#কলকাতা : নগরায়নের সঙ্গে পরিবেশ বাঁচানোর উদ্যোগ নিতে হবে নাগরিকদের। ২০২২ সালের বনমহোৎসব সূচনায় এমনই বার্তা রাজ্যের বন বিভাগের বিভাগীয় মন্ত্রী থেকে আধিকারিক সকলের। বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন উদ্যানে বনমহোৎসব ২০২২ এর সূচনা হল। উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এ দিনের অনুষ্ঠান থেকে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পরিবেশ বাঁচিয়ে রাখতে গাছ লাগানো ছাড়া কোনও বিকল্প উপায় নেই। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সামনে পেয়ে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বিশাল বিশাল প্রোজেক্ট এখন হচ্ছে, লক্ষ্য করছি কোথাও কোথাও গাছ কেটে প্রজেক্ট হয়েছে। গাছ কেটে কী ভাবে মানুষকে মেরে নগরায়ন করা হয়েছে। আমি মনে করি প্রত্যেকে নিজের বাড়িতে গাছ লাগাবেন। সরকারের আইন প্রণয়ন করা উচিত যাতে নতুন বাড়ি বা প্রজেক্ট হলে সেখানে জমি রেখে গাছ লাগানো ব্যবস্থা করা উচিত।"
তিনি আরও বলেন, "এখানে ফিরহাদ আছেন, তাঁর কাছে অনুরোধ করব এখন থেকে নতুন প্ল্যান স্যংশন হলে সেই সকল জমিতে বৃক্ষরোপণ বাধ্যতামূলক করা হোক। এর জন্য আইন প্রণয়ন দরকার।" শুধু বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নন, বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও মনে করেন গাছ না বাঁচলে মানুষ বাঁচবে না। তাই প্রতিটি বাড়িতে কম করে দুটি করে গাছ লাগানো হোক। তিনি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবেশ রক্ষার জন্য যে উদ্যোগ ও কর্মসূচি নিয়েছেন তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে বন দফতরের কর্মকর্তারা। গত বছর জুলাই মাস থেকে এই গাছ লাগানো কর্মসূচি নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : রাজ্যজুড়ে 'বুস্টারে' বিপুল অনীহা! করোনা নিয়ে মহাচিন্তায় নবান্নের 'বড়' নির্দেশ জেলাগুলিকে
ইতিমধ্যেই পাঁচ মাসে ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে। রাজ্যের উপকূলবর্তী তিন জেলা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং মেদিনীপুরে এই গাছগুলি লাগানো হয়। যেখানে সর্বাধিক গাছ লাগানো হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণায়, তার সংখ্যা ১০ কোটির কাছাকাছি । শুধু তাই নয়, বন্যপ্রাণী ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও বন দফতর যথেষ্ট উদ্যোগী বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। গাছ কেটে কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন : কেজি কেজি সোনা নিয়ে রাতভোর শৌচাগারে! CCTV-তে ফাঁস হাড়হিম ব্যাঙ্ক ডাকাতি
এদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন "ভবিষ্যতের শিশুদের জন্য পরিবেশকে বাসযোগ্য করে রাখতে হলে প্রতিটি মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যতের নাগরিকদের জন্য এই পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার সংকল্প নিতে হবে। নগরায়ন যেমন চলবে তেমন এই পরিবেশকে পৃথিবীকে সুস্থ ভাবে রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। আমাদের সকলকেই। তাই গাছ না কেটে গাছ লাগানোর শপথ নিন সকলে"।
এই দিনের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যের বিভিন্ন বন বিভাগের কাজের নিরিখে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের ছিলেন বনবিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের বীরবাহা হাঁসদা। তিনি বলেন, জঙ্গলমহলে যেহেতু তিনি বড় হয়েছেন এই জঙ্গল থেকেই তাদের পরিচিতি, তাই অরণ্য বাঁচিয়ে রাখাও সকলেরই কর্তব্য। তাঁর কথায়, "এমনকি পাঁচ মাসে ১৫ কোটি গাছ লাগানোর নজির দেশের অন্যত্র কোথাও নেই, তাই দেশের নটি উপকূলবর্তী রাজ্য আমাদের রাজ্যের বন বিভাগের এক্সপার্টদের থেকে পরামর্শ নিতে চায়। এই কাজ নিয়ে দিল্লিতে শুক্রবারই আমাদের রাজ্যের বন বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে ভিন রাজ্যগুলি, যা অন্যতম সাফল্য বলে মনে পড়ছে বন বিভাগ।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।