তৃণমূলের দ্বিমুখী কৌশলেই কি খুলল জট? রাজ্য বিজেপির বিরোধিতা সত্বেও পঞ্চায়েতের আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ পাচ্ছে রাজ্য

Last Updated:

একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও কোন লাভ হয়নি৷ তা নিয়ে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল৷

West Bengal is getting central Government's aid
West Bengal is getting central Government's aid
#কলকাতা: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ হতেই, উল্টো সুর শুভেন্দুর! প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোযনায় রাজ্যেকে অর্থ বরাদ্দ করার পরেই বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বললেন, ‘‘কেউ কেউ বলছে বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা নাকি কেন্দ্রকে রাজ্যের টাকা বন্ধ করার কথা বলে।রাজ্যে বিজেপি উন্নয়নে বাধা দেয় না। রাজ্য বিজেপি চায়, মুখ্যমন্ত্রীর 'স্টিকার' পলিটিক্স বন্ধ করতে। কেন্দ্রীয় শর্ত মেনে রাজ্য টাকা নিলে আমাদের কোন আপত্তি নেই।’’
তবে, কেন্দ্র বরাদ্দ ঘোষনা করলেও,এখনি  হাল ছাড়ছেন না শুভেন্দু। কেন্দ্রের শর্ত না মানার দৃষ্টান্ত পেলেই তা নিয়ে কেন্দ্রের কাছে আবার অভিযোগ জানাবেন বলে ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন তিনি।
রাজ্যের কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দূ্র্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যকে টাকা না দেওয়ার জন্য দফায় দফায় দিল্লি গিয়ে দরবার করেছিল রাজ্য বিজেপি। শুভেন্দু, সুকান্তরা দাবি করেছিলেন, রাজ্য বিজেপির অভিযোগকে মান্যতা দিয়েই কেন্দ্র, রাজ্যের প্রকল্প খতিয়ে দেখতে গিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির হদিশ পায়৷ রাজ্য খরচের হদিশ দিতে না পারায় অর্থ দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র।
advertisement
advertisement
একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও কোন লাভ হয়নি৷ তা নিয়ে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল৷ তৃণমূলের বঞ্চনার অভিযোগের জবাবে বিজেপির শ্লোগান ছিল, হিসাব দাও, টাকা নাও। যদিও, রাজ্যের মতে, হিসাব দেওয়া সত্বেও, রাজনৈতিক কারনেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখছে কেন্দ্র।
advertisement
কেন্দ্র -রাজ্যের এই তরজায় একশো দিনের কাজের টাকা আটকে থেকেছে প্রায় ১ বছর৷ এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম-সড়ক যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, জল জীবন মিশন, স্বচ্ছ ভারত এর মত একগুচ্ছ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম রাজ্য বদল করায়, ওই সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকাও আটকে দিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছে দরবার করেছিলেন শুভেন্দু। তৃণমূলের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের 'ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স' এর রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ বন্ধ করে কার্যত হাতে না মেরে ভাতে মারতে চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি। রাজ্য বিজেপির চাপেই একপ্রকার বাধ্য হয়ে কেন্দ্রকে তা করতে হয়।
advertisement
সম্প্রতি, কেন্দ্রের এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচারে নামার জন্য দলকে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আদায়ের জন্য উদ্যোগ নিতে মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দ্বিমুখী কৌশলেই শেষ পর্যন্ত জট খোলে।
সম্প্রতি পঞ্চায়েত ও গ্রামেন্নয়ন দফতরের অধীন প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোযনায় ৫৮৪ কোটি টাকা রাজ্যকে দেবার কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর আগে জল জীবন মিশনে রাজ্য পেয়েছে ১ হাজার কোটি। কেন্দ্রীয় জি এস টি ১ লাখ ১৬ হাজার কোটির  ভাগ বাবদ রাজ্য পেয়েছে ৮ হাজার কোটি।
advertisement
কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আসা শুরু হতেই , নড়েচড়ে বসে রাজ্য বিজেপি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে রাজ্য নেতৃত্বকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, ১০০ দিনের কাজের মত সাংবিধানিক অধিকারকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা যাবে না। পাশাপাশি,  জল জীবন মিশন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মত প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ এর আগে সম্পূর্ন করা না গেলে, তার জন্য কেন্দ্রকেই দুষবে তৃণমূল সহ বিরোধীরা। ফলে, দূর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বেশিদিন আটকানো যাবে না। তার মোকাবিলা রাজনৈতিক ভাবে করতে হবে রাজ্য বিজেপিকে। সম্প্রতি রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রচার কৌশল নিয়ে শুভেন্দু সহ রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠকে এই বিষয়ে দলের অবস্থান স্থির করতে আলোচনা হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে যুক্ত দলের একাংশের মতে, কেন্দ্রীয় অর্থ বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। গ্রামীন এলাকায় এই সব প্রকল্পের উপভোক্তারাই পঞ্চায়েতের ভোটার। সেক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে রাজ্যকে শায়েস্তা করার কৌশল, দলের বিরুদ্ধে যেতে পারে।
advertisement
বিধানসভায় শুভেন্দু এই প্রসঙ্গ টেনে নিজেই বলেন, ‘‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়ক যোযনায় এ রাজ্য কিছু বরাদ্দ পাবার পর, কিছু সংবাদমাধ্যম বলছে, রাজ্য বিজেপির বিরোধীতা সত্বেও, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা পেল রাজ্য। বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা নাকি কেন্দ্র সরকারকে রাজ্যের অর্থ না দিতে বলেছেন। বিজেপি উন্নয়নের বিরোধীতা করে না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ' স্টিকার ' পলিটিক্সের বিরোধীতা করেছি। আমরা চাই, রাজ্যের সব কাচা রাস্তা পাকা হোক, সব মোরাম রাস্তা পাকা হোক। সব গ্রাম, ছোট শহর সুন্দর হোক। "
advertisement
শুভেন্দুর এই বক্তব্যের জবাবে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, "আসলে এতদিনে ওদের বোধদয় হয়েছে। শুভেন্দু ও বিজেপির রাজ্য নেতারা বুঝতে পেরেছেন, গরীব মানুষের কাজের টাকা আটকে তাদের ভাতে মারার রাজনীতি পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামের মানুষ  যোগ্য জবাব দেবে। তাই তড়িঘড়ি নিজেদের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা করছেন।  তবে, এতে আদপে কোন লাভ হবে না। মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই পঞ্চায়েতে এ রাজ্যে বিজেপিকে সাফ করে দেবে। "
ARUP DUTTA
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
তৃণমূলের দ্বিমুখী কৌশলেই কি খুলল জট? রাজ্য বিজেপির বিরোধিতা সত্বেও পঞ্চায়েতের আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ পাচ্ছে রাজ্য
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement