হোম /খবর /লাইফস্টাইল /
করোনার থেকেও ছোঁয়াচে ভাইরাসের হানা বিশ্বে ! মানুষ ও পশুদের মধ্যে দ্রুত ছড়াচ্ছে !

করোনার থেকেও ছোঁয়াচে ভাইরাসের হানা বিশ্বে ! শুধু মানুষ নয়, পশুদের মধ্যেও দ্রুত ছড়াচ্ছে !

photo CNN

photo CNN

বিউবোনিক প্লেগের জেরে ইউরোপে ২০ মিলিয়নের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

  • Last Updated :
  • Share this:

ব্ল্যাক ডেথ। কথাটা শুনলে ইতিহাসের পাতা থেকে সেই আতঙ্ক যেন আমাদের আবার ঘিরে ধরে। আর এই আতঙ্কের পিছনে রয়েছে বিউবোনিক প্লেগ। ১৪ শতকে যার জেরে কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল এশিয়া ও ইউরোপ। ইতিমধ্যেই আবার নতুন করে ছড়াতে শুরু করেছে এই রোগ। কিন্তু কী ভাবে শুরু হয়েছিল বিউবোনিক প্লেগের বংশবিস্তার? আসুন ডুব দেওয়া যাক ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায়ে।

ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেই সূত্রে জাহাজের আসা-যাওয়া থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিল এই মারণ রোগ। ১৩৪৭ সালের অক্টোবর, মেসিনার সিসিলিয়ান বন্দরে নোঙর করে ১২টি জাহাজ। হঠাৎই জাহাজে থাকা বেশিরভাগ নাবিকের মৃত্যু হতে শুরু করে। যা দেখে রীতিমতো হতবাক হয়ে যান বন্দরসংলগ্ন অঞ্চলের মানুষজন। যাঁরা বেঁচেছিলেন, তাঁদের শরীরে রক্ত ও পুঁজ বেরোতে থাকা কালো কালো ফোঁড়া দেখা যায়। দিন দিন গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তাঁরা। পরে জানা যায়, বিউবোনিক প্লেগ নামে এক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সিসিলিয়ান বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই মৃত্যু জাহাজগুলিকে বন্দরের বাইরে রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁরা অনেক দেরি করে ফেলেছিলেন। এ দিকে ১৩৪০ সালের শুরুতেই ইউরোপ থেকে ধীরে ধীর চিন, ভারত, সিরিয়া ও ইজিপ্টেও ছড়াতে শুরু করে এই প্লেগ। উল্লেখ্য, বিউবোনিক প্লেগের জেরে ইউরোপে ২০ মিলিয়নের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন জানাচ্ছে যে, এই প্লেগের জন্য দায়ি ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামে এক ব্যাকটেরিয়া। যা সাধারণত ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী বা কীটপতঙ্গের গায়ে দেখা যায়। এই ছোট ছোট প্রাণীগুলি শুঁড়ের মাধ্যমে কুকুর, বিড়াল, ইঁদুরসহ নানা উষ্ণ রক্তের প্রাণী, এমনকি মানুষের রক্ত চুষে জীবনধারণ করে। যার জেরে এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই মারণ রোগ। যার জেরে একই ভাবে আক্রান্ত হয় মানুষজনও।

ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশন আরও জানাচ্ছে, রক্ত চুষতে গিয়ে কামড়ের মাধ্যমেই প্লেগ ব্যাসিলাস ওয়াই পেস্টিস শরীরে প্রবেশ করে। এবং ধীরে ধীরে প্রতিলিপি তৈরি করে দেহের লসিকার মধ্য দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে এই ব্যাকটেরিয়া। এর জেরে লসিকাগুলি ফুলে যায় ও ব্যথা হতে শুরু করে। এই লসিকাগুলিকে বিউবো বলা হয়। ধীরে ধীরে এগুলি আরও বড় আকার ধারণ করে। তবে বিউবোনিক প্লেগ মানুষ থেকে মানুষে সরাসরি ছড়াতে পারে না।

অন্য দিকে, হিস্ট্রি ডট কমের মতে, আজ থেকে ২০০০ বছর আগেও এশিয়ায় অস্তিত্ব ছিল এই বিউবোনিক প্লেগের। পরে ব্যবসা-বাণিজ্য সূত্রে ছড়িয়ে পড়ে এই রোগ। সম্প্রতি এক গবেষণা অবশ্য জানাচ্ছে, ৩০০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দেই ইউরোপে এর বিস্তার ছিল।

তবে চিকিৎসাপদ্ধতির অগ্রগতির জেরে ধীরে ধীরে এই প্লেগের মোকাবিলা সম্ভব হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে যথাসময়ে এই রোগ নির্ণয় করা হলে অ্যান্টিবায়োটিক ও থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। তবে সংক্রমণ নিশ্চিত করতে থুতু বা রক্তের নমুনা নিয়ে সবার আগে ব্যাকটেরিয়াটিকে শনাক্ত করতে হবে।

Published by:Piya Banerjee
First published:

Tags: Black death, Bubonic plague, WHO