বেঙ্গালুরু: অনেকেই হার্নিয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু এই হার্নিয়া আসলে কী? অনেক সময় দেহের ভিতরের কোনও অংশের দুর্বলতা অথবা ত্রুটির কারণে পেটের পেশির প্রাচীর ঠেলে বেরিয়ে আসে। সেটাকেই হার্নিয়া বলা হয়। বুক এবং পশ্চাদ্দেশের মধ্যবর্তী অংশেই সাধারণত হার্নিয়া হতে পারে। এর তেমন উপসর্গ চোখে পড়ে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুবই কম উপসর্গ দেখা যেতে পারে। আবার রোগী যখন শুয়ে থাকেন, তখন সেই স্ফীত অংশ বা লাম্প ভিতরে ঢুকে যেতে পারে, এমনকী পুরোপুরি গায়েবও হয়ে যেতে পারে। তবে কাশি অথবা চাপাচাপি হলে স্ফীত অংশটি ফের উপস্থিত হতে পারে। হার্নিয়া আসলে অনেক ধরনের হতে পারে। তা নিয়েই আলোচনা করছেন বেঙ্গালুরুর ইলেকট্রনিক সিটির কাবেরী হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অফ গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি এবং জেনারেল সার্জারির প্রধান ডা. শ্রীধারা ভি।
ইংগ্যুইনাল হার্নিয়া:
যখন কুঁচকিতে ফ্যাটি টিস্যু অথবা অন্ত্রের একটা অংশ স্ফীত হয়ে দেখা দেয়, তখন সেটাকেই ইংগ্যুইনাল হার্নিয়া বলা হয়। সব থেকে সাধারণ এই হার্নিয়া মূলত যে কোনও বয়সের পুরুষদের দেহেই হতে পারে।
আরও পড়ুন: সংসারে নেমে আসবে ঘোর অন্ধকার! সকালে ঘুম থেকে উঠে ভুলেও দেখবেন না এই ১০ জিনিস
ফিমোরাল হার্নিয়া:
ইংগ্যুইনাল হার্নিয়ার মতো অতটাও সচরাচর দেখা যায় না। যখন ফ্যাটি টিস্যু অথবা অন্ত্রের কোনও একটা অংশ কুঁচকি দিয়ে থাইয়ের উপরের দিকের ভিতরের অংশে স্ফীত হয়, তখন তাকে ফিমোরাল হার্নিয়া বলা হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রেই এটা দেখা যায়।
আম্বিলিকাল হার্নিয়া:
সাধারণত নাভির আশাপাশেই এই হার্নিয়া হয়ে থাকে। শিশুদের পেটের যে অংশ দিয়ে আম্বিলিকাল কর্ড যায়, সেই অংশটা জন্মের পর বন্ধ করা না-হলে আম্বিলিকাল হার্নিয়া হতে পারে। আর প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে আবার ওবেসিটি এবং প্রেগনেন্সির মতো অবস্থার কারণেও এই হার্নিয়া হতে পারে।
এই চারটি ছাড়াও আরও নানা ধরনের হার্নিয়া রয়েছে। সেগুলির বিষয়েই দেখে নেওয়া যাক।
ইনসিশনাল হার্নিয়া:
এক্ষেত্রে পূর্বের সার্জিক্যাল ক্ষতর মাধ্যমে লাম্প তৈরি হয়।
এপিগ্যাস্ট্রিক হার্নিয়া:
এক্ষেত্রে নাভি এবং বুকের খাঁচার নিচের দিকের অংশের মধ্যে ফ্যাট টিস্যু ঠেলে বেরিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ কাটবেন অথচ চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল পড়বে না! এই সহজ উপায়গুলি ম্যাজিকের মতো কাজ করবে
ডায়াফ্র্যাগমেটিক হার্নিয়া:
গর্ভে থাকাকালীন কোনও শিশুর ডায়াফ্রাম ঠিকমতো গঠন না-হলে এমনটা হতে পারে। আবার প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অনেক সময় আঘাত লাগার কারণে এই হার্নিয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে আসলে পেটের ভিতরের কোনও অঙ্গ ডায়াফ্রামের খোলা অংশের মধ্যে দিয়ে বুকের দিকে চলে যায়।
হায়াটাস হার্নিয়া:
এক্ষেত্রে ডায়াফ্রামের খোলা অংশের উপর চাপ দিয়ে পাকস্থলীর কিছু অংশ বুকের দিকে ঠিক খাদ্যনালীর পাশেই চলে আসে। প্রাপ্তবয়স্ক এবং বয়স্কদেরই মূলত এটা দেখা যায়।
মাসল হার্নিয়া:
এক্ষেত্রে টিস্যুর মধ্যে দিয়ে পেশির কিছু অংশ বেরিয়ে আসে। খেলতে গিয়ে আঘাত লেগে পায়ের পেশিতে এই হার্নিয়া দেখা দিতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
আক্রান্ত অংশ পরীক্ষা করে দেখে তবেই রোগ সনাক্ত করবেন চিকিৎসকেরা। আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানের মাধ্যমে এই রোগ ধরা পড়লে তবেই কীভাবে চিকিৎসা হবে, সেটার পরিকল্পনা করা হয়। এমনকী সার্জারি করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সার্জারিই হয় একমাত্র পন্থা। আর অপারেশনের আগেই রোগীকে এই সংক্রান্ত সব কিছু সম্পর্কে অবগত করানো হয়ে থাকে। অনেক সময় হার্নিয়ার ধরন দেখেও অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আসলে পেটে কিংবা হার্নিয়ার আশেপাশে আচমকা তীব্র ব্যথা হলে অথবা মলত্যাগের সময় অসুবিধা হলে কিংবা হার্নিয়া শক্ত ও বেদনাদায়ক হলে তবেই অপারেশনের কথা ভাবা হয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Health, Health Care Tips, Hernia