ণ অনুবাদের মূল পান্ডুলিপি, এমনকি পরবর্তীতে প্রকাশিত দুটি প্রকাশনার নিদর্শনও পাওয়া যায় না ভারতের জাতীয় লাইব্রেরীতে। অনেকেই অনুমান করেন, অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান জিনিসপত্রের মত পরাধীন ভারত থেকে ইংরেজদের অধীনস্থ হয়, তবে এক্ষেত্রে সে সময় চন্দননগরে ফরাসিদের উপনিবেশ স্থাপিত ছিল এবং জলপথে যাতায়াত চলত। তাই বর্তমান ফ্রান্সে একটি মুদ্রণের সংরক্ষণ আছে বলে খোঁজ খবর পাওয়া গেছে।

স্বাধীনতার পরবর্তী কালে তৎকালীন রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে হাজার ১৯৬০ সালে ফুলিয়ায় তার জন্মভিটেতে এক বিঘে জমি অধিগ্রহণ করে গড়ে উঠেছিলো কৃত্তিবাস এবং রামায়ণ সম্পর্কে পরবর্তীতে নানান কবি সাহিত্যিকের লেখা তথ্য সংগ্রহশালা। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পার হয়ে যাওয়ার পরেও তা উদ্ধারের কোনরকম সদিচ্ছা বিগত বা বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি বলেই অভিমত পোষণ করেন কবি সাহিত্যিকগণ। তবে ১৮০২-০৩ সালে শ্রীরামপুর থেকে সর্বপ্রথম পাঁচ খন্ড মুদ্রিত হয়, এরপর জয়গোপাল তর্কালঙ্কারের সম্পাদনা ১৮৩০ - ৩৪ সালে দুই খন্ডে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয় বলেই সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে।

সম্প্রতি কয়েক বছর আগে, আধুনিক মাইক্রো ফিল্মের মাধ্যমে একটি সংস্করণ তাঁর কাব্য রচনাস্থান, নদিয়ার ফুলিয়ায় তার সমাধিস্থলে গড়ে তোলা সংগ্রহশালায় সুরক্ষিত আছে। কথিত শান্তিপুর এবং ফুলিয়া স্টেশনের মধ্যবর্তী কবি কৃত্তিবাসের জন্ম ভিটায় তার জন্মতিথিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন তৎকালীন সময়ে সারা রাজ্যের খ্যাতনামা কবি সাহিত্যিকরা। আর সেই কারণেই পূর্ব রেল স্থাপনের পর ওই এলাকায় ট্রেন দাঁড়াতো আগতদের পৌঁছানোর জন্য। স্টেশন না থাকার কারণে ট্রেন থেকে বেঞ্চের উপর নেমে মাটিতে পদার্পণ করতেন তারা। একবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে একটি শুভেচ্ছা বার্তা আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে পাঠিয়ে ছিলেন। যেটা পরবর্তীকালে বইয়ের পৃষ্ঠায় ছাপা হলেও মূল লেখাটিরও কোন হদিশ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

Mainak Debnath
Published by:Samarpita Banerjee
First published:

Tags: Nadia, Ramayana