খুব রাগ হয়েছে। মাথা ঠাণ্ডা হওয়ার নামই নেই। তখন যদি বাবা-মা বা কাছের মানুষ একটু জড়িয়ে ধরে, সঙ্গে সঙ্গে রাগ গলে জল! আসলে জড়িয়ে ধরলেই মনে হয়, সেই সাপোর্টটা পাওয়া গিয়েছে, যেটা দরকার ছিল। আর বড়দের মতোই বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও এটা কার্যকরী। সমীক্ষা বলছে, সারা দিনে ৭ থেকে ৮ বার আলিঙ্গন (hug) প্রয়োজন একজন মানুষের।
কাউকে ভালোবাসলে বা সৌজন্যতার খাতিরে আলিঙ্গন করা একরকম প্রথার মধ্যে পড়ে। বিশেষ করে সমবয়সী, বন্ধু বা স্নেহের কোনও মানুষের ক্ষেত্রে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আলিঙ্গন করলে তারা সব চেয়ে বেশি খুশি হয়। একটু খুনসুটি, একটু আলিঙ্গন তাদের বিকাশেও বিরাট প্রভাব ফেলে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
বাচ্চাদের বিকাশে ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে আলিঙ্গন
বাচ্চাদের স্মার্ট বানাতে আলিঙ্গন প্রয়োজন একটি বাচ্চার সমগ্র বিকাশে স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ক্ষেত্রে জ্ঞানের বিকাশ বা ব্রেন ডেভেলপমেন্টও পড়ে। ২০১৬ সালে ইউরোপের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি দিন নিজের সন্তানকে আলিঙ্গন করলে বা তাদের স্কিন কনট্যাক্টে এলে স্টিমুলেশন (Stimulation) হয়। যা জ্ঞানের বিকাশে ও ব্রেন ডেভেলপমেন্টে (Brain Developement) সাহায্য করে। খিটখিটে বাচ্চাদের মেজাজ ঠিক করে|
বাচ্চা খিটখিটে হলে অনেক সময়ে কোনও বিষয় তাকে বোঝানো, খাওয়ানো বা ঘুম পাড়ানোতে সমস্যা হয়। মেজাজ খারাপ বুঝতে পারলে তাকে যদি আলিঙ্গন করা হয়, একটু আদর দেওয়া হয়, তা হলেই মেজাজ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। তার কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আলিঙ্গন করলে শরীরে অক্সিটসিন (Oxytocin) নামে একটি হরমোনের নিঃসরণ হয় যা লাভ হরমোন (Love Hormone) নামে পরিচিত। যা তাদের মাথা ঠাণ্ডা করে, তাদের শরীরকে রিল্যাক্স করিয়ে ভালোবাসা উপলব্ধি করায়।
সুস্থ হতে সাহায্য করে,অনেকেই বিশ্বাস করেন, আবার অনেকেই করেন না। কিন্তু আলিঙ্গন কোনও কোনও ক্ষেত্রে ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে কাজ করে। কোনও বাচ্চা অসুস্থ হলে তাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোলেই অনেক সময় অর্ধেক অসুখ ঠিক হয়ে যায়। অনেকেই বলে থাকেন, বাচ্চাদের জড়িয়ে ধরে শুলে তারা সাপোর্ট পায়। মানসিক দিক থেকেও ভালো থাকে।
বা.চ্চাকে আনন্দ দেয় ও প্রাণোচ্ছ্বল করে তোলে বাচ্চারা হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছ্বল থাকবে, সেটাই তো ভালো লাগে! বাচ্চাদের আলিঙ্গন করলে তারা কিন্তু হাসিখুশি, প্রাণোচ্ছ্বল থাকে। ভালোবাসা অনুভব করতে পারে। যা বাচ্চাদের বিকাশে সাহায্য করে। বাবা-মায়ের সঙ্গে বন্ড মজবুত করে>
বাবা-মায়ের সঙ্গে স্ট্রং বন্ড (Strong Bond) থাকা বাচ্চাদের পক্ষে খুব জরুরি। এতে তারা যেমন বাবা-মায়ের সঙ্গে সব কিছু শেয়ার করতে পারে, তেমনই তারা বোঝে যে বাবা-মা সব সময়ে পাশে রয়েছেন। সমীক্ষা বলছে, বাচ্চাদের আলিঙ্গন করা এই বন্ড আরও শক্ত করে। যা বাচ্চাদের বিকাশে খুবই ভালো প্রভাব ফেলে।নিয়মানুবর্তী হয় |
অনেকে অভিভাবকই ভাবেন যে বাচ্চাদের বকলে, মারলে বা শাসন করলে হয় তো তারা কথা শোনে বেশি, নিয়মানুবর্তী হয় বেশি। কিন্তু সমীক্ষা বলছে, ব্যাপারটা একেবারেই উল্টো। বাচ্চাদের বোঝালে, আলিঙ্গন করলে তারা ইমোশনালি নিয়ে নেয় বিষয়টি এবং তা আদতে তাদের বেশি নিয়মানুবর্তী করে তোলে।