"ম্যানিফোল্ড রুম" দিয়েই তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার পরিকল্পনা মেদিনীপুর মেডিক্যালের

Last Updated:

আগামী সোমবার তাঁরা এসে প্রাথমিক কাজ শুরু করে দেবেন। এই রুম থেকে ১০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ডের তিনটি তলাতেই সেন্ট্রাল পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন যাবে।

#পশ্চিম মেদিনীপুর: "ম্যানিফোল্ড রুম" দিয়ে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার পরিকল্পনা মেদিনীপুর মেডিক্যালের।শিশুদের জন্যও পৃথক ওয়ার্ড তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে এই কারণে।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে "অক্সিজেন-সঙ্কট" যখন চরমে পৌঁছেছিল; পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সমেতপ্রতিটি জেলাতেই "অক্সিজেন প্ল্যান্ট" বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্যর তরফে যৌথভাবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ছটি প্ল্যান্ট হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তাবিত প্ল্যান্ট গুলি ছিল যথাক্রমে- মেদিনীপুর মেডিক্যালে দুটি এবং খড়্গপুর, ঘাটাল, ডেবরা ও শালবনী হাসপাতালে একটি করে। এর মধ্যে, মেদিনীপুর মেডিক্যালে এসে পরিদর্শক দল জায়গাও চিহ্নিত করে গিয়েছিলেন। তবে, তারপর প্রায় মাসখানেক কেটে গেলেও আর কোনো সাড়া শব্দ নেই! এদিকে, দ্বিতীয় ঢেউ নিম্নমুখী হয়েছে ইতিমধ্যেই।তারই মাঝে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। প্রস্তুত হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। তবে, অক্সিজেন প্ল্যান্টের বিষয়ে জিজ্ঞেস করায় সদুত্তর মেলেনা কোনও পক্ষের কাছ থেকেই! জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সংস্থা "ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন" (DRDO) এর পক্ষ থেকে এই প্ল্যান্ট বসানোর কথা ছিল এবং রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর (PHE) ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আংশিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু, এই মুহূর্তে অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার কোনও বার্তা নেই! রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানিয়েছেন, "এই বিষয়ে যেটুকু জানতে পেরেছি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ওই সংস্থার অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই।" তবে, ঝাড়গ্রাম জেলায় প্ল্যান্টের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানা গেছে।
advertisement
অপরদিকে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, "আমাদের এখানে প্রস্তাবিত দুটি প্ল্যান্টের কাজ যৌথভাবে ডিআরডিও এবং রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের করার কথা ছিল। প্রযুক্তিগত প্রধান বিষয়টি বা প্ল্যান্টটি কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থার পক্ষ থেকে করার কথা এবং পরিকাঠামোগত বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের দেখার কথা। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও, কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে কোনও বার্তা পাইনি। জানিনা কবে হবে, কিংবা আদৌও হবে কিনা! হবেনা ধরে নিয়েই, আমাদের নতুন যে ১০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে সেজন্য অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে সেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।" কিন্তু, কি সেই ব্যবস্থা? ডাঃ কুন্ডু জানালেন, "আমরা ম্যানিফোল্ড (Manifold Room) রুম তৈরি করছি। এটা পোশাকি নাম, একে আপনারা সহজভাবে অক্সিজেন জেনারেটর সিস্টেম বলতে পারেন। তৈরি করছে রাজ্যের সিটকো নামে সংস্থা। প্রাথমিক ভাবে সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।
advertisement
advertisement
আগামী সোমবার তাঁরা এসে প্রাথমিক কাজ শুরু করে দেবেন। এই রুম থেকে ১০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ডের তিনটি তলাতেই সেন্ট্রাল পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন যাবে। বড় বড় সিলিন্ডার থেকে কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে অনেক দ্রুত অক্সিজেন পাঠানো সম্ভব হবে। পরবর্তী সময়ে মেডিসিন ওয়ার্ডের জন্য এরকম আরও একটি ম্যানিফোল্ড রুম তৈরির পরিকল্পনা আছে।" সংক্রমণ তো কমছে, তাহলে ১০০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড তৈরি হবে কবে? ডাঃ কুন্ডু জানিয়েছেন, "এখনও সংক্রমণ সম্পূর্ণভাবে চলে গেছে বলা যাবেনা! তার থেকেও বড় কথা তৃতীয় ঢেউয়ের কথা ভেবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এই ঢেউ কোনোভাবে সামাল দেওয়া গেছে, কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ে আরও কমবয়সীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি।" জানা গেল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের বিধান ব্লকে নতুন যে ১০০ শয্যার ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে, সেখানে ২০ টি আইসিসিইউ (ICCU), ১০ টি এইচডিইউ (HDU) বেড থাকবে। এছাড়াও, থাকবে শিশুদের জন্য পিকু (PICU- Pediatric Intensive Care Unit) এবং নিকু (NICU- Neonatal Intensive Care Unit)। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু জানিয়েছেন, "১২ টি পিকু থাকবে। ১০ টি এনআইসিইউ তো আমাদের আছেই। ফলে, করোনা আক্রান্ত নবজাতকদের সাথে সাথে, শিশুদেরও উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে। যদিও, এই মুহূর্তে জেলার মধ্যে একমাত্র এখানেই সঙ্কটজনক শিশুদেরও সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমাদের পেডিয়াট্রিক বিভাগ অত্যন্ত উন্নত মানের। অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা আছেন। আরও কয়েকজন যুক্ত হবেন।" এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, শিশুদের মধ্যে এই মুহূর্তে, MIS বা মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম (Multisystem Inflammatory Syndrome) নামে একটি রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। কলকাতার পার্ক সার্কাসের একটি হাসপাতালে ১ টি শিশুর মৃত্যুও হয়েছে কয়েকদিন আগে।
advertisement
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেও এরকম একজন শিশু চিকিৎসাধীন ছিল, এই মুহূর্তে সেই শিশু সুস্থ হয়ে উঠছে! তৃতীয় ঢেউয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজই যে বড় ভরসা হতে চলেছে, তা জানিয়েছেন রাজ্যের সহকারী স্বাস্থ্য অধিকর্তা তথা ও.এস.ডি ডাঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীও। তিনি বললেন, "মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের বিধান ব্লকে যে নতুন করোনা ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে, সেখানে করোনা সংক্রমিত নবজাতক ও শিশুদের জন্য উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা থাকবে।" জেলার জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, "যত দ্রুত এই ওয়ার্ড তৈরি হয়, সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।"
advertisement
পার্থ মুখোপাধ্যায় 
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
"ম্যানিফোল্ড রুম" দিয়েই তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার পরিকল্পনা মেদিনীপুর মেডিক্যালের
Next Article
advertisement
Durga Puja Weather Update: নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়
নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন ! সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস? বৃষ্টি কতটা হতে পারে
  • নবমীর রাত থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন !

  • তার আগে সপ্তমী-অষ্টমীতে কী পূর্বাভাস?

  • বৃষ্টি কি বাধ সাধবে ঠাকুর দেখায়

VIEW MORE
advertisement
advertisement