Durga Puja Special: বারাসতের শিব কুঠিতে ৪৫৪ বছর ধরে দুর্গার আরাধনা
- Published by:Rukmini Mazumder
- hyperlocal
- Reported by:Rudra Narayan Roy
Last Updated:
পুজোর ক'দিন প্রতিদিনই বাড়িতে ভোগ হয়, কিন্তু দশমীর দিন ঊমা বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন পান্তাভাত ও কচু শাক খেয়ে। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই দেবী প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয়
বারাসত, উত্তর ২৪ পরগনা, রুদ্র নারায়ণ রায়: অষ্টমীতে এই পূজোর বিশেষ রীতি ধুনো পোড়ানো। এলাকার প্রবীণ মহিলারা দেবী মূর্তির সামনে ধুনো পোড়ান, তার পরই পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় মানুষজন ওই প্রবীণ মহিলাদের কোলে আসন নেন। বিশ্বাস, কোলে বসলে সারা বছর শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ থাকে। এভাবেই প্রায় ৪৫৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় হয়ে আসছে শিবকুঠির দুর্গাপুজো।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, মোঘল সম্রাট আকবর বারো ভুইঁয়াদের মধ্যে ১১ জনকে বশে এনেছিলেন। কিন্তু, যশোরের অধিপতি প্রতাপাদিত্যকে বাগে আনতে পারেননি। প্রতাপাদিত্যর প্রধান সেনাপতি ছিলেন সর্দার শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। মোঘল সম্রাটের উদ্দেশ্য ছিল প্রতাপাদিত্যকে পরাস্ত করা। ছলে বলে রাজা প্রতাপাদিত্য ও শঙ্করকে বন্দি করে দিল্লি নিয়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান যশোরেশ্বরী কালীর মূর্তিও। তার পরই মারা যান আকবর। অন্যদিকে, বন্দি অবস্থায় প্রতাপাদিত্যেরও মৃত্যু হয়। আকবর-পুত্র জাহাঙ্গিরের নির্দেশে শঙ্করের আমৃত্যু কারাবাসের সাজা হয়। তাঁর কারাদণ্ডের সময়টা ছিল পিতৃ তর্পণের কাল। বন্দি শঙ্কর সম্রাটের কাছে তর্পণ করার আর্জি করেন। সেই আবেদন নাকচ করে দেন আকবর পুত্র জাহাঙ্গির। ব্যথিত শঙ্কর কারাগারেই আমরণ অনশন শুরু করেন। আকবরের স্ত্রী যোধাবাঈয়ের ছেলে জাহাঙ্গিরকে শঙ্করের আবেদন অনুমোদনের জন্য নির্দেশ দেন। সেনা প্রহরায় যমুনার তীরে শঙ্কর তর্পণ করেন।
advertisement
শঙ্করের মন্ত্রোচ্চারণ শুনতে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। সেই ভিড়ে ছিলেন বোরখা পরিহিতা যোধাবাঈও, মন্ত্র শুনে মুগ্ধ হন তিনিও। সেই রাতেই রাজমাতা স্বপ্নে দেখেন, তিনি দুর্গাপুজো করছেন। স্বপ্ন ভেঙে যেতেই তাঁর মনে পড়ে শঙ্করের কথা। কারাগারে গিয়ে তিনি শঙ্করকে দুর্গাপুজো করার নির্দেশ দেন। শিবের উপাসক শঙ্কর প্রথমে রাজি হননি। পরে তিনি পুজো শুরু করেন। শঙ্করের পিতৃভিটে ছিল বারাসতে। শিবের উপাসক হয়েও তিনি দুর্গাপুজো করেছিলেন বলে এই পুজো শিবের কোঠার দুর্গাপুজো নামেই পরিচিত। আজও যোধাবাঈ-সহ এলাকার মানুষজনের মঙ্গলকামনায় হয় সংকল্পদান। পুজোর ক’দিন প্রতিদিনই বাড়িতে ভোগ হয়, কিন্তু দশমীর দিন ঊমা বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন পান্তাভাত ও কচু শাক খেয়ে। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই দেবী প্রতিমা বিসর্জন দিতে হয়। বিসর্জন দিয়ে এসে সত্যনারায়ণের পুজো করে তবেই হয় বিজয়া দশমী, এমনটাই জানান চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।
advertisement
advertisement
প্রাচীনকালের সেই পুরনো কাঠামোতেই আজও হয়ে আসছে এই পুজো। আগে বলি হলেও, এখন সেই প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জেলার প্রাচীন পূজাগুলির মধ্যে বারাসতের চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো অন্যতম ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। প্রতিপদ থেকেই শুরু হয় এই পুজো।
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
September 09, 2025 2:02 PM IST