Pujo special: খড় নয়, পাটের সুতো দিয়েই রাজশেখরের হাতে তৈরি সপরিবারে দুর্গা তাঁক লাগিয়েছে জলপাইগুড়িতে
- Published by:Pooja Basu
Last Updated:
কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর মূর্তিও গড়েছেন (Durga Puja idol) রাজ। সঙ্গে অবশ্যই তাঁদের বাহন। ছোট ছোট কাজগুলো খুব নিপুণভাবে করেছেন গোস্বামীবাড়ির
জলপাইগুড়ি: নতুন জামাকাপড়, শিউলির গন্ধ, ধুনুচির ধোঁয়া, ঢাকের আওয়াজ! এসব জানান দেয় বাঙালির শ্রেষ্ঠ শারদীয়া উৎসবের। আবেগে ভাসমান বাঙালির কাছে এই চারটে দিন যেন নতুন অক্সিজেন (Oxygen)। এই পুজো যেমন জানান দেয় আনন্দের, তেমনি জানান দিয়েছে নতুন নতুন প্রতিভার।
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বুকে নিবেদিতা সরণীতে মা বাবার সঙ্গে থাকেন রাজ। পুরো নাম রাজশেখর গোস্বামী। ছোটবেলা থেকে আঁকা এবং অন্যান্য হাতের কাজের প্রতি ঝোঁক তাঁর। তবে এবার তাঁক লাগিয়েছেন পাটের সুতো দিয়ে দেবী দুর্গাকে বানিয়ে। একা হাতেই কাঠামো তৈরি থেকে দুর্গার মুখ, গয়না, বাহন ইত্যাদি তৈরির কাজ সামলেছেন। তবে বাদ পড়েনি সন্তান-সন্ততিরা। কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর মূর্তিও গড়েছেন রাজ। সঙ্গে অবশ্যই তাঁদের বাহন। ছোট ছোট কাজগুলো খুব নিপুণভাবে করেছেন গোস্বামীবাড়ির ছোট ছেলে।
advertisement
advertisement
রাজশেখর ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering)-এর মাস্টার ডিগ্রি (Masters Degree) পাশ করেছে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি আঁকিবুকি ও হাতের কাজের শখ যেন তাঁর অন্দরে। নিউজ ১৮ লোকাল (News 18 Local)-কে তিনি বলেন, 'গতবছর থেকে কোভিডের কারণে বিশ্বে সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই বাড়িতেই পুজো উপভোগ করতে প্রথবার মূর্তি তৈরি করি। এমনকি নিজের হাতে সাজিয়ে পুজোর চারদিন আনন্দ করি। সেই মূর্তি একটি অনলাইন (online) প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান পায়। পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়ে এই কাজ আমার নেশা বলা যায়। কাগজ কেটে বিভিন্ন ধরণের মডেল (model) বানিয়েছি। আর্টিস্ট ক্লে (Artist clay) ব্যবহার করে অনেককিছু বানিয়েছি।'
advertisement
এই বছরের মূর্তির (Durga Idol) বিশেষত্ব জিজ্ঞেস করায় তিনি আমাদের বলেন, 'আমি এবছর তার, চটের সুতো, পাট ও মাটি দিয়ে তৈরি করেছি। প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লেগেছে এটা তৈরি করতে। এছাড়া দেবী অলংকার এবং নানান অস্ত্র আমি নিজের হাতে জরি, চুমকি ও ফয়েল পেপার কেটে বানিয়েছি। এবছর সরস্বতী পুজোতেও নিজের হাতে মূর্তি গড়ে পুজা করি।'
advertisement
কিছু জিনিস বানালে তা সংরক্ষণ করার ইচ্ছে সবার থাকে। তাঁর কী ইচ্ছে? কীভাবে সংরক্ষণ করবেন নিজের বানানো মূর্তি। উত্তর আসে, 'কাঠের বাক্স বানিয়ে খুব যত্নসহকারে মূর্তিটা রেখে দেব। আমার কাছে এটা একটা প্রাপ্তি। কারণ বাইরে না বের হলেও আমি দুর্গাপুজো মিস (miss) করব না।'
রাজের বাবা চন্দ্র শেখর গোস্বামীও এসব কাজে পটু। তাঁর তৈরি ছোট টোটো, নৌকো যেন তাঁর প্রতিভার জানান দেয়। তিনি জানান, ছেলের প্রতিভাকে বরাবরই তিনি বাহবা দিয়ে এসেছেন। তাঁর পাশে থেকেছেন। কাজ করার উৎসাহ জুগিয়েছেন এবং আগামীতেও তাঁর সবরকম কাজে থাকবেন। মা স্বপ্না গোস্বামীর একটি বিউটি পার্লার রয়েছে। তিনি বলেন, 'হাজার কাজ থাকা সত্ত্বেও ছেলের কাজ দেখেছি। ওঁ ভীষণ মনোযোগী এসব কাজে। যত্নসহকারে সবকিছু বানায়। ঘরজুড়ে ওঁর কাজ দেখতে পাওয়া যায়। বড় ছেলে রামপুরহাটে থাকে। সেখান থেকে ফোনে ছোট ছেলেকে ভীষণভাবে মানসিক দিক দিয়ে সাহায্য করেছে।'
advertisement
রাজশেখর বলেন, 'দাদা ফার্মাসি কলেজের প্রফেসর। তাঁর হাতে সময়ই থাকে না। তবে সময় করে আমাকে ফোন করা, আমার কাজের খোঁজখবর রাখা, সবই চলতে থাকে।' মূর্তি গড়ার সরঞ্জাম থেকে গয়না বানানোর উপকরণ, সবকিছু বাজারে গিয়ে নিজে কিনে নিয়ে এসেছিলেন রাজ। রাত জেগে, ভোরে উঠে, চরম উৎসাহের সঙ্গে কাজ শেষ করেন। এবার অপেক্ষা মায়ের (Durga Puja 2021) আগমণের। বাড়িতে খুব সাধারণভাবেই পূজিত হবেন তিনি। অঞ্জলি দেওয়া হবে না যদিও, তবে ঘরেই থাকবে দেবী দুর্গা (Durga Puja)।
advertisement
শিল্প ও শিল্পীকে আরও উৎসাহ জোগাতে বাহবা দিয়েছেন পাড়া-প্রতিবেশীরাও। রাজের এই কাজে শুধুমাত্র তাঁর পরিবার ও কাছের লোক গর্বিত নন। গর্বিত গোটা জলপাইগুড়ি, গর্বিত গোটা উত্তরবঙ্গ।
ভাস্কর চক্রবর্তী
view commentsLocation :
First Published :
October 07, 2021 7:47 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/Local News/
Pujo special: খড় নয়, পাটের সুতো দিয়েই রাজশেখরের হাতে তৈরি সপরিবারে দুর্গা তাঁক লাগিয়েছে জলপাইগুড়িতে