#কলকাতা: আগেই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ঘোষণা করেছিল অফিস৷ এরপর সরকারিভাবে লকডাউনের ঘোষণা৷ অর্থাৎ মোটের ওপর সপরিবারে গৃহবন্দী অনেক পরিবারই৷ বাড়ির বড়রা তো বুঝছেন এই অশণি সঙ্কেতের কথা৷ কিন্তু ছোটরা তো ছুটির আনন্দে ভাসছে৷ তবে ঘনঘন করোনা নিয়ে আলোচনায় তারাও বুঝেছে যে ভয়ঙ্কর বিপদ রয়েছে বাইরে গেলেই৷ অতএব কোনও ভাবেই বাইরে বেড়িয়ে খেলা নয়, পুরোটাই ঘরের ভিতর, বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকছে তারাও৷ এই আপনি কোনক্রমে তো দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন৷ এদিকে আপনার পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যদের দিনগুলো কিভাবে কাটবে? করোনা নিয়ে আমরা ভয় পাবো, সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করব, কিন্তু বাড়ির বাচ্চাকে কিভাবে নানা রকম যথাযথ কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখবেন মা এবং পরিবারের বাকি সকলেরা সেটাই জানাচ্ছেন ডঃ যশোধারা চৌধুরি (শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ)৷
বেশিরভাগ বাচ্চারা টেক-স্যাভি৷ অযথা ঝামেলা এড়াতে বাবা-মায়েরও প্রবণতা থাকে তাদের হাতে মোবাইল বা নোটপ্যাড তুলে দেওয়া৷ তবে যে সময় বাড়ির সকলে উপস্থিত থাকছেন তখন নিয়মিত অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটতেই পারে৷ বাবা-মা হিসেবে আপনার প্রথম কাজ হল সেটার সময় অত্যন্ত কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা৷
১) বাচ্চার বয়স যদি ৪ বছরের ওপর হয় তাহলে তাকে আপনার সকল কাজের সহকারী বানিয়ে নিন৷ ঘর পরিষ্কার থেকে আরম্ভ করে গাছের যত্ন করা, রান্নার সামগ্রী এগিয়ে দেওয়া সবেতেই৷ খেয়াল রাখুন যে ছোট বলে যেন তাকে এই সব কাজে অমর্যাদ না করা হয়৷ বুঝতে দিন যে সেও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছ৷ এর থেকে তার দায়িত্ববান হওয়ার প্রথম শিক্ষাটি সে পেয়ে যাবে৷ আরেকটা জিনিসের ওপর জোর দেওয়া যেতে পারে তা হল sensory play৷ নানা রকমের খেলা যেমন মাটি,ময়দার গোলা, slime, কিনেটিক sand দিয়ে৷ এই খেলা ঘিরে নানা রকম গল্প গড়ে তোলা যেতে পারে৷ সন্তানের সঙ্গে বসে নিজেও খেলুন এমন খেলা৷ অনাবিল আনন্দ পাবেন৷ শুরু করতে পারেন একসাথে গল্পের বই পড়া৷ এতেই দেখবেন দুদিন পর মোবাইলর চাইছে না৷
২) যাদের বয়স ৭ বছরের ওপরে তাদেরকে নিয়মিত খেলতে দিন৷ Chess দিয়ে শুরু করতে পারেন৷ কিছু শারীরিক পরিশ্রমের খেলাও যেরকম একটু গান চালিয়ে ম্যাচিং স্টেপ অথবা যোগা করাতে পারেন৷ গল্প বই পড়া এবং তার বিশ্লেষণ নিয়ে সবাই একসাথে মজার ছলে বসতে পারেন৷
৩) ১০ বছরের ওপর যারা তাদেরকে দিন বাড়তি দায়িত্ব৷ বাড়িতে সবাই হাত ধুচ্ছে কিনা , এরা নজরে রাখুক৷ এতে দায়িত্ববোধের সঙ্গে বাড়বে দক্ষতাও৷ যারা আছে বয়োসন্ধিক্ষণে তাদেরকে সামলানো বেশি মুশকিল৷ বিশেষত যদি মোবাইলের আসক্তি থাকে৷ বাড়ির কাজের যোগদান আবশ্যিক করুন৷ একটি বিশেষ কোনও দায়িত্ব দিতে পারেন৷ ভাল গল্পের বই দিতে পারেন৷ একসঙ্গে সিনেমা দেখুন সেটা সত্যজিৎ থেকে হিচকক যা খুশি হোক না৷ শেষে আসা যাক খাওয়া-দাওয়ার কথায়৷ বাড়িতে তৈরি হালকা পাতলা খাওয়ার দিন৷ সেটা হোক প্রোটিন যুক্ত৷ একটু রঙিন করে তুলুন স্যালাড ও মরশুমি ফল ও তরকারি দিয়ে৷ বাড়িতে বানানো লেবুর জল একটু সাজিয়ে মকটেল হিসেবে দিন৷
৪) এছাড়াও যাদের সন্তানরা অটিজম বা ADHD-র শিকার, এই মুহূর্তে সমস্ত থেরাপি বন্ধ৷ অভিভাবকদের দিশেহারা অবস্থা৷ খুব অসহায় অবস্থায় যোগাযোগ করুন আপনাদের শিশুর থেরাপিস্টদের সঙ্গে৷ তাদেরকে এক সপ্তাহ করে হোমপ্ল্যান করে দিতে বলুন৷ সেই অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যান বাড়িতে৷
সবশেষ ডঃ চৌধুরি জানাচ্ছেন যে 'ভালো থাকুন, সাবধানতা অবলম্বনে ত্রুটি রাখবেন না৷ অযথা ভয় পাবেন না৷ বাড়িতে সন্তানের সঙ্গে পাওয়া সময় সুন্দর ভাবে কাটান৷ সময় কঠিন, কিন্তু ভরসা রাখুন, ভোরের উদয়ও অবসম্ভাবী৷'
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Corona Virus, StayHome, করোনা ভাইরাস